কথা ছিল ঝমঝম বর্ষা নামলে উজ্জ্বলের টিনের চালা ঘরে আমি একরাত্রি থাকব। ভেজা ঘাস মাটির সোঁদা গন্ধে মাতাল ঝিঁঝিঁর কলরবে পেতে কান উদাসী হয়ে জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকব কখনো দিগন্তে মুখ করে। গরম ভাতে উজানি-কৈ এর ঝোলে আত্মনিবেদন শেষে যদি আসে ঘুম সে রাতে গল্পের আবিলতায় ঢলে পড়তাম ধীরে ধীরে পালঙ্কের পায়া ঘেঁষে। কিন্তু উজ্জ্বলও আমারই দেয়া পাথুরে-পরামর্শ-পথে উঠে গেছে ইটের চৌকো ঘরে যেখানে আর টিনের চালা নেই! শাওন আকাশ ভেঙে নেমে সকরুণ সুর ধরে কাঁদলেও সেই ঝমঝমে ধ্বনি আর উঠবে না ওখানে। সকল টিনের চালা, বেড়ার ঘের, খড়ের গাদা ধীরেধীরে সরে যাচ্ছে। কিছুই আর আমার উচ্ছন্ন বিলাসিতার জন্য থমকে রইল না। অথচ আমি নিজেকে যেন জোর করে বলতে চাই- আমি এক বিন্দু দায়ী নই! আমি এঁটেল মাটির মতন থাকতে চেয়েও ইট ভাটার উনুনে ঢুকে সুদৃঢ়তর অস্তিত্ব খুঁজতে কি চাইনি বুঝি? তবু কোথাও ভাটার টানে জাগা খালের তীরের মতন আমি কাদা হয়ে কেঁদে যাই গভীরে। দ্বিচারিতা নয়, এ যে কেমন অসহায়ত্ব এ কথা বাতাসে ভাসিয়ে দিয়ে স্বস্তি পাই যেন। এসব লেখার নয়, গাইবার নয়, জনে জনে জানাবার নয়, বোঝাবার নয়। পাছে লোকে পাগল ভাবে। যেন পাগল অত্যন্ত পতিত কিছুর নাম! পাগল ডাকলে হয়ত পাগলেও কষ্ট পায়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন