রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৯

সব ছুঁড়ে চলে যা

নিবারণ,

তুই আরও দূরে চলে যা,
ভাঙা দেউলের মুখে মাটি লেপে সেকি কান্না,
অনেক তো হলঅধঃমুখ তোলআর না-
তুই আরও দূরে সরে যা। 

মাটির প্রদীপ ভেঙে হল দুই খণ্ড,
পিতলের ঘটে পল্লবকাঁদে স্বস্তিকা
গোটা দুই অপোগণ্ড-
দ্যাখে ফ্যাল ফ্যালে চোখে ভূপাতিত ভগবান
মাটির মূরতি অপারগআর পৃথিবীর বুকে ঘেন্না,
ত্রিলোকের ত্রাস দানবের রাজদণ্ড-
ত্রিলোকেশ্বর তন্দ্রায়তাই টের পান না

নিবারণ,

তুই সব ফেলে চলে যা
গোটা ছয় কাঁসা থালানৈবেদ্যের দায়-
পূজার আসনকোশা-কুশিজপমালা
সব ছুঁড়ে চলে যা।

শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৯

মনে না রাখার মত কিছু

আমি কি এক চোরা স্রোতে অতলে ভেসে আছি,
ভেসে যাই গন্তব্যহীন, এক জন্ম নিরন্তর।

আমার খোঁজ নিলে না নিরঞ্জনা,
তুমি প্রতিদিন পাড় বেয়ে চলে যাও, নয়নে খঞ্জর-
তাতে বিঁধো না আমায়।

অপেক্ষায়-

দিতে পারিনি বাঁধ, আমি ডুবি ভাসি, অনিচ্ছাকৃত-
আকাঙ্ক্ষায়, ভুলে যেতে কষ্ট হয় আমি যে নদী নই,
নদীর পাড়ও নই, জল নই, স্রোত নই-
আমি মনে না রাখার মত কিছু।

নিরঞ্জনা,  বেদনা মাথাপিছু-
ভাগের আবদার করি না আর, নদীর পাড়-
পাড়ে এসে রোজকার মত, ডুবিয়ো নুপুর -জলে,
আমি সে আভাসেই না হয় সুখী হই।

ভুলে যেতে কষ্ট হয় আমি যে নদী নই,
নদীর পাড়ও নই, জল নই, স্রোত নই-
আমি মনে না রাখার মত কিছু।

বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৯

চিরস্থায়ী প্রেমিক

হয়ত পাখিরও ইচ্ছে করে চিরস্থায়ী প্রেমিক হতে
কিন্তু তার উচ্ছল ডানা দু’টি দেয় না অবকাশ।

হয়ত নক্ষত্রেরও সাধ হয়-
ঘুরে আসে অন্য কোথাও,
অথচ আকাশের অপর পাড়ে-
সেও যে আকাশ!

কোথায় বা যাবে....

আমাদের কেমন সব বিচিত্র বৈপরীত্য আছে।
আমাদের সকল প্রেমের মাঝেই যেন কিছু
অপ্রেম আভাস.....
মাঝে মাঝে সেসব কথা হৃদয়ের কাছে-
আরেকটি হৃদয় হয়ে ফেলে দীর্ঘশ্বাস-
নিঃশব্দে......
আর তাতেও কয়েক লক্ষ কালোত্তীর্ণ গান হয়ে যায়...
শতেক অব্দে.....

তারপর?

কীর্ণ আকীর্ণ নানা কথার কল্লোলে, আমি-
ভুলে গেছি কোনদিনই না গাওয়া হাজারটা গান,
ফিরে গেছি অজান্তে ইছামতি ঘাটে,
আজও তো ভেড়েনি কূলে তোমার সাম্পান!

রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯

আমি আজ লিখতে বসেছি

প্রণয়ের কোন কবিতা আসে না মনে,
তা রাত যতই গভীর হোক না কেন।
ভাবি.......
ফুল নির্মাল্য হলে তার একক গুরুত্ব 
বোধ করি কম হয়ে যায়।
কিন্তু তার মর্যাদা কি করে যে বাড়ে এত!......
এভাবে কি ভেবেছ কখনো-
কখনো এমন করে রাত দেড়টায়

ছাড়ো না হয় এসব কথা।........

সব ব্যবধানই হয়ত মনের দূরত্ব নয়,
সব উপেক্ষা-ই হয়ত নয় অনাকাঙ্ক্ষার কাঁটা-
অভিমানে তাক করে বুকে বিঁধে নাও। 
যে কবি প্রেমের কবিতা লেখে
সে হয়ত আদপে প্রেমিকও নয়....
শুনছ কিতুমি কি ঘুমাও

আমি আজ লিখতে বসেছি। 

মৃত্যুর বাজেট

যুদ্ধ যখন নিয়তি হয়ে সামনে আসে
তখন করজোড়ে প্রার্থনার দোহাই-
আমাদের আত্মসান্ত্বনা ছাড়া কিছু নয়!
এখন কোথায় যে কি বাতাসে-
ভাসে গ্রেনেডের ধোঁয়া-
তা নিয়ে হবে ধোঁয়াশা বৈঠক;
বারোমাসে-
আমাদের চোখে মুখে সত্যের ভয়-
জেঁকে বসে গেছে!
বিধিপূর্বক-
তাকে অস্বীকার করি!

তাই তবে হোক।

যে যীশু ক্রুশে ঝুলে আছে,
তার দেহ কোথাও খন্ড হল কি না বোমার আঘাতে,
তার চোখে নামে কি রক্তের স্রোত-
এ বিষয়ে আমার অদ্য কোন অনুভুতি নেই!

জানি না-
যে পূর্বে মৃত তার শোকে কাতর হব কি না,
হব কি পাথর!
অথচ,
যে জীবিত-
মরল একটু আগে নিমিষমাত্রক্ষণে
তারও আর নিই না খবর!

কি জানি কোন দৈবাভিসম্পাতে-
মানুষের ব্যথাও ইদানীং একঘেঁয়ে লাগে!
অহরহ মৃত্যুর অলিখিত খাতে
ঈশ্বরের বাজেট পেশ- ঈশ্বরেরই ভাগে
বেশী ঝুঁকে যায়!

বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৯

কুমুদ ও ধুতুরা

দূরের তারারা রাত্রির গায় ঘুমের গন্ধ মাখে,
আমি নির্ঘুম, নিরালা আঁধারে শত বেদনার পাঁকে।

সেই কবে থেকে জেগে আছি চাঁদ, অমাবস্যার পাড়ে,
তুমি গেছ ভুলে শুক্লা দ্বিতীয়া, তোমার ক্যালেন্ডারে-

কোন দিন ধরে রাখা নেই আর আমার জন্য শুধু,
যে ছিল কুমুদ সে হল ধুতুরা, আছে বিষ নেই মধু!

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...