যদি নিত্য নৈরাশ্য বুনো লতার মতন পেঁচিয়ে ধরে,
পদসঞ্চারে পাই বাধা, অনেকটা পথ রইল বাকী-
তবু যদি প্লাবনের শংকা ঘেরে চারিপাশ, যদি
প্রাপ্তির ঝুলিতে দেখি এখনো শূন্যতার ভার একগাদা,
যদি বাতাসে ফেরে গোটাকয় দীরঘশ্বাস- অহরহ,
আমৃত্যু বুকের নিধি হয় তারা; বাঞ্ছিত সকল কিছুতে
যদি জোটে বঞ্চনা তাতে আপত্তি নেই, কিন্তু যদি
অস্তিত্বের শেষটুকুও হই হারা; দুর্বিসহ! এতটা যদি
কাঁটার পথ মাড়িয়ে এসে পাই সকলই পরের মন্বন্তরে-
গচ্ছিত রাখা, এ বার শুধু ভেঙে পড়া পাহাড়ধসের মত,
তবু যদি জানতাম অনন্ত তুমি এক চিলতে দেখা দিতে
মেঘের ভেতর থেকে অন্তত একটিমাত্র ক্ষণ তরে,
তবে নিয়ত আমি আগুনে আহুতি হব নিরুদ্বিগ্ন চিতে।
কিন্তু সকলই যদি ছেলেভোলানো গল্প হয়ে ওঠে,
অতি অপ্রাকৃত জুজুবুড়ির ভয় শুধু সত্যি হয় মনে,
আষাঢ়ের মেঘ জমে বসন্তের সমাগমে কেবলই,
এতটা যদি ভাব-দ্রবিণ কবিত্বকলা সব প্রলাপপ্রায় স্বনে
কাঁদে যদি আঁধারে ডুবে গিয়ে তারার মতন, বলো-
যদি এতটা বিপন্নতা পন্নগের ফনার মত দোলে,
এতটাই অরুন্তুদ সব অতিরিক্ত বেরসিক গানের ডালা
দ্ব্যর্থহীন ভিক্ষা চেয়েও জানে বটে
পাবে না কিছুই,
তবু যদি হাওয়ায় হাওয়ায় দিতে কিছুমাত্র আভাস
না হয় নতুনতর ব্যথা ছলে, তবু হয়ত স্বস্তি পেতাম।
এখন সবেতেই ক্ষয়ে যাবার ভয়,
বয়ে চলার ক্লান্তি আর ভেঙে যাবার অযথা বিশ্বাস,
ত্রিদিবপতিত নহুষের মত জেঁকে ধরে যেন!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন