শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩

একটি বেদনা

 

একটি 

বেদনা- বিজরি চমক হানিয়া 

অমরাবতীর দামিনীপুঞ্জ ছানিয়া 

জীবনকুঞ্জে অনল দিয়াছে আনি-

নবপ্রেমে; জানি নিঠুর বজ্রপাণি-

তুমি চরাচরে রাজো পুষ্পধনুর্ধারী-

মায়ার মুগ্ধ, অন্ধ; চিনিতে নারি। 

সুধা ভ্রমে- (নবপ্রেমে)

গরলে তিয়াস, জ্বলে প্রাণ। 

তুমি আছ-

হয়ে মধু-বসন্তে বনে কুহুতান,

ভরা-বরষায় তটিনীর টান-

তুমি। মরা-গ্রীষ্মের- 

চন্দ্রমথিত জ্যোছনার বুকে ভাসিয়া-

রাত্রিশীতল সমীরে- বিহ্বল প্রেমাতুর। 

কাহারো দুয়ারে প্রদীপ গিয়াছে নিভিয়া,

রোদনে তাহার বিবাদী সকল সুর-

ইন্দ্রসভায় যেন; 

সচকিত কত শিঞ্জন যত থামিল। 

সহসা বরষা নামিল, 

কেহ জানিল না বটে 'কেন'।  

(ইন্দ্রসভায় যেন!) 

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৩

দাবী

 

তোমার কি দাবী তবে আজও রইল

প্রত্যখ্যাত বলো কবি

দিবসাবসানে অনামিক খালপাড়ের গ্রামে 

বাঁধা ঘরের কোনে এক দণ্ড ঠাঁই চাঁদ-

আলোতে তার মত্ত মালকোষে

ভেসে যাওয়া মহাকাল

অজর-অমর-অচল-শাশ্বত 

তারকাখচিত নৈশ নীরবতার কূলেউন্মাতাল-

নেশাতুর বাঁশবাগান চিরে যাওয়া

দখিন সমীরঝিরঝির?

অথবা যেন প্রাগৈতিহাসিক শ্রাবণে তার-

শ্রবণে সঙ্গীত ঝিল্লির -দু'চোখে টানে ঘোর ঘুম,

উঠোনে রবে আম কি অশ্বত্থ কিছু,

বা স্বপ্নে খোঁজা বোধিদ্রুম?

নলখাগড়ার ঝাড়?

এই অবধি?


অনাঘ্রাত কুমড়ো ফুলের গায়ে ভোরের শিশিরজল 

দেখা আধ-ধোয়া দৃষ্টিতেআলের ধারে নওল দুর্বাদল

এমনি কোন মাঘের শীতেনিশ্চেষ্ট স্নাতডগায় টলমল-

কবিতার বিন্দু কিছু,

এমন দাবী


এই ইটেল আস্তাকুঁড়ে আর কি কি

স্বপ্রেম প্রত্যাশা গোরস্থানে অকালে গেল চলে

আরও কত বাসী ফুলে ছিটিয়ে দিয়ে

আতর গোলানো জলঅঞ্জলি তুলেছ করতলে?

বলেছ তোমার স্বেচ্ছা-সম্মোহন




মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩

হাঁস ও পেঁচার দ্বৈরথ

 


হাঁস আর পেঁচার দ্বৈরথে কাটছে প্রহর 

শহুরে কবিরা যায় ঘুমাতে কবরে,

আঁধার খুলেছে ধীরে তার করাল বিবর 

অথচ দেখ সকালের সকল খবরে-

তার ছিটেফোঁটা নেই। 


আস্তিনের সাপ তিরতির করে এসেছে বুকে,

সদ্য মাতাল মদ্যপের মুখের গন্ধে। 

শিরশিরে বাতাস বলেছে তার কানে- 

‘তুমিও ঘুমাতে চল, সবে তো কলির সন্ধ্যে’!

এর কোন বিবরণ নেই।  


শহুরে কবিরা ঘুমাতে গেল, 

এখনো হাঁস ও পেঁচার ঝাঁক কথায় কথা কাটে;

ইছামতীর ঢেউয়ে দুলেছে সাম্পান,

জোয়ারে জলের তাল লেগেছে ঘাটে। 



বুধবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৩

নিঃসঙ্গে নিস্তরঙ্গ

 

হয়ত যেন হব নিছকই পথিক, 

অগুরুত্বপূর্ণ কেউ, কোন জনমান্তরে

যদি তখনো বেঁচে থাকে পৃথিবীর একটি গ্রাম, ঠিক-

একটি নদী, নদীতীর, শ্যামল ক্ষেত, দুর্বাদলের আল,

মেঠো পথ, বাঁশবনে বিলোল সমীর-

পূর্ণমাসীর রাতে ঝিরিঝিরি, নিখিলের দিকচক্রবাল-

ঘিরে যদি পাই অনন্ত অধীর পদাতিক-

বাসনা গুটিকয়েক দু’কদম এগিয়ে যাবার

তবে। 


বিটপীছায়ে এলিয়ে দিয়ে প্রাণ, তপ্ত বোশেখে; 

শাওন মাড়িয়ে পায়ে যদি পাই কর্দমের ঘ্রাণ

বুক ভরে যেন নেব জনমভর। 

ধানের রুইয়ে স্বপ্ন বোনা চাষীর দাওয়ায় -সুখে 

হুঁকোতে টান, যেখানে জীবনের মত্তগান-

দোতারা বেয়ে নামে ধ্যানের হাওয়ায়,

সেখানে হয়ত থমকে যাব কিছুটা ক্ষণ নির্দ্বিধায়,

অতঃপর-  


নয়ত, সোনার বেড়ি পায়ে ঝেড়ে চলব পথ, 

ডিঙির পালে মেলব ডানা, আগল দিয়ে ঝড়,

বাঁধব জলোচ্ছ্বাস কশেরুকার খাপে। 

তারার আলোয় জোনাকি অম্লান, জ্যোতিরেখা ধরে

স্বর্গদ্বার খুলত ধীরে, নিশ্বাসের তরঙ্গ কাঁপে-

যদি নিঃসঙ্গে নিস্তরঙ্গ হবার অন্তিম আয়োজনে,

আমার হত কি তাতে ক্ষতি? 


মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৩

যাহারে জানিনে ভাল

 

যাহারে জানিনে ভাল, ভাল তারে বাসা যায়,

যাহারে পেয়েছি কাছে, কাছে তারে রাখা দায়। 


যা কিছু চাহিয়া মরি, পেলে তায়- আগে ছাড়ি, 

কে করে এ কারিগরি, জানিতে না পারি হায়! 


বিশাখের প্রাণ-নিধি, মিলিল না এ অবধি, 

এমনই লিখেছে বিধি- এ জ্বালা বোঝাব কায়?  


৩/১/২৩ 

সোমবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৩

বিবস্বান

 

বিবস্বান পেয়েছিল প্রথম ক্লেদ-মৃত্তিকার স্বাদ,

তটিনী-তট-অকপট-প্রকট-যৌবন, বায়ুস্বন তার-

সঘন-ভারে তস্ত্র ত্রসরেণূ, অবাধ-

গভীর কম্পন। 


স্রোতভঙ্গ-জলে অধীর নক্ষত্র ছায়া, 

মাঘের মৌসুম; মন্দ্রখাদে নড়ে তার রুদ্রবীণার,

গমকে ঘনায় আরও রাত, আরও ঘুম-

অনেক ঘুর্ণিবাত। 


বিবস্বান, মৃতার গর্ভাহূত মৃতবৎস্যা স্বপ্ন প্রায়,

ধন্বন্তরির পাত্র তুলে কালকূট স্নান,

অলীক, অথচ দেদীপ্যমান! 


২ জানুয়ারি|| ২০২৩||

রাত্রি ১০:৪৭||

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...