শত ভেক ধরি নানা রঙ রূপে
আপনারে রাখি ভুলায়ে,
দুখের ধরণী জুজিতে না পারি-
শতেক হাসিতে কুলায়ে।
পরিহাসে বাঁচি পরিজন লয়ে
অপরিচিতেরে চাহি না,
সে জন রয়েছে মনের অতলে ভুলেও
তাহারে ডাকি না,
সে আপনার মত আপনি রয়েছে
আমার গহীনে মিলায়ে,
আমি শত বেশ ধরি ঢাকিতে গো
চাহি, আপনারে রাখি ভুলায়ে।
নিশিমাঝে গাহে বিধুর রাগিনী,
প্রভাতে পূরব মিলন সুর
কর্ণকূহরে রিরিরিরি শুনি,
নিকট সে জন তথাপি দূর।
আমি অশেষ আঁধারে ছুটিয়া
বেড়াই, দিকহারা পাখি ঠিকানা নাই,
গড়িতেছি নীড় বাসনা অধীর,
সতত চপল কোথা যে যাই,
কাহার হস্তে পুতুলের প্রায়,
কে রাখিছে মোরে খেলায়ে-
আমি বুঝিতে যাইয়া ঠাহরিতে
নারি, তাই আপনারে রাখি ভুলায়ে।
কালের তটিনী ঊর্মি ভাঙিছে,
কুলভাসী স্রোতে বন্যা-
আগমনী বাঁধি ওগো শুভময়ী
ধন্যা গিরির কন্যা-
ঘরে আয় তুই অশুভরে নাশ, আমি
কাঁদিয়া মরিনু একা,
সংশয় শোকে পাথর হইনু, আমারে
দিবি নে দেখা?
অপার অশনি পরপারে শুনি-
দখিন মন্দ মলয়ে
আমার অঙ্গে শমনের শর, আমি
আভূষণে রাখি ভুলায়ে।
জনমের খেদ মেনকার বেটি মেদিনীতে
টানি মারিলি,
দানিয়া আমারে অভাবিত দয়া,
দহনকুণ্ডে ছুঁড়িলি!
শত পাথরেরে অর্চনা করি,
লোকে বলি- ‘তুই সত্য’,
যাহাদের আছে সুখের বাসনা,
সেই অসুখের ইহা পথ্য!
পরা-অপরার ক্রীড়নক হয়ে হৃদয়
রেখেছি জ্বালায়ে
তবু শান্ত মূরতি ভান ধরে
আছি, নিজেরে রেখেছি ভুলায়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন