শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২২

অদৃশ্য তূনীরে বাঁচো?

 

কণ্টক-কিরীটী,

ক্রুশলগ্ন ঈশ্বরপুত্রের মত প্রস্তর-

মুরতি হয়ে অন্তর- বাণবিদ্ধ বলাকা-জীবনে

অভিনন্দিত;

অকবিত্বে প্রাঞ্জল ব্রহ্মাণ্ড-কোটি-

সরলার্থে ব্যাপৃত মায়ার শৃঙ্খলে, মায়াতীত-

সত্ত্বান্বেষণে, সত্যহীন প্রমাদে গেল ছেয়ে।


ঝড় আসেনি এখনো এখানে,

আকাশগঙ্গা ফেলে মেঘেরা গেছে বেয়ে-

লোকান্তরের খেয়া।

ডাহুক ডাকে আঁধার হলে বাঁশের বনে,

শিবাদল আসে নিশির কোরকে,

জ্যোছনা অপরিমেয়া-

জানালা ঘেঁষে যথারীতি দাঁড়িয়ে বিহ্বলা-

শুধোয়-


জীবন তুমি কি পন্নগের ফণা শুধু,

শুধু কি বিষ-শর-ফলা-

অদৃশ্য তূনীরে বাঁচো? 





বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২২

অদেখারে দেখা

 

চিনিনে তোমারে জানিনে কিছুই,

জুড়ে দিয়ে শত অভিধায়

অন্তরলোকে খুঁজতে পারিনে, অন্ধ;

তাই বন্ধ দেউলে চিত ধায়

 

হায়

ছেঁড়া ছেঁড়া কথা ছুঁড়ে ছুঁড়ে কত দ্বন্দ্ব,

মন্ত্র তন্ত্র কাঁসর ঘন্টা ছন্দ

ধুপধুনো আর বেছে তোলা ফুল গন্ধে

বিচার, নিষ্ঠা, আচারিক ভাল মন্দে

অদেখারে কি বা দেখা যায়?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২২

শঙ্করাকে ডাকে!

 

আছি এটুক জায়গা করে, এই তো পথের বাঁকে।

আশার আশে বিশাখে কি, জলে চিত্র আঁকে।

 

সে ভবতলে পঙ্ক ঘেঁটে, ছ’টা ভূতের বেগার খেটে,

জোটায় কি ছাই, জানিনে ভাই, ম’লো রে বিপাকে!

ও তার আপনি শোবার হয় না রে ঠাঁই,

শঙ্করাকে ডাকে!

 

 

 

 

 

 

 

 

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২

তুমিও যাবে

 

তুমি জানো না, তুমি চলে যাচ্ছ।

জানো না তুমি গলে যাচ্ছ হিমবাহের মত,

মিলিয়ে যাচ্ছ আকাশে, নৈঃশব্দের অন্তরালে

একেবারে অন্য কোথাও, বিধৃত নক্ষত্রজালে

কবিতার নৌকা-বহর ফেলে না নোঙ্গর

তুমি সেখানে যাচ্ছ।

 

তুমি জানো না, তুমি চলে যাচ্ছ।

তিলে তিলে মুছে যাচ্ছ গুহাচিত্রের মত,

তলিয়ে যাচ্ছ জীবাশ্ম-প্রায়; কোনদিন ফিরবে না বলে,

অনির্দেশ্য সময়ের হাতে দিয়ে ঘরের চাবি

তুমি জানো না আর কার আছে কতক দাবি

তোমার কাছে না মেটানো, তুমি রাখো না খবর

তবু তুমি চলেই যাচ্ছ।

 

কোন অতলান্ত প্রশ্ন-গহ্বরে ধরেছ ধ্যান বদ্ধ পদ্মাসনে।

গ্রীষ্ম-অন্তরে স্বাগত প্রথম মেঘ-স্বন

তুমি জানো না কত আকুল সাধ, কত সপ্রেম সমর্পণে

তুমি জেগেছিলে কেঁদে, মর্ত্যে প্রথম ক্ষণ

তোমার, তুমি সব ভুলে গেছ।

 

তুমি চলে যাচ্ছ, জানো না তুমি।

তুমি জানো-ই না, তোমাকে যেতে হবে

ঠিক এভাবে সকলে যায়, অতীতে গেছে যারা

আরো চাঁদ, আরো তারা; আরও ক্ষুধা, আরও ব্যধি

আরও সুধা, প্রাণনিধি কত অঢেল কবিতা

মাথামুণ্ডু সুরহারা গান

 

তুমিও যাবে।

 

 

 

 

 

বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

শাসন

 

ওমা, সাধন বিনা তোমার বীণা বাজাব সাধ সাঙ্গ হল,

দিনের শেষে এটুক চাওয়া, তিলেক মাগো বদল তোল।

গাঁথব বলে সুরের বাণী, আকাশ পাতাল কতই ছানি

এই তো এলাম তোমার দেশে, একটু যদি দুয়ার খোল।

 

দেখি ঘুমের চোখে বুনছি বাসা, আশার আশা এই ধরণী,

সর্বনাশা ঘোরের নেশা, মাগো, আমার কেহ নাই জননী।

দিন ফুরালে শেষের বেলা, যদি ভুল হয়ে যায় ভাঙতে খেলা

শাসন করে দু ঘা দিয়ে, টানতে কোলে, কানটি মো’লো!

 

 

 

 

 

 

 

 

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০২২

তবু এত কথা কিসের?

এতো কথা কিসের!
তিরতির করে মাটি সরে, ঘর খালি হয়,
মাকড়সার ঝাঁক অন্তরীক্ষময়.... 
ক্রমশ চতুষ্কোন ঘোরে...
তবু এতো কথা কিসের?

মরচে পড়া টিনের চাল গলে এসেছে অশ্রু,
শ্রাবণস্নাত খড়ের গাদার ঘ্রাণ, দুধেল গাইয়ের ডাক,
চড়ুইয়েরা বাড়ি ফেরে... 

সমস্ত ডুবে যায়, প্রায় সকলি গেছে,
আবির্ভাবের পর অপ্রতিরোধ্য অন্তর্ধান-
সত্য মেনে, আঁধারে আকাশ ঘেরে-

ঠিক তেমন।
তবু এতো কথা কিসের?

আমি বেঁচে আছি

 

বসন্তের মাঝে উড়ে আসা মেঘ

আমি অনভিপ্রেত, অনিকেত, ফিরি লোকান্তরে

গৃহহীন, গন্তব্যহীন; অধীর জলতরঙ্গ বুকে

উদাসী হাওয়ায় যেন,

যেন বেহাগ গাইতে চেয়ে কোমল নিষাদ সুরে

প্রবল অসুখে

আমি মল্লার হয়ে ভেঙে পড়েছি।

 

বাহুলতায় বাঁধো,

না হয় বাঁধো কণ্টকশোভিত, নিপুণ ছলনে, মাল্যে।

তবু আমি অধরা, তবু আমি নশ্বর

আমি ঈশ্বরের মত বধির হয়েছি দ্যাখো,

চোখ খোলো, খোলো, অতঃপর

বোঝো বাতাস কি অবরুদ্ধ হয়!

 

আমি বেনামী, কুল-গোত্রহারা

প্রার্থিত সুধা মন্থনলগ্নে আমি যেন কালকূট

বীণাপাণির দানে নিয়ত লক্ষ্মীছাড়া,

আমি পথে পথে ঘুরি।

 

আশা নেই,

কয়েকছত্র ভাষায় বুনেছি হৃদয়,

মুচড়ে মুচড়ে দিয়েছি সুর

প্রবল বেগে ধরেছি লয়

মত্ত মদ্যপ নেশায় চুর

আকন্ঠ গরল ধারায়, আমি বেঁচে আছি।

 

 

সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২

মিথ্যে-মদির

এত যে কথার কলা, এত যে অযথা দ্বেষ,
কে জানে যাচ্ছে কোথা, কোথায় সবের শেষ
এত যে তীরের ফলা বিষে মেখে ছোঁড়ো বুকে,
এত যে ভাসছ সুখে, কেউ যদি ডোবে দুখে;
কি করে জমাতে পারো তলে তলে এত ঘৃণা, 
যে হৃদয়ে সুর জাগে, যে হৃদয়ে বাঁধো বীণা
তাতেও কি করে ওঠে এত অ-প্রেমের আবাহন,
কি ভেবে কবিতা নামে, তাও কেন প্রয়োজন-
যখন, মানুষ হবার দায় চুকিয়ে রয়েছি ভালো,
তবে মিথ্যে-মদির হোক, মাঝরাতে তাই ঢালো!

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...