মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

আমার সাধগুলো

 

আমার সাধগুলো এখনো সর্বাংশে নয় মৃত।

আজও ইষ্টকপিঞ্জিরার মাঝে ধুকপুক বুকে 

খোয়াব্ দেখি দিবালোকে, রাত্রি বিজড়িত 

গ্রাম্য চন্দ্রমার জ্যোৎস্না-লেপনে জাগে গান

ধানের ক্ষেতে, ঝিলের জলে, পুষ্পকোরকে

প্রেমের পঙক্তি মেলে, অতন্দ্র নৈশ-স্নান-

আমার অঙ্গার-অঙ্গে লাগে শীতল সৌরভ।

আমি এমনি থাকতে পারি বিকিয়ে গৌরব

যত পেলাম এই মিথ্যে মঞ্চে গেয়ে অ্যাদ্দিন!


ভেতরে গ্রীষ্মদগ্ধ শীর্ণস্রোতা নদী হতে ভয়।

যদি না ভেড়ে কারো তরী, না বাজে বেণু-

শুষ্ক গোষ্ঠে, না বাজে বীণ আর যদি কোনদিন

হৃদয়-দরবারে; আবদারের ফিরিস্তি গোটাকয়

জিঁইয়ে রেখে মোক্ষেও পাব না সুখ জানি।  


আমি নগরে অতি নশ্বর, অযথা অভিমানী-

অসম্ভব কবিতার ভার বয়ে সুরে সুরে দূরে-

দূরে ডুকরে মরি, আমি তো রবিঠাকুর নই, 

জীবনানন্দ নই যে মরণ আনন্দ লিখে বাঁচি, 

আমি স্রেফ কতগুলো আহ্লাদের অবোধ গুঞ্জ-

স্ব-সাধিত খঞ্জরের ঘায়ে খন্ড-খন্ড হলাম,

তবুও কিছু সাধ আজও সর্বাংশে নয় মৃত। 


আস্থা

 

একটি ভগ্ন প্রাসাদের পর

থাক এমনই অস্তমিত সূর্য,

যেন মনে থাকে- সকল অস্মিতা সমেত

কত যে পৃথ্বীশ্বর, তূণ, খড়গ, তূর্য-

ধ্বনি, এভাবে হারিয়ে যাবে 

কালের গ্রাসে-


আমার আছে এটুকু সুদৃঢ় বিশ্বাস,

এর চেয়ে বড় কিছুতে আস্থা রাখি না কোনদিন!

শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

প্রণাম

 


ক্ষমো হে ক্ষমো, 

প্রমথনাথ প্রথম মম 

ঈশ্বর, জনম জনম ক্ষণিক-ভ্রম-

সুখে এ মিছে মরত-ভ্রমণ-

দুঃখ-ভারে বিস্মরণ হয়েছে 

তব মোক্ষ ধাম। 

ক্ষম হে 

যা ছিল প্রণম্য, 

তারে করিনি প্রণাম। 

মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

জন্মান্তরের সাগর সেন

 

এমনি কোন নির্বিবাদী দিবস আমার
উদাস হয়ে আপন মনে সাগর সেনকে শোনা,
একটি একটি রবির পাতা, সুরের লহর;
স্বপ্ন বোনা সুতোর বাঁধন গোনা।

আমায় তুমি এমনি করে রাখো,
তোমার সোনার শেকল দিয়ে যেথায় ইচ্ছে বাঁধো।
মহিম হে, জীবনযজ্ঞ সমাপনের সমিধ মাঝে
স্তব্ধ করে আমায় যদি ঢাকো,
আমি তাতেই হব খুশী।

আমার এমনি কতক বাসনা গো
জন্মে জন্মে পুষি। 

শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

বিস্মরণ

 

অমনি তুমি এলে

মৃণাল-জলে মরালদলে ঢেউ।

পদ্মপরাগ বুনল ভাষা,

আমার মতন কেউ

বারুদ ঠাসা-

নিথর ভূধর থরথরিয়ে কেঁপে,

দু’চার কথা বলল বটে মেপে-


অধর কোনে, অধীর মনে-

রইল আমার বিস্ফোরণটি জমা। 


প্রথম রবির রশ্মি ধরে

শিশির কণায় ঠিকরে পরে

হাসির ছটায় ঘুম ছুটিয়ে 

অমনি তুমি এলে,

বিস্ফোরণটি ঘটার আগেই 

বিস্মরিত হলে। 




মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

নাইবা হলেম কারো

 

পড়ব যখন দুয়ারদেশে ঝঞ্ঝাবাতে লুটিয়ে এসে,

আপনি তুমি দয়ার হস্তে বক্ষে তুলে ধোরো।

নাইবা হলেম আর কারো মা, নাইবা হলেম কারো। 


কারে আমি কি শোনাবো, কার মরমে কি বোঝাবো,

কার মনেতে মন মেলাবো, পাইনে হদিশ তারও। 

নাইবা হলেম আর কারো মা, নাইবা হলেম কারো। 

সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

গরল অন্বেষণ

 


চতুর্দশপদী

___________


মধুপ যাইল যেথা পুষ্প বন ভ্রমে

মায়ার মারণ জাল তথায় জড়িত,

সুবর্ণ ললিত পঙ্খ মৃতপ্রায় ক্রমে 

প্রাণপদ্ম যেন হয় কাল-করে ধৃত-

যেমতি রাহুর গ্রাসে দিনমণি যায়, 

নিশাকর নিরাকৃত নিশি সমাপনে, 

যেমতি সে অভিমন্যু সমর অঙ্গনে-

সপ্তমহারথী তীর বক্ষে ধরে হায়! 


নহে এ প্রপঞ্চ পুঞ্জ সুখের জলধি 

মদিরাক্ষী প্রেমমুগ্ধ কবিত্ব সুষমা,

মধুকর এ ছলনা জানিল না যদি

নিরদয় মহীতল নাহি করে ক্ষমা। 

তথাপি অবোধ চিত মহাব্যাস্ত হয়, 

গরলের অন্বেষণে নাহি তার ভয়! 


পদবিন্যাস- কখকখগঘঘগ চছচছজজ। 


 











গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...