বলা হল 'রাত্রি বিগত হয়ে ভোর হলে
তখন তুমি কথা বোলো, এখনই নয়।
অক্লেশে ডিঙিয়ে এলে দিকচক্রবালে,
তুমি কবিত্বে সারশূন্য, নিঃশঙ্ক, নির্ভয়-
প্রেতপ্রায় কায়া; বসে থাকো মহাস্থবির।
রণভেরী বেজেছে যদি দূরে কোথাও-
যুদ্ধে অকেজো তুমি, বাক্যে হও বীর!
এখন বোলো না কিছু। এই দেশে ঘুম।
অগণন তারা-ভরা-গগন লগন চাঁদে
জলদ জাগে, নীচে এই শান্ত বোধিদ্রুম;
আসন পাতো তার ছায়ে, স্তব্ধ হও।
পাতা গোনো, চোখ বোজো কপট ধ্যানে-
স্বার্থে বাঁচো, আজ ঝড়ের মৌসুম!'
বলা হল, 'তুমি অনাহুত, অনভিপ্রেত।
তুমি বাঙময়, অযথা অর্বাচীন, প্রগলভ
বিপ্লবের বাণীবাহী, অসাধ্যসাধন-সংকেত,
সুর-আসক্ত সুরাপায়ীপ্রায় কুহক-কথনযুত
বর্ণিল, লাল-নীল-পীত-ধূসর-শ্বেত-
প্রমাদে প্রোথিত পুরুষ।
আজ্ঞা যদি মেলে তবে বোলো কথা,
দিও ভাষণ। নচেৎ রাজার দ্বারে ভিখিরি-
হতে যদি হয় দ্বিধা, যদি রাজার শাসন-
না হয় ত্রাসভারী, এখনো যদি জীবন-ক্ষুধা-
হয়নি নির্বাপিত, তবে মূক হও মূঢ়!
ভোর হতে ঢের দেরী। দামামা-রনভেরী-
শাঁখ-তূর্য যেখানে বাজে বাজুক, সুরাসুর-
সংগ্রামে তুমি কে হে রিক্ত-আয়ুধ এলে
কবিতার ছন্দ বুনে? তোমার আসে না
কেন ঘুম?'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন