রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১

নিভেছে তারারাজি

 

নিভেছে তারারাজি,
মেঘে মেঘে মেঘে আজি
বিধুর বরিষনে কোথা তুমি প্রিয়তম?
উদাস অনিল-স্বনে নিতি মুখ পরে মনে
বিজরী চমক ক্ষণে শিহরে পরাণ মম!
ঝর ঝর ঝর আঁখি, ভাঙা নীড়ে যেন পাখি,
কাঁদে সে আশাহত, আজি এ শ্রাবণ সম।।

শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১

না থাকার অস্তিত্ব

 


এই যে কারো না থাকার 'অস্তিত্ব' কতটা গভীর,
থাকলে কি জানা যায়? বোঝা যায়? ছোঁয়া যায়
বাঙ্ময় শূণ্য, আঁধার-স্থবির-বিদেহ দহন প্রেম?
নিরালম্ব, নিরুদ্বেগ, বিশ্লেষ; অথচ জুড়ে থাকা,
একি নিরয়ানল জ্বালা, আমৃত্যু অবোধ অক্ষেম!
চলে গেল, কেউ চলে গেল, অসকালে ঘুমালে পাখি,
অরন্তুদ রোদনে রোদসী ভাসে অন্তরে দ্যাখো-
দ্যাখো, দ্যাখো না কেন? ভেসে গেল ঘাটের সাম্পান।
মরেছে অমরাবতী, অশেষ নির্বেদ, আহুতি কতক গান,
আমি ভুলে যাই, তুমিও যাবে- তুমি লিখে রেখো।
একে একে, একের পর একে, যায়, আরো আরো যাবে,
ঝড়ের মেঘে, জলের তোড়ে ভেসে, ভূমিধ্বসে,
কথায় কথা ঘনিয়ে এলে বজ্রাঘাতে, পছিমে-দখিনে-পুরবে-
যাবে, আগে পরে যাবে, যেতে হয়, অংক কষে-
মিছেমিছি, হিসাবের খাতা মেলাতে চেয়েছি কত করে,
বিজনে বসে-
সেই আমিও তো যাব!
সেই তুমিও তো যাবে!

শনিবার, ১৯ জুন, ২০২১

ভো শম্ভো

 ভো শম্ভো!


ত্রয়-ভুবনাধীশ, শশীশেখর-শীষ,
ভূষণ আশীবিষ, হর হর দেব দেব
মহাদেব মহাকাল!

ত্রিপুর-অরি, ত্র্যম্বক-দৃকধারী,
সুর-অসুর-নর-কিন্নর তোমারি
গাহে জয়, বাজত চৌতাল!

গদিন ধাগতেটে, দ্রিমিদ্রিমি নাগতেটে,
ঘেনাতেটে গদিঘেনে ধা-ধাধা ধা!
ধা-তেটধা গদিঘেন, ধুমাতেট গদিঘেন,
ধাগতেট গদিঘেন ধা!

বিভূতিলেপতনু, অতনু-তনুহারী,
কারণ-লয়-ধারণ, ভকতে অভয়কারী,
জয় জয় দীনদয়াল!
-----

সুরারোপ বাকী।

শনিবার, ১২ জুন, ২০২১

বিস্মরণ

 

এ মায়া লূতিকা-তন্তু যথা,

প্রপঞ্চ-সূতিকা প্রকৃতি পরা-

হস্তে, তথা ভ্রমিত ভ্রমাভীষ্টে,

আবিষ্ট মোহান্ধ, মারণ-জরা-

জরাগ্রস্তে গ্রাসে তিলেতিলে!

 

মন-বিহঙ্গে অপকৃষ্ট ক্রূর উরঙ্গে
বাঁধে বিষ্টম্ভ দ্রুমশাখে,

পথভ্রষ্ট মত্ত-দ্রুমারি-দম্ভ নিপতিত,

জড়িত বিলয়-পাঁকে;

আঁধার অখিলে-

 

নামে সাঁঝের মতন,

সত্য এখানে শুরু,

বাকী বিস্মরণ!

 


বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১

বয়ে যাওয়া

 

বয়ে গেছি ভ্রমে, যেতে কোনক্রমে,

বানভাসা দ্রুমে, দুম করে এসে ঠেকেছি!

এই ভাল তবে, এই ভাল হবে,

এই আমি ভাল ভেবেছি!

 

যেখানে সে নেবে, যা কিছু সে দেবে,

তবে তাই নিয়ে যদি থাকা যায়!

সাঁতরে কি আর সুখী হব বল,

ভাঙলে ভরসা কে নেবে দায়?


মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১

তাই বসে আছ (গান)

 

তুমি ছলে বলে চুলে-

ধরে টানো চরণপ্রান্তে!

 

মুখ ফিরিয়েছি, পথ ঘুরিয়েছি, সরে সরে রই,

বিষক্ষুধাব্যধি মন-অশান্তে-

স্নেহকরে দিতে সুধাধার-স্নান, ডাকো ‘আয় আয়’

অবহেলা পাবে, তাও যে জানতে!

 

শত মায়া গড়ে, ফেলেছ নিগড়ে,

তবু বেলাশেষে যেন নেবে ওই কোলে!

তুমি কপাল চুম্বি ঘুমাতে নেবে গো,

আমি থেমে যাব ভব-কলরোলে!

 

শত সং সাজা, শত মিছে খেলা,

প্রণয়-দ্বন্দ্ব, রাগ-বিরাগের কতশত পালা,

ভাঙবে আসর, তাই বসে আছ,

যদি পথে বাঁধে সুতে কৃতান্তে!

 

 সুরারোপ বাকী। 

 


সোমবার, ৭ জুন, ২০২১

এদিন কি ফুরাবে না?

 

অন্তরে ‘না’ ধরে মুখে ‘হ্যাঁ’ বলে বাঁচা

এভাবে কত কালস্রোতে খড়কুটো হয়ে ভেসে গেলাম!

দেহ-খাঁচা জরাসন্ধের মত জুড়ে দেয়া, তাতে প্রাণ;

প্রতিটি সুরে ভিন্ন যেখানে, সেখানে জোরে বাঁধা-

অভিন্নতার গান, কতটা বেমানান;

তবু তাকে নিয়তি মেনে, অধরে হাসি, ভেতরে কাঁদা,

এ দিন কি ফুরাবে না? ফুরাবে না একদিন?

 

বৃন্তভাঙা ফুল, সজ্জা-সৌখিন,

মৃতকায়ে আরোপিত রূপসন্ধর্ভ অভিমান, অহং, দর্প

যা কিছু ছাইচাপা দিয়ে ক্লীবের ঋষিত্ব প্রাপ্তির অমায়িকতা,

অবলীলায় শত অভিনয়ে শত মঞ্চে মঞ্চস্থ করা-

হতে পারে একেও বলা যায় নিশ্চিত জীবন, শ্লাঘা-সুসম্মান,

আমার যে তাতে ঘেন্না জমে গেছে!

এদিন কি ফুরাবে না? ফুরাবে না কোনদিন?

 

অভাগা হয়ে, পথের পর পথে,

ধুলার পর ধুলার ঝড়ে অন্ধনেত্রে, ধ্বস্ত রথে-

অস্তগামী তারার আলোয় দিনাতিপাত, তবু-

নিত্য আলোর মিথ্যে কবিত্ব আয়োজন,

ইনিয়ে-বিনিয়ে বলি- শতমুখে লোকপ্রিয়,

শতাধিক অসত্য ভাষণ,

নইলে বাঁচা দায়।

 

এদিন কি ফুরাবে না? কখনো কোনদিন?

 

 

 

 

 

 


শুক্রবার, ৪ জুন, ২০২১

ব্যথার সিন্ধু (Sonnet)

 

চতুর্দশপদী

 

কখকখ-গঘঘগ-চছচছ-জজ

____________________________________

 

 

 

অবারিত খাঁচা, উড়ে গেছে পাখি বনে

বিষাদে নিষাদ সরোদের সুরে কাঁদে

নখরের ঘায়ে- দূরবাসে পোড়া মনে

তার মন্দ্রিত তারে বেদনাছন্দ বাঁধে।।

চোখে থেমে গেছে মিহিরদগ্ধ মাধুরী-

স্রোত-সুললিতা, দুকূল প্লাবিতা মায়া;

তামসী-প্রকট; শীতল তৃষিত ছায়া-

তাতে ডুবে ডুবে, গরলপ্রদাহে পুড়ি!

 

সেই হুতাশনে দূরাশার মহামন্ত্রে,

আহুতি দিয়েছি গুনে গুনে গান কত!

চোখ মুখ বুজে জীবনবলির তন্ত্রে

দানবের পায়ে আমারই মুণ্ড শত-

বারেবারে এনে খড়গের নিচে বন্ধু,

একফোঁটা সুখে, মিলেছে ব্যথার সিন্ধু!

 

 

 

 


বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০২১

দুয়ার বন্ধ (সনেট)

 

চতুর্দশপদী কবিতা।

 

কখখক-গঘগঘ, চছচছ-জজ।

________________________________________

 

ফিরে গেছে সেই মেঘের কোরকে একা।

বিগলিত প্রেমে ছায়াময় রূপ বিন্দু-

আঁধারে শায়িত অনাহুত দূর ইন্দু,

ঈষৎ ঝলকে পলকে মধুর দেখা।।

বরষনে হারা অধীর বধির তৃষা।

কবে থেকে আছি নিদ্রানিহিত অসুখে

বিধুর তমসা বেঁধেছে পথের দিশা,

ক্ষয়িত আলোক বিধু’র ধরেছি বুকে।।

 

এভাবেই আমি পথশ্রমে বড় তিক্ত,

পাথেয় সকল বেলা শেষে হল শূণ্য,

কৃশকায়া হল মিছামিছি স্বেদসিক্ত,

ঘুরে ঘুরে কোথা কি জানি কিসের জন্য!

ক্ষীণ মনে জাগে বেদনার কত ছন্দ

সেখানেই মরে, হৃদয় দুয়ার বন্ধ।।

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...