হরি হে!
আমায় রাখো নত তৃণের মত পথের পাশে,
যেথায় তোমার চরণচিহ্ন নিত্য লাগে, নিত্য আসে-
নূপুরধ্বনি কর্ণে আমার, মর্মে আমার নিত্য রাজো-
গভীর মনে লুকিয়ে হরি, ব্রজের বনে অমনি বাজো-
মোহনবেণু; লুটিয়ে রই চরণরেণু- মাথায় ধরে,
এবার ম’লে উরগ হব, কালীয় রাজার ফণার পরে-
যেমনি তোমার নাচন লাগে, তেমনি আমার চিত্ত মাগে,
নয়নডোরে- বাঁধব বলে কৃষ্ণশশী, মন উদাসী, যেমন জাগে-
প্রভাতবেলা অনাঘ্রাত ফুলের কলি,
যেমনতর- পুষ্পরসে মাতাল ঘোরে ভৃঙ্গগুলি,
অমন করে কাঙাল হলেম, দরশ তোমার পাবার আশে!
হরি হে! আমায় রাখো নত তৃণের মত পথের পাশে!
ছয়দিকে ছয় কংসচরে, অহর্নিশা- তাড়িয়ে মারে,
না পাই দিশা, মরছি কেঁদে করাল ঘোর অন্ধকারে!
যদি উদয় হতে সূর্য্যসম, কংসাসুরের কারায় মম-
অমন আশার বাসা বইছি যেন জন্ম-মৃত্যু-জন্ম ধরে,
লোকে লোকে আকুল হয়ে লোকান্তরে,
পাইনে দেখা, ললাট-লেখা তুমিই জানি লিখলে বটে,
নিদয় তুমি নন্দিত তায়, সাধে কি আর তেমন রটে!
মা যশোদার বুক ভাসালে, একটিবারও চাওনি ফিরে,
তবুও আমার সাধ হয়েছে, সাধেই ডুবি নেত্র-নীরে!
আমি দু’হাত তুলে আকাশপানে, ক্ষীণস্বরে, কাতর প্রাণে
ডাকছি আমার পাষাণ-কৃষ্ণ, বধির কেন হলে?
লোকে তোমায় বলবে কি গো, এমনি আমি ম’লে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন