নিরদয় মাধব রে,
এ ব্রজে তোমাহীনা একেলা
প্রাণ ধরিব কেমনে?
যতেক মাণ দিছি ত্যাজে তোমা
পায়,
কপট প্রণয়ে গ্যালা ভুলে;
তবে এই ছিল মনে?
এ পরাণ বাঁধি মূরলীর ডোরে,
যেমতি রাহু যায় দিনমণি
গ্রাসে, তেমতি উঠিলা-
নন্দকুমার অক্রুর রথে, ক্রুর
হাসি ভরে-
ব্রজের আকাশে, হানিয়া
বিষবাণ,
অবলা হৃদয়পুরে, তুমি যাও-
তুমি যাও ত্বরা যশোদানন্দন,
ত্বরা যাও মথুরার পথে।
এ বিরহ কাতরা কালিন্দী
সলিলে-
সঁপিব নিজেরে, ওহে কদম্ব
তরু স্বাক্ষী রহিবি তুই
যদি সে রাসকুঞ্জ হয়
পক্ষপাতী, যদি মিছে কথা বলে-
তবে মোর হয়ে স্বাক্ষ্য দিবি
লুটায়ে ভূঁই,
এ শাওনে তুই -
আর না ফোটাবি ফুল!
ওহে যমুনার ঢেউ, তোরেও
করিনু বাদী-
যদি মরি এ ব্যথায়, কভূ না
ভাসাবি কূল;
মোরে কথা দে!
কথা দে মোরে!
নিরদয় মাধব রে,
যে বেদনা দিয়া যাও চলি,
পথের ধুল জানে,
দামিনী না ঝরিবে অমন জলধার,
কমল নয়নে তাহা না হয় গোচর;
এখন যে রাখাল নহ,
মথুরা-রাজকুমার,
বিদিত ব্রজভূমে!
মথুরা রাজকুমার-
তোমা কি টলাতে পারে গোপিনী
নয়ন-নীর!
কংস মাতুল যার, বুঝি সে সামান্য
প্রকৃতির-
হবে? হবে হয়ত মাতুলসম দানবের
মন!
পরানবল্লভ রে, তবু তোরে
চিন্তিয়া অনুক্ষণ
আপনা অঙ্গার করি কলঙ্কের
তুষে।
এখন তুমি রাজা হলে বটে,
রাজার জানি শাস্তি
নাহি হয়,
এ যাতনা হৃদয়ে রব পুষে!
জানি শ্যাম,
নর তুমি, বুঝিবে না রমনীর জ্বালা,
এ জনমে যে জ্বলনে আমি পুড়ে
মরি,
একদিন তাহে তুমি হইয়ো
হাড়-কালা!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন