বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১

চরৈবেতি

 

যদিও আঁখির আগে অচল অর্গল,

যদি দেখ অলঙ্ঘ্য স্রোতরাশি উছল পাথার,

শকট বিকল যদি হয়, যদি ভয়-

তরী ডোবে, ছেঁড়ে পাল, ভাঙে হাল;

তবু বলি, বন্ধু হে ‘চরৈবেতি’!

 

সঘন-মগন-ঘন দিকচক্রবাল, ঐ,

চক্রব্যূহ রচে আঁধারে অরণ্যরাজি,

বজ্রকৃপাণ ক্রুর ঝলকে আকাশ পথে,

প্রলয় শিঙ্গা যদি গরজি উঠে বাজি-

ভৈরব ওষ্ট হতে!

পিশাচ-প্রেতদলে, অথবা মার মোহিনী ছলে,

তুমি ফিরো না পশ্চাতে,

বন্ধু হে ‘চরৈবেতি’!

 

মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১

উড়ে যাব

 

শূন্যের ভেতরে বসে শূন্য হয়ে শূন্য দেখি,

বৃহৎ শূন্যকল্প বৃত্তে অসংখ্য শূন্য সমষ্টির তুল্য

নিরালম্ব অস্তিত্বের অন্তরদেশে, ফ্যালফ্যাল চেয়ে আছি-

আকাশ থেকে আকাশে, গৃধ্মু দৃষ্টি, যদি জোটে প্রাণ,

শূন্য সত্ত্বায়, আমি উড়ে যাব! ঝঞ্ঝা যেমনই হোক,

আমি উড়ে যাব!

 

 


বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১

পাছে লোকে কিছু বলে

 

এই অপ্রেমে পতিত আত্মায় বেঁধে ছলে-বলে-কৌশলে,

প্রেমের পূজারী হয়েছিই বটে, পাছে লোকে কিছু বলে!

পাছে যদি কেউ ভেবে বসে আমি ভেতরে কতটা দীর্ণ,

কেউ যদি জানে শিরা ও ধমণী, বিষস্রোতে তারা শীর্ণ

তাই সুধাক্ষরা বুলি, মসীমুখে খুলি, ভাসি তারি কল্লোলে,

পাছে লোকে কিছু বলে! ভাবি, পাছে লোকে কিছু বলে!


বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১

জাগছে জীবন

 

কোনদিন

ভদ্দুপুরে বৃষ্টি শেষে রোদ্দুরে,

মিলবে দেখা পাখির আকাশ,

যাচ্ছে ভেসে কদ্দুরে!

যেখান থেকে আসছে হাওয়া,

সুরের ঢেউয়ে, মাতাল মাঝি,

মাতলা নদীর বাঁক ঘুরে;

খুলে গাওয়া

ভাটিয়ালীর ভরাট মাতম

বুক জুড়ে,

ভদ্দুপুরে বৃষ্টি শেষে রোদ্দুরে,

 

তেমনি কোন উতল দিনে,

সুতলি কাটা মন ঘুড়ি

আকাশ-কুসুম-কন্টকে

আটকে গেল একটু উড়ে

মন টেনেছে ফুলকুঁড়ি,

বদ্ধ হবার শঙ্কাকে

তাই তুড়ি মেরে

উড়িয়ে দিয়ে পথ ভোলা,

ঝড়কে ডাকে কবাট খুলে,

পাঁজরাতলে দেয় দোলা

কোন আদ্যিকালের মরণনেশা

দিক ভুলে,

জাগছে জীবন, ঘুমের দেশে

হাই তুলে!

 

 

 

 

 


মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১

তবে কি নরকে যাব?

 

আমি কি কোন অপ্রাকৃতকে অবিশ্বাস করে বাঁচতে পারি না?

ধর যদি কোন ফুলের প্রতি অগাধ আস্থা রাখি?

কোন নদীর প্রতি আমার থাকে আমৃত্যু ভরসা?

অচেনা পাখির কলতানে আরাধনার সকল মন্ত্র যদি ভাসিয়ে দিই সুরে?

ভর দুপুরে গ্রীষ্ম-বাতাসে যদি বাসি সবচে’ ভাল

আম্রমুকুল-ঘ্রাণ? যদি কোন মেঘের কোরকে বুনি স্বপ্ন,

যদি বর্ষাভেজা মাটির গন্ধে আমি পাই অনন্ত প্রাণ

অনাহুত বহুশ্রুত অমিত-অপ্রতিম অধরা দেবতার?

বলি যদি, আমি এই ভেবে সুখে আছি,

বন্ধু, আমি কি তবে নরকে যাব?

 

দু’দশটা রাগিণী মূর্তি ভেতরে গড়ে বলেছি তারা মোক্ষদাত্রী,

চারটে-পাঁচটে কথার ছন্দ, আমি গেঁথেছি মালা,

ঘটি-বাটি-পেয়ালা-থালা, দু’হৃদয়, একটি সংসার

সফেদ স্বর্গবাস, পুঁথিপত্র-বিধান-বিহীন;

ঘরময় দাপাদাপি আমার দুটি অবোধ মার্জার,

আর কিছু অল্প-স্বল্প বই, তানপুরা, হারমোনিয়াম

অশেষ স্বরগ্রাম, আমি এতে মত্ত, আমি এসবে বিলীন,

প্রিয় সুহৃদ, আমি যে তদ্ভিন্ন কোথাও বাঁধিনি বুক,

তবে কি নরকে যাব?

 

 


রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১

শিব-ধ্রুপদ

 

শমন-দমন-মদ-মদন-মর্দন-মহেশ

মৃত্যুঞ্জয় অনাদিদেব, দেব মহাকাল!

শশীমৌলীযুত, অযুত সুর-মুনি-সেবিত,

ধ্যাবত জিষ্ণু-বিষ্ণু; ভো শম্ভো, দীনদয়াল!

 

কপাল-করে, পন্নগমাল,

ধুর্জ্জটি কটিবাস বাঘছা্‌ল,

পিণাক-বিষাণ-ত্রিশুলহস্ত,

অট্টহাস, চন্দ্রহাস- করবাল!

 

অঘদল, দুরিতদল, ভো বিনাশকারী,

শৈলসুতাপতি, ত্রিলোকনাথ, ত্রিপুরারি,

ত্র্যম্বকধর, হর, ভূতাধীশ, ভব, ভবেশ,

গাবত ভকত তোঁহারি, বাজত সুলতাল!

 

 

সুলতালেই বাঁধব।

 

 

 

 

 

 

 


গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...