বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

এটাই কষ্ট

 

এত কিছু ঘটার পর,

এত সব দেখার পর, 

এত রক্ত ঝরার পর

যারা আজও চোখে বিষ্ঠা লেপে আছে- 

তারাও মানুষ! - এটাই কষ্ট! 


অন্ধও আঁচ করে সামনে বিপদ, 

বধির অধীর হয়ে থাকে যদি কিছু অস্পষ্ট শোনে,

তবু যারা সর্বার্থে সবলেন্দ্রিয় তারা ভাগাড়ে

মরা পশুর মতন কেন শুয়ে আছে? - এটাই কষ্ট! 


তারা কেন বলে না কিছুই, 

তারা কেন লেখে না কিছুই,

দেখে না কোন কিছুই যখন সত্য ন্যাংটো নাচে চোখের সামনে:

তার শিশ্ন উদ্যত মারণাস্ত্রের মত, সপাট, সঙিন-

অস্তিত্বের সকল রন্ধ্রে সে রেতঃপাত করে,

বিষের ফোয়ারা ছোটে, রক্তে রঙিন-

এরই মাঝে যারা গান্ধারীর সঙ ধরে- তারাও মানুষ- 

এটাই কষ্ট! 


এত নষ্টত্ব গ্রাস করার পর, 

এত ধ্বজভঙ্গ ক্লীবত্ব পেঁচিয়ে ধরার পর, 

প্রতিদিন তিলে তিলে মরার পর

আজও যারা মিথ্যে বলে ললিতকলায় ভরে অষ্টপ্রহর

তারাও মানুষ- এরাও মানুষ- এও যে কষ্ট!

সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫

কালী কালবারিণী

 

সগুণা নির্গুণা তারা, মা, লীলাময়ী, হরদারা, 

রে, ব্রহ্মরূপা পরাৎপরা, কালী, কালবারিণী।। 


'ত্বয়ৈব ধার্যতে সর্বং ত্বয়ৈতৎ সৃজ্যতে জগৎ।’ 

জেনেছি মরতভূমে তুমি গো অক্ষয় সম্পদ!

তনয়ে তার গো শিবে, অশিবক্লেশহারিণী।।

রে, ব্রহ্মময়ী পরাৎপরা, কালী, কালবারিণী।। 


বিপন্নে বিতর দয়া, গো জগন্মাতা, মহামায়া, 

তাপিতে বিতর ছায়া, মাগো ভবার্ণবতারিণী।।

রে, ব্রহ্মময়ী পরাৎপরা, কালী, কালবারিণী।। 


অনন্ত অসুখ-ক্লিষ্ট, ওরে বিশাখ নিরয়ে দৃষ্ট, 

মা হয়ে কি অচেষ্ট! বলি অদৃষ্টরে দোষদুষ্ট!

কুপুত্রে জনম দিয়ে, গো ত্যাজিলে কি জননী? 

রে, ব্রহ্মময়ী পরাৎপরা, কালী, কালবারিণী।। 

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

তবুও থাকবে চুপ

 

তবে অধীর খেদিয়ে পাঠান আনলে 

বধির অবোধ নালায়েকদল! 

মুর্শিদ বাদে, মুরীদ আবাদে নাজেহাল,

বেসামাল নড়ে ধর্মের কল! 


আর কত বল পালিয়ে বেড়াবে

খাল-বিল-ঝিল ঝোপ-ঝাড় ছেড়ে 

এদিকে ওদিকে বেওকুফ? 

মসনদে যারে চড়িয়েছ মহাসুখে 

সে যদি করেছে শত খুন আরও মওকুফ

তবুও থাকবে চুপ?

শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫

বিকট বিপদ

 


তোমাদের চোখে ঘুম লেগে গেছে। 

নলখাগড়ার ওপাড়ে কিছু শেয়ালের চোখ জ্বলে। 

আমি স্পষ্ট দেখতে পারি। 

বাঘের ভয় ডিঙিয়ে বটে, অদ্য শেয়ালের ডেরায়- 

যত অবিমৃষ্যকারী-  দিব্যি শুয়ে আছ সদলবলে-

মেয়ে-মদ্দ, বলি হারি! তাও এ সংকটে? 


দ্যাখো, মশালে তেল ফুরালো বলে! 

নিত্য আত্ম-কোন্দলে ক্লান্ত দেহ নড়ে না আর। 

অবহেলে শ্বাপদ-সংকুলে- 

এদিকে সুর্য গেল ডুবে। চৌদিকে মস্ত আঁধার- 

পছিমে-পুবে হা করে গিলতে বসেছে নিকট ভবিষ্যৎ;

চরাচরে পরাৎপর বিকট বিপদ!


গাজন

 


তোরা ভাই নাচবি কত শিবের গাজন খড়্গ তুলে?
ঈশাণ কোনে মেঘ জমেছে, ঝড় জেগেছে পথের ধুলে!
সঙ সাজনের শস্ত্র পূজায় উর্দ্ধে তুলে মড়ার খুলি!
মদ-মাতালের মচ্ছবে ভাই ক্ষাত্র গেল জলাঞ্জলি!
যত দানার দলে দিচ্ছে হানা ভাঙছেরে দেখ ঘরের খুঁটি!
বোনের আঁচল অরক্ষিত, ধরছে মায়ের চুলের মুঠি!
তোরা ভাই বেহুঁশ বড়ই, লাথ খেয়ে জাত গেছিস ভুলে!
লাশের মতন ভাসবি কেবল এ কূল হতে অন্য কূলে! 

সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫

নহুষ

 



যদি নিত্য নৈরাশ্য বুনো লতার মতন পেঁচিয়ে ধরে,
পদসঞ্চারে পাই বাধা, অনেকটা পথ রইল বাকী-
তবু যদি প্লাবনের শংকা ঘেরে চারিপাশ, যদি
প্রাপ্তির ঝুলিতে দেখি এখনো শূন্যতার ভার একগাদা,
যদি বাতাসে ফেরে গোটাকয় দীরঘশ্বাস- অহরহ,
আমৃত্যু বুকের নিধি হয় তারা; বাঞ্ছিত সকল কিছুতে
যদি জোটে বঞ্চনা তাতে আপত্তি নেই, কিন্তু যদি
অস্তিত্বের শেষটুকুও হই হারা; দুর্বিসহ! এতটা যদি
কাঁটার পথ মাড়িয়ে এসে পাই সকলই পরের মন্বন্তরে-
গচ্ছিত রাখা, এ বার শুধু ভেঙে পড়া পাহাড়ধসের মত,
তবু যদি জানতাম অনন্ত তুমি এক চিলতে দেখা দিতে
মেঘের ভেতর থেকে অন্তত একটিমাত্র ক্ষণ তরে,
তবে নিয়ত আমি আগুনে আহুতি হব নিরুদ্বিগ্ন চিতে।
কিন্তু সকলই যদি ছেলেভোলানো গল্প হয়ে ওঠে,
অতি অপ্রাকৃত জুজুবুড়ির ভয় শুধু সত্যি হয় মনে,
আষাঢ়ের মেঘ জমে বসন্তের সমাগমে কেবলই,
এতটা যদি ভাব-দ্রবিণ কবিত্বকলা সব প্রলাপপ্রায় স্বনে
কাঁদে যদি আঁধারে ডুবে গিয়ে তারার মতন, বলো-
যদি এতটা বিপন্নতা পন্নগের ফনার মত দোলে,
এতটাই অরুন্তুদ সব অতিরিক্ত বেরসিক গানের ডালা
দ্ব্যর্থহীন ভিক্ষা চেয়েও জানে বটে 

পাবে না কিছুই,
তবু যদি হাওয়ায় হাওয়ায় দিতে কিছুমাত্র আভাস
না হয় নতুনতর ব্যথা ছলে, তবু হয়ত স্বস্তি পেতাম।

এখন সবেতেই ক্ষয়ে যাবার ভয়,
বয়ে চলার ক্লান্তি আর ভেঙে যাবার অযথা বিশ্বাস,
ত্রিদিবপতিত নহুষের মত জেঁকে ধরে যেন!


গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...