শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬

জানো বৈকি

ঘুমিয়ে পড় তিনশো পঁয়ষট্টি রাত পেলব সোহাগ,
নিরালম্ব বুকের শ্বাসে অতি আকুল মারু-বেহাগ
আছড়ে পড় তটপ্লাবী বিধুরতা সমেত সজোরে স্বেচ্ছায়!
পরবর্তী কোন দিনে আমার ভবিষ্যতে জীবন কেচ্ছায়
লিখে দিয়ো একরত্তি চুম্বন পেয়েছিল কোন পদ্মফুল
সেদিনের সেই ঝড়ে, উড়েছিল মক্ষিকার পাখা, সাগরের কূল
কূলঙ্কষ কূটকৌশলে লুফেছিল মাধুরী ও মধু যার
আমি তার মরমের মর্মস্থলে বসে বসে কবিতা লিখি!

এভাবে জড়িয়ো ধরো, আবিষ্ট কর বাহুর বেষ্টন।
সায়ন্তনী নয়নের তারাকে কর সুদূরে স্থির, নিরবে অনেকক্ষণ
আমাকে নয়, ভেতরে তোমাকে দেখো, অন্তত একটা রাত
এভাবে থাকো, বাইরে নিস্তরঙ্গা তুমি, ভেতরে জলপ্রপাত
বইতে হবে, বইতে হয়, জানো বৈকি, কি অসুখে সুখাভিনয়
রম্য লাগে; কি বিষে বিষক্ষয়- তবু থাকে অসীমে অজ্ঞাত,
কি অনভিপ্রেত বিরহকে গাইতে হয় মধুরতম রাগে!

জানো বৈকি!

তোমাকে ভালবেসেছি

তোমাকে ভালবেসেছি।
সবচেয়ে কুৎসিত বেদনার নীল পাতাটা খুলেছি।
খুলেছি কলঙ্কের বিস্তৃত অধ্যায়!
আকর্ণবিস্তৃত লাম্পট্যের সুখ, নষ্টামির মন্ত্র,
নোংরামির মুখ হা করে গিলেছি দ্বিধায়
অপরিশ্রুত বিষ, যন্ত্রণার সংবহনতন্ত্র
গড়ে ফেলেছি সমস্ত শরীর!

তোমাকে ভালবেসেছি।
ভালবেসেছি ঘুটঘুটে অন্ধকার।
বিদঘুটে অলীকতায় ডুবেছি জ্বলন্ত লাভায়!
বলেছি "প্রেম শাশ্বত, নিশ্চিত অবিনশ্বর।"
এখন এসব মিথ্যে এসে আমাকে ভাবায়,
"এসব কি ভেবেছিলি বোকাচন্দর!"

তোমাকে ভালবেসেছি।
কলিজা পুড়ে ফেলেছি সিগারেট ফুঁকে!
ফোনের কিপ্যাড থ্যালথ্যালে হয়ে গেছে
আঙুল বিকলাঙ্গ হল- খালি কবিতাই লিখে!
রাত রাত বিধ্বস্ত শয্যার সাথে রচেছি বাসর
আমি শেষ হয়ে গেছি, আমি ছাই হয়ে গেছি
তোমার কাছে কি আর আছে অবসর
এসব শোনার?

তোমাকে ভালবেসেছি।
ভালবেসেছি ধুতুরার রস, ব্রাণ্ডি বোতল নয়!
ভালবেসেছি অনভিপ্রেত উপহাস অপদস্থ হয়ে
ভালবেসেছি দহনকে, ভালবেসেছি অবক্ষয়
মনের নয়, দেহযন্ত্রের!

বিনিময়ে কি পেলাম?
আমি কি পেলাম! সরীসৃপের বিষদন্ত ছাড়া?
কি পেলাম? ফুল? কাঁটা? খোঁচা? খোঁটা?
আর একটা বিষপূর্ণ ধরা?
আর কি?

___________________
ফেব্রুআরি ১৯, ২০১৬।

মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬

তবু তুমি যুদ্ধ চেয়ো না

কয়েকটা হত্যা যদি করতে পারতাম অনায়াসে একদিন 
তবে কেনই বা হতাম আত্মহত্যাপ্রবণ? 
কেনই বা মনে হত জীবনটা দুঃসহ! প্রতিদিন দুর্দিন- 
মনে হত কেন? 

নরকে যাবার অনুপুযুক্ত পশুদেরও দিতে হয় সহস্র সালাম 
কুর্ণিশ সসম্ভ্রমে, দিতে হয় আত্মঅহং স্বাভিমান বোধ- 
পিশাচের পায়ের তলায়, নচেৎ বেঁচে থাকা দুষ্কর। 
যদি দু'একটা দানবের মুন্ড ফেলে দিতাম মুত্রত্যাগের স্থানে 
মুত্রত্যাগের মত পরম শান্তিতে, অতিশয় সুখকর- 
শিশ্নটা নেড়ে; তবে কেনই বা চলতে হত হেঁটমুন্ড হয়ে 
শঙ্কিত, কম্পিত, দম্ভহীন প্রাণে ধরণীর পর 
কীট পতঙ্গের চেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে? 

কয়েকটা বুকের হাড় যদি চিবোতে পারতাম অক্লেশে 
তবে কি এই আমৃত্যু ক্ষুধার ভার বইতে হত আমার বুকে! 
পায়রার ডানা ছিঁড়ে নেবার মত করে উৎফুল্ল হৃদয়ে 
যদি ছিঁড়ে নিতাম কয়েকটা হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, যকৃত 
ভীমসেনের মত পারমার্থিক সুখে- কয়েকটা দুঃশাসনকে 
যদি দাসত্ব দিতাম পাঞ্চালীর এলোকেশে 
তবে কি এতটা যন্ত্রণা, এতটা সুগভীর ক্ষত 
পেতনা স্বান্তনা? 

কয়েকটা মৃত্যু চাই, 
নয়ত ফুলেরা মরে যাবে, কুঁড়িরা ঝরে যাবে, 
নদীরা সকলে হবে অন্তঃসলিলা। 
কয়েকটা যুদ্ধ চাই 
নয়ত ইন্দ্রপ্রস্থ দিয়ে দাও দুর্যোধনের হাতে 
আর ধরণীকে দিয়ে দাও দুর্যোগের রাতে 
সে ধর্ষিতা হোক, হোক পাশাখেলা, 
রাজবধূ বিবস্ত্রা দরবারে, তবুও যুদ্ধ চেওনা- 
বরং লাঞ্ছিতা হোক ঘরের কুমারী বালা 
পথে ঘাটে মাঠে! 

যদি দু'একটা কীচকের কঠিন স্কন্ধ গুঁড়িয়ে দিতে পারতাম 
বার্লিনের দেয়ালের মত করে, জ্বালিয়ে দিতে পারতাম 
যেভাবে পম্পেই জ্বলেছে সেভাবে 
তবে কি তোমাকে বাঁচতে হত স্তনে ওড়না টেনে, মানুষ হয়েও 
পেতে ভয় অন্য মানুষ দেখে চায়ের দোকানে 
অথবা রাস্তার মোড়ে? 

(পরিমার্জিত রূপ- ১২/৭/১৬)
২৪/৭/১৫

মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১৬

কবিরা

কবিরা ভাববে শুধু প্রকৃতি ও প্রেম........
তারা কেন ভাবতে যাবে পতাকা, মানুষ........
ভীষণ ম্যাদাটে হবে এঁটেল মাটির মত ভেজা বর্ষায়........
কবিরা উড়বে তবু, তারা থাক চিরকাল ঘুড়ি ও ফানুস-
হয়ে কল্পলোকের দেশে সুখের আশায়.........
বুঁদ হয়ে, যার নদী যে স্রোতে ভাসায়....
সেখানেই অলীক পোতাশ্রয় সে-ই খুঁজে নেবে......

একটু শান্তির জন্য আরেকটা যুদ্ধ চাই.....
কলমে যদি অসম্ভব, তবে ক্ষতি কি খঞ্জর নিলে....
এ পিঞ্জিরা বায়ুহীন, এ আকাশে ঠাঁই নাই....
এখানে ক্ষতি কি দু দণ্ড সহিংস হলে.....
রণ ডঙ্কায়?.......

দানবেরা, কে শুনেছে ধর্মের বাণী?......

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...