বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই।
অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি,
সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব
আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ভুবন সহ।
ছত্রাকের মতন গজিয়ে ওঠা আমার অস্তিত্বটুকু!
স্যাঁতসেঁতে কমনীয়তায় প্রখর রোদের ভয় মেখে
দ্ব্যর্থহীন জীবনাতিপাত ভিন্ন আর হবে না কিছুই;
অল্প অল্প করে বিশুষ্কতার ছোঁয়ার যাব ক্ষয়ে।
অলীক, অবান্তর, যত অবাস্তব নিঃসীম মতিভ্রমিত
কবিত্ব-প্রলাপ, অপলাপ- নেশায় গিলে রাত্রিদিন-
কত দূরে, অনিকেত- আমি ধীরে আঁধারে মেলাব,
লক্ষজনম-সঞ্চিত অজ্ঞাতসাধনধন নীরবে বয়ে।
বিলক্ষণ জানি- আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই।
শিখার নীচে তেলচিটে কালচে ইতিহাস হয়ে আছি
শেষাবধি: আলোর অন্তরালে আত্ম-মোক্ষণ ভেবে
স্বেচ্ছা নির্বাসনে বক্ষব্যাধি যুগব্যাপী সাধি মূর্খপ্রায়!
এখন করুণা হয় প্রতিভার মৃত্যুশয্যা দেখে অহরহ,
অপঘাতে মৃত গানের বাণী কাঁদে, আমি নিরূপায়।
অথবা একদিন বড় সাধ করে টুপ করে ডুবে যাব
অনন্তের জনস্রোতে। তার বেশী হবে না কিছুই।
আমি কখনো চাইনি যদিও আরো বেশী কিছু হোক-
কেবল অল্প কিছু কথার স্ফুরণ ছাড়া! কিছু কথা
যা না বলা রয়ে গেলে- মনে করি আমি বঞ্চিত হই,
মনে করি আমার মতন অর্বাচীন আরো আছে যারা
সবার একটি ধ্বজা ধরার দায় আমি কাঁধে বই -
না হয় স্বার্থবুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে- ইদানীং আলুনি লাগে!
এখন কেবল বিস্বাদ, অবসাদ, ঋষভ-ধৈবত-নিষাদ
সব, সব আমার গ্রাস করে নেয়।