সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০২০

নিরদয় মাধব


নিরদয় মাধব রে,
এ ব্রজে তোমাহীনা একেলা প্রাণ ধরিব কেমনে?
যতেক মাণ দিছি ত্যাজে তোমা পায়,
কপট প্রণয়ে গ্যালা ভুলে;
তবে এই ছিল মনে?

এ পরাণ বাঁধি মূরলীর ডোরে,
যেমতি রাহু যায় দিনমণি গ্রাসে, তেমতি উঠিলা-
নন্দকুমার অক্রুর রথে, ক্রুর হাসি ভরে-
ব্রজের আকাশে, হানিয়া বিষবাণ,
অবলা হৃদয়পুরে, তুমি যাও-
তুমি যাও ত্বরা যশোদানন্দন,
ত্বরা যাও মথুরার পথে।

এ বিরহ কাতরা কালিন্দী সলিলে-
সঁপিব নিজেরে, ওহে কদম্ব তরু স্বাক্ষী রহিবি তুই
যদি সে রাসকুঞ্জ হয় পক্ষপাতী, যদি মিছে কথা বলে-
তবে মোর হয়ে স্বাক্ষ্য দিবি লুটায়ে ভূঁই,
এ শাওনে তুই -
আর না ফোটাবি ফুল!
ওহে যমুনার ঢেউ, তোরেও করিনু বাদী-
যদি মরি এ ব্যথায়, কভূ না ভাসাবি কূল;
মোরে কথা দে!
কথা দে মোরে!

নিরদয় মাধব রে,
যে বেদনা দিয়া যাও চলি, পথের ধুল জানে,
দামিনী না ঝরিবে অমন জলধার,
কমল নয়নে তাহা না হয় গোচর;
এখন যে রাখাল নহ, মথুরা-রাজকুমার,
বিদিত ব্রজভূমে!

মথুরা রাজকুমার-
তোমা কি টলাতে পারে গোপিনী নয়ন-নীর!
কংস মাতুল যার, বুঝি সে সামান্য প্রকৃতির-
হবে? হবে হয়ত মাতুলসম দানবের মন!
পরানবল্লভ রে, তবু তোরে চিন্তিয়া অনুক্ষণ
আপনা অঙ্গার করি কলঙ্কের তুষে।
এখন তুমি রাজা হলে বটে,
রাজার জানি শাস্তি নাহি  হয়,
এ যাতনা হৃদয়ে রব পুষে!

জানি শ্যাম,
নর তুমি, বুঝিবে না রমনীর জ্বালা,
এ জনমে যে জ্বলনে আমি পুড়ে মরি,
একদিন তাহে তুমি হইয়ো হাড়-কালা!





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...