বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১

লব্ধবেদনা-পোত

 

চতুর্দশপদী (সনেট)

 

ঘন-গরজে সঘন আঁধার গগন-

মধ্যে মগন ভ্রষ্ট-লগন আধা-চাঁদ,

নিশীথ-নিদ্রা-আতুর হয়েছে নয়ন,

জড়তা-কাতর দেহমনে অবসাদ!

শাওন-বাতাস-রবাহুত কবিতায়

মুক্তছন্দে, শব্দবন্ধে নিভৃত কবির-

মূক-চিত্তে চঞ্চলধারা নিত্য অধীর-

নৃত্য-নূতন জাগে, বিদ্যুৎ চমকায়!

 

ধীর-সারঙে সাঁজিয়ে মন্দ্র মন্দ সুর,

চির-মল্লারে হারা অন্তরে টেনে দূর,

দয়িত-বিহগ প্রেমাতুর গানে মরে,

নীড়াভাঙা মীড়ে যায় মেঘ, যায় সরে।

রেখে যাবে কিছু পঙ্কতৃপ্ত পথস্রোত,

ভাসবে কারও কি লব্ধবেদনা-পোত?

 

পদবিন্যাস কখকখগঘঘগ-চচছছজজ।

 

 

 

 

 

 


সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১

স্বভাবদোষ

 

যদি সবার মতে বলতে হবে

সবার পথে চলতে হবে,

পুব আকাশে হঠাৎ জেগে

পছিম পানে ঢলতে হবে-

বিধান মেনে এক বিধাতার,

সুর মুড়িয়ে তানপুরা তার,

বায়সকণ্ঠে আয়েশ করে

সঙ-সাজা গান গাইতে হবে,

 

তা আর না হোক;

এমনি না হয় ঘুরতে থাকি,

জন্ম-মরণ, আঁধার-আলোক,

মথনশেষের গরল মেখে,

বোতাম সেঁটে, বুকটা ঢেকে,

ভূতের মতন বিশ্ব-ভূলোক!

 

যদি অমনি করেই মরতে হবে,

ধরতে হবে শেষের তরী,

মাইরি! বলি, নেই পরোয়া

থোড়াই আমি কেয়ার করি!

কার শাপে, কোন মন্ত্রবলে,

যাই যদি ভাই, যাবই জ্বলে,

তবু এই রয়েছি, এমন রব,

কে আর শোনে?

কেই বা বলে?

 

জনে জনে মন জোগাব,

আর কি হব তেমন পাগল?

ওরে আমার ঘরের মাঝে

বুক উঁচু জল, বুকের নদী

ভাঙল আগল!

 

বানের স্রোতে ভাসছি যখন,

ভাসতে আরো নেইক’ মানা,

কি করি আর, এই নিয়তি,

পাখির মতন পাইনি ডানা!

 

যদি সবার হাতে রইল ছোরা,

পিঠের পিছে আমার তরে,

আমার বুকেই তাক করে থাক,

বিষভরা বাণ বিশ্বজুড়ে,

আমি তবু এমনি রব,

এমনি রব স্বভাবদোষে!

কি হবে আর হাতের করে

দু চার দশের অংক কষে?


শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১

তুমি নৌকা ফেরাও।

 

ডুবেছে চরাচর আকণ্ঠ দ্বিচারিতায়,

ঋতবান হে, অপহৃত হয়েছে সত্য

প্রতিপাদিত প্রতিটি মিথ্যায়, প্রতিপন্ন

জীবদ্দশা, হতাশা, নিয়ত, নিত্য,

এ ভবে পরাভব নিকট আসন্ন-

জেনো, তুমি নৌকা ফেরাও!

 

নোঙর ফেলেছ যে জলে, তলে তার-

রসাতল, বালির বন্ধন!

দাঁড়াবে না, ভেসে যাবে, ধুয়ে যাবে,

নির্বিবাক, অনঘ ক্রন্দন-

অঘ-খড়গ বায়ে,

তুমি মুছে যাবে, তুমি সয়ে যাবে, ক্ষয়ে যাবে;

মাঝস্রোতে নিঃসহায়ে

কেউ দেবে না স্থান জেনো,

তুমি নৌকা ফেরাও।

 

 

 


সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০২১

ওগো কবে সাড়া আমি পাব হে?

 

রাজীব-রাতুল-চরণে অতুল আশ্রয় জানি পাব হে!
তাই সকলি দিয়েছি ভাসিয়ে এবেলা, আমিও কি ভেসে যাব হে?

সঘন-দামিনী, আঁধার যামিনী, গরজে গো কালসিন্ধু,
অকূলে এসেছি ভাঙা তরী টেনে, ডুবে গেছে নভে ইন্দু;
বোঝা যত ছিল ফেলে দিই প্রভু, তবু হল ভারী ভবভার হে!

কত সম্পদ, কত রিপুমদ, দুখপ্রদ সবে হেরিয়া,
ভেবেছি দয়াল, পরে রব এসে শ্রীপদ তোমার ঘেরিয়া,
হয়ে পথহারা, কেঁদে কেঁদে সারা, ওগো কবে সাড়া আমি পাব হে?

________________
একটা ভজন শুনতে শুনতে মাথায় চলে এল। সুর বসাব সময় করে।







শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১

এই থাকা সুকঠিন


শত পথে ফিরে ফিরে হয়েছিরে গতিহীন,
দ্বারে দ্বারে ঠাঁই চেয়ে কৃশকায়া বল ক্ষীণ!

প্রভূত প্রপঞ্চ ঘোরে পরিযায়ী বারেবারে,
প্রাণকুম্ভে বিষ ভরে দিনে দিনে হই দীন!

ভূবনে দোসর নাই, কার কাছে কেন যাই,
ছাইভস্ম চেয়ে পেয়ে বাড়িয়েছি শুধু ঋণ!

পরাণে কাঁটার জ্বালা, সুরে তবু সুধা ঢালা,

মিছেমিছি আছি বুঝি, এই থাকা সুকঠিন!  

মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১

কৃতান্ত করেছে জয়

 

কোথা তারা হরদারা, তনয়ে কর অভয়!

মা থাকিতে ডুবে যাব, তাও কি মা কভু হয়?

 

ষড়রিপু ষড়যন্ত্রে, বাঁধা আছি মোহমন্ত্রে,

তুষানলে পলে পলে, জীবন অঙ্গারময়!

 

(ভেবে) গরল অমিয়সমান, পিয়ে হই ম্রিয়মান,

কৃষকায়ে ক্লেশ-ক্লেদ, অবিরত আয়ুক্ষয়!

 

না পারি ধরমবলে, যেত ও চরণতলে,

ছলে বলে কৌশলে কৃতান্ত করেছে জয়!

 

 

 

 

 

 

 

 

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...