শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১

গোসাপের কর্ম

 

শেষ রাত্তি ডিসেম্বরে

রসরাজে মনে করে,

কুক্কুট এনেছি ঘরে,

রেঁধে খাব মনে আশ।

গৃহ মম নদীতীরে,

ঘন বন আছে ঘিরে,

তারই মাঝে করে প্রভু

ক’খানা গোসাপ বাস!

 

প্রভাতে আলস্য ত্যাজি,

রসরাজ নাম ভজি,

গিয়াছি হরিতে হরি-

কুক্কুটের প্রাণধন!

দেখি ধর-মুণ্ড নাহি তার,

অর্ধদেহ- কদাকার,

গোসাপে গিলেছে তারে

বুঝে গেছি বিলক্ষণ!

 

না জানি কি পাপফলে,

ক্ষরিত রসনাজলে,

দিতে নারি বৎসরান্তে,

দু’বিন্দু কুক্কুট-ঝোল!

বল প্রভু রসরাজ,

কি বিধান হয় আজ,

কি শাপে গোসাপে করে

শুভকর্মে গণ্ডগোল?

 

______________________

 

ঘডোনা সইত্য

 

 

 


বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১

কাল-হৃদে কালো-পদে

 

কাল-হৃদে কালো-পদে আ মরি কি রূপ ক্ষরে,

যেন শ্রাবন-সঘন মাঝে শত চন্দ্রজ্যোতি ঝরে।

 

নিরমল মুখ চন্দ্রে, হাস্যময়ী নাদ-মন্দ্রে,

উল্লসিতা ছন্দে ছন্দে রঙ্গে রঙ্গে নৃত্য করে।

 

কপাল-কৃপাণ-ধরা, বর-অভয়-করা,

তারো গো বিশাখে ত্বরা, ভয়হরা ভবঘোরে।

 

 

দেখি কখন সুরারোপ করতে পারি।

 

 

 

 

 

 

 

 


বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১

কুড়ানো কাঁটার মালা

 

যদি সকলে ফিরাবে, সকল দুয়ার হতে,
মাগো, তোমার দুয়ার বন্ধ রবে না জানি,
দশদিশি ঘুরে পথে, তোমারি চরণে টানি-
আমি আপনা মিটাব হৃদয়ের যত জ্বালা,
ওমা, তোমারে পড়াব কুড়ানো কাঁটার মালা!


রবিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১

কেন আর একা বসে থাকি?

 

কখনো এমনও হয় যেন চারপাশ শূন্য করে মাঝে বসে আছি একা,

অনন্ত কৃষ্ণগহ্বরের কোলে, দোলে জীবন, দূরে কোথাও দীপের শিখা

যেন কেঁদে কেঁদে নিভে যায়, যেন সকল ক্ষণ মধ্যরাত্রির মত শান্ত,

অন্ধকার, নিবিড়, অঙ্গুলিচালনে তারের রণন তানপুরাতে সদ্য ক্ষান্ত

উতল বাগেশ্রী শেষে, যেন কোন দুর্নিমিত্ত শঙ্কাগ্রস্ত আত্মা অচলবৎ,

ভেঙে গেছে চক্র চলে চলে, ধুলায় বিজয়ধ্বজ, পাঁচটি ঘোরার রথ

আমার, একান্ত আমার, আমি একা একা নির্বিকার বসে আছি যেন।

 

মেঘ এসে উড়ে উড়ে যায়, নক্ষত্র উঁকি দিয়ে ডাকে, শাল্মলি শাখায়

নিশুতি জাগে উলূক জনাকয়, কে জানে কি সুরে অজানা ভাষা গায়।

উলুখাগড়ার দেশে আকুল শিবাকুল গেল থেমে, যেন সহস্রাব্দ কাল

মরণঘোর মরে নির্ঘুমে, নীহার-শীতল-প্রাণ ওঠে নীরাজনা করবাল

গেয়ে এই তৃপ্ত তামস যুদ্ধহীন পাথুরে বৈকল্যে, যেন কি কৈবল্যনিধি

কে যে পাবে জানি না ছাই, তবু তো চাইই চাই, অকারণে শেষাবধি

কোন নিরিক্ষমাণ নিরীশ্বরের অমোঘ প্রতিবিধান, নচেৎ যে বিষপান

বৃথা যায়, নইলে যে মুচড়ে যাওয়া সুর কত, মীড়-খটকা-গমক-তান

বেদনা-অর্বুদ অচেনা রঙ যত যায়, তবে কেন আর একা বসে থাকি?  

 

 

 

 

 


সোমবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২১

পিছে তুমি তারে ডেকো না

 

যে চোখ দেখেনি ভোরের সূর্য্য,

দেখেনি কখনো জ্যোছনা,

সেও যদি যাবে জলের অতলে,

মাঝি তুমি তারে ডেকো না।

 

যে বাতাসে তার জাগেনি গো ভাষা,

বুকের পাঁজরে এক কণা আশা।

জন্মই যার অন্তিম পথে নিরালায় ক্ষণ গোনা—

মাঝি তুমি তারে ডেকো না।

 

জননীর কোলে জন্মে,

ও তার জননীর স্নেহ-চুমে,

ফুলের মতন নেতিয়ে পড়েছে,

লুটিয়ে পড়েছে ঘুমে।

 

যে প্রাণ বোঝেনি প্রাণের বেদনা,

তবু মৃত্যু নিয়েছে চিনে,

তুমি মুখ ফিরে দেখো,

ওকে বুকে করে আর বেঁধো না।

হারানোর এই লম্বা মিছিলে,

পিছে তুমি তারে ডেকো না।

 

 

 


শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১

স্বাগত মার্জার-শিশু


মানুষের ক্রুর ধরণীতে স্বাগত নতুন প্রাণ।

মানুষ বাসে না ভাল অন্য মানুষেরে,

মানুষ চাহে না আর বিটপীছায়া, বিহগ কলতান

জানে না প্রেম প্রাতের ফুলের সাথে,

রবির করস্নাত শিশিরফোঁটায় নিবদ্ধ মাটির গান

তাকে ভাবায় না ইদানীং কদাপি নিশুতি রাতে

নির্নিমিখ নির্ঘুম গুঞ্জে মরা ছন্দস্রোত।

 

মানুষের অতল বুকে জিঘাংসা খরস্রোতা,

অক্ষিগোলকে ঘোরে দুর্দম প্রতিশোধ

স্পৃহা, প্রত্যহ, ঘোরতম স্বার্থ দ্বন্দ্বাঘাতে

প্রবল বেগে আকাশে বাতাসে আঁধারে জ্যোৎস্নায়।

তোমারও যেন পৃথিবী হয় ঠিক এখানেই,

দু’একটি মাছের কাঁটা আর দুটি ভাতে,

যদি থাকো মানুষেরই সাথে কোনদিন

কোন দোপেয়ে জন্তুর ঘরের কোনায়।

 

 

 

 

 

 

 

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...