শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

আমায় তুমি করছ আড়াল

 

আমায় তুমি করছ আড়াল
আঁচল ছায়ে তোমার কোলে,
আমি বড়ই অধীর বাইরে যেতে
বড়ই  ব্যাকুল, দুষ্ট ছেলে!
বিশ্বভুবন দিচ্ছে সাড়া-
'ও তুই চোখ খুলে দেখ, বাইরে দাঁড়া'
আমি ভাল মন্দ জানিনে মা
(ওদের) কথায় গেলাম ভুলে!
তুমি আগলে আছ দু'হাত দিয়ে
মাগো কতই যতন করে,
আমি যতই যেতে চাই মা ছুটে
(তুমি) রাখছ টেনে ধরে!
আমার সব অপরাধ করে ক্ষমা,
কত আদর করছ গো মা,
ছেলে তো মা বখে যাবে
(মাগ) এত আদর পেলে! 

রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫

কার্নিভাল

 

ঢাকের বাদ্যে- ভাঙনের শব্দ কি তুমি পাও?
জলের তোড়ে মিলিয়ে যায় অগুনতি বৃংহিত!
পাঁজরে মোচড় দেয়া মানুষের মৃত্যু কার্নিভাল
তোমাকে কি বিচলিত করে? কিছুটা অন্তত?
এই নটী-নট-বিদূষক বেষ্টিত সিংহাসন ঘিরে
খোশামোদের সুরা-ধারা বয়, তুমি নেশাপ্রমত্ত;
সর্বনাশ সমস্তময় ওই, গ্রাস করে চরাচর ধীরে!
তুমি বল দেখতে কি পাও অসভ্য সভাসদের
পদলেহন-শিল্প ছাড়া ভিন্ন কোন সত্য প্রত্যক্ষ?
এতসব রক্তচোষা পরগাছা মিথ্যুকের ভীড়ে? 

শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কাতর হয়েছি তারা

 



কাতর হয়েছি তারা তরিতে ভবসাগর
দেহতরী দিকহারা হেরিয়া পাথারে ঝড়!
জীর্ণ কাঠে তৈরি তরী, বসিলাম দাঁড় ধরি,
জয়দুর্গা নাম স্মরি, ত্বরাও মা সত্বর!
করাল তরঙ্গ ঘোরে কে আর রাখিবে মোরে,
কে বাঁধিবে বাহুডোরে, ভয়ে কাঁপে কলেবর!
একমাত্র নাম ধনে মনে করি ক্ষণে ক্ষণে
তারিণী কুসন্তানে কোলে নিয়ো অতঃপর!








শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কে বুঝিবে তারা তোমার ছলনা

 


কে বুঝিবে তারা তোমার ছলনা!
আচারে বিচারে কে পাবে তোমারে-
এ যে ভোলাতে আমারে তোমারই রটনা!

ডাকি গো তোমারে 'এসো বোসো যন্ত্রে'
হ্রীং ক্রীং আদি দেবভাষা মন্ত্রে,
তব শতেক বর্ণনা শতখানা তন্ত্রে;
অন্তে মাগো কিছু কাজে তো এলো না!
কে বুঝিবে তারা তোমার ছলনা!

ভাঙি গড়ি কত শব্দবন্ধ,
আড়ালে টানিল সুর তাল ছন্দ,
কিঞ্চিৎ মনে না হয়েছে সন্দ'
তুমি ফাঁকি দিলে ভাল, ও হরললনা!

বলি মা তোমারে 'ওমা ভবরাণী
পাষাণের মেয়ে হয়েছ পাষাণী,
নাম ধর বটে জগত জননী,
বলি বিশাখেরে মাগো অকুলে ফেলো না!
কে বুঝিবে তারা তোমার ছলনা! 

বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

দেশ বন্দিশ

 

দামিনী দমকত গরজত অতি ঘোর
সাবন রুত আয়ি বরসত চহু ঔর।।
রৈন নিঁদ নাহি, নৈন তরসত,
পিতম পরদেস, বিজুরি চমকত;
বিরহ পবন চলি, পাপিহা করত শোর।।


________

দেশে বাঁধব ভাবছি। 

বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জগত্তারিণী আসে

 

রাত্রি নিবিড়, অতি গম্ভীর, বজ্র নিনাদে জাগে- 

যোগিনী কোটি সঙ্গিনী সাথে মহিষদলনী তারা! 

বর্মসজ্জা বাজে ঝনঝন, টঙ্কার শুনি, দামামা রণন;  

করী-অরি ধরে গুরু-গরজন, দনুগণ ভয়ে সারা! 


বরষামুখর জলসংকুল পথ- পূজারীর দল চলে, 

নীলাব্জমালা সজ্জিত ডালা সযতনে তুলে শিরে; 

গায় আগমনী দূরে বিহগিনী বিজন বিটপী ডালে, 

মেঘস্বন ঐ প্রলয়ের লয়ে আঁধার রজনী ঘেরে! 


ঐ দেখ, দেখ ঐ খড়্গধারিণী-হীরকখচিত মুকুটে 

সূর্যকিরণ সুবর্ণরাঙা ঝলকে- তমসার ত্রাস নাশে;

‘মাভৈঃ মাভৈঃ’ চেয়ে দেখ ঐ জগত্তারিনী আসে! 

 

সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পাষাণের কন্যা তুমি

 

পাষাণের কন্যা তুমি, পাষাণ তোমার হৃদি, 

তোমার তনয় হয়ে কাঁদিতেছি নিরবধি।। 

দিয়াছ ভবের খেলা, তাই লয়ে কাটে বেলা, 

ভুলালি মা গিরিবালা, এত হেলা কেন শুধি! 

ভূতলে প্রপঞ্চ ঘোরে, বাঁধিলি মায়ার ডোরে, 

মা বলে ডাকি তোরে, পায়ে পরে কত কাঁদি? 

না আছে পুণ্যের ফল, না আছে সাধন বল, 

বিশাখের আঁখিজল, তাই দিয়ে তোরে সাধি! 


১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫। 

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আমি যে দুখেরে ডরি

 


মাগো, আমি যে দুখেরে ডরি!
তাই দুঃখহরা বলে-  পদতলে আছি পরি।
করুণা নয়নে তারা, বিপদে সমুখে দাঁড়া,
দুরিত-পাথারে ওমা, কোন গতি নাহি হেরি!
হয়ে মাগো ধ্রুবতারা, আঁধারেতে দিস সাড়া,
নাম স্মরি- 'জয় তারা' অকূলে ভাসাই তরী!
বিশাখের ভয় মনে, ডুবি মাগো ধনে প্রাণে,
এ ভবের অভিমানে-  ক্ষীন তরী হল ভারী!
মাগো, আমি যে দুখেরে ডরি।।


শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

দুরারাধ্যা ভবদারা

 



দুরারাধ্যা ভবদারা আরাধিতে মন যায়
চারিধারে মায়াকারা, মন তারে নাহি পায়!
পদ্ম-বিল্ব-জবাদলে সঁপি দিব পদতলে
গঙ্গাবারি নেত্রজলে স্নানীয় দি' রাঙাপায়-
তবুও না দিল সাড়া এ জ্বালা বোঝাব কায়?
বাঁধিব কি তন্ত্রবলে? কি ছলে কি কৌশলে?
বিশাখের এ কপালে দুখ না ঘুচিল হায়!
তাপিত তনয় ভনে, তারিণী তোমার মনে
যাহা ইচ্ছা তাহা কর, মনে তব যাহা চায়!
অন্তিমে রাখো কোলে- রহিল মায়ের দায়!












বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বরষা সমাপনে

 

বরষা সমাপনে ব্যকুল মেনকা রাণী

কহিলা নগাধিরাজে "ভবনে ভবানী- 

আনিতে যাও ত্বরা।

ভাদর রৌদ্র সম তাপিত অন্তর মম

না দেখি তনয়ারে বরষ হল সারা,

নিভু নিভু আঁখিতারা! 

বলিবে পাষাণ শিবে, ত্রিদিবস তরে দিবে

গিরিজা তোমারে সঁপি। 

কহিয়ো ‘জননী তার, না পারে সহিতে আর-

কন্যা-অদর্শন, অহনিশি নাম জপি- 

উমা উমা উমা বলি ত্যাজিবে বিরস ধরা!’

গিরি আনিতে যাও ত্বরা!” 

রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৫

বিফল সাধনে যায়

 


বিফল সাধনে যায় দিবস যামিনী হায়!
বিরলে কথামালা বিলোল সুর ঢালা
সঘনসম গায়- শ্রাবণ চাঁদের গায়।।

নওল তাল জাগে সোহাগে অনুরাগে
পাপিয়া-কূজিত বনে ঝড়ের দোলা লাগে,
তিমিরে ঘেরে রাতি, নয়নে নাহি ভাতি-
গরজে পবন ঘোর, বিজুরী চমকায়।।




মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

যাও গিরি গিরিজা আন ত্বরা

 


যাও গিরি গিরিজা আনো ত্বরা।
না দেখি সে বিধুমুখী অধোমুখে আছে ধরা!
কহিয়ো কৈলাশেশ্বরে, মাত্র তিনরাত্রি তরে,
রহিবে ধরণীপরে, দশমীতে হবে ফেরা!
সকলে কাতর হল, ঐ বুঝি উমা এলো,
আগমনী গায় সবে, আসিবে নয়নতারা!
ষড়াননে গজাননে কমলা ভারতী সনে
পুলকে বিশাখে ভনে- হেরিব ভবদারা!



শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫

মাছমুরাল (Osprey)


তব অপাঙ্গে কম্পিত জলচর,
স্রোতবিধৌত তটে-ফেরা কীটকূল!
পাখায় তোমার নভোমণ্ডলহারী শস্ত্র-
নিক্ষেপ তার- শতাংশে নির্ভুল!
নিযুত নীলিমা-পথ বাহি এলে বন্ধু,
কত হিমগিরি, মরু, বিপুল বনানী, সিন্ধু-
লঙ্ঘি আমার শীর্ণা তটিনী-ঘাটে,
পূর্বস্থলী-বাটে!
______
মাছমুরাল (Osprey)- গেল শীতে পূর্বস্থলীতে তোলা।



বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

সম্বর ক্ষণকাল

 

বঁধু হে, সঘন-অম্বর, সম্বর ক্ষণকাল- 

এখনি যেয়ো না ফিরে, ঝড়ো বায়ু বিকরাল। 

দুকূলে তিমির হেরি, খেয়াঘাটে নাই তরী; 

দশ দিক গ্রাস করি- শ্রাবণের মায়াজাল- 

নামে ঐ ডমরু ডক্কারে, বনে বনান্তরে-

পরবত, পাথারে, অশান্ত অন্তরে, ক্ষুব্ধ, ভয়াল! 

শবাসনা শেষক্ষণে

 

অযুত দুরিতভারে চলিতে না পারি আর! 

শতধারে দুখধারা বহে আঁখি অনিবার।। 

প্রতি পলে কত ছলে প্রপঞ্চে পরাভূত, 

নাহি দয়া মহামায়া, হেরিয়া পতিত সুত;

হয়েছে বিষয়ব্যাধি, কে করিবে প্রতিকার? 

অনঙ্গ অঙ্গার সম, জ্বলিছে অঙ্গে মম, 

অপাঙ্গে রক্ষ মম, শ্রীপদে দিয়াছি ভার! 

পরে মাগো শরাসনে, কাতরে বিশাখ ভনে, 

শবাসনা শেষক্ষণে কোলে কি নিবিনা আর? 



১৭ জুলাই, ২০২৫। 


শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫

গ্রাস

 

বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই।
অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি,
সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব
আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ভুবন সহ।

ছত্রাকের মতন গজিয়ে ওঠা আমার অস্তিত্বটুকু!
স্যাঁতসেঁতে কমনীয়তায় প্রখর রোদের ভয় মেখে
দ্ব্যর্থহীন জীবনাতিপাত ভিন্ন আর হবে না কিছুই;
অল্প অল্প করে বিশুষ্কতার ছোঁয়ার যাব ক্ষয়ে।
অলীক, অবান্তর, যত অবাস্তব নিঃসীম মতিভ্রমিত
কবিত্ব-প্রলাপ, অপলাপ- নেশায় গিলে রাত্রিদিন-
কত দূরে, অনিকেত- আমি ধীরে আঁধারে মেলাব,
লক্ষজনম-সঞ্চিত অজ্ঞাতসাধনধন নীরবে বয়ে।

বিলক্ষণ জানি- আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই।
শিখার নীচে তেলচিটে কালচে ইতিহাস হয়ে আছি
শেষাবধি: আলোর অন্তরালে আত্ম-মোক্ষণ ভেবে
স্বেচ্ছা নির্বাসনে বক্ষব্যাধি যুগব্যাপী সাধি মূর্খপ্রায়!
এখন করুণা হয় প্রতিভার মৃত্যুশয্যা দেখে অহরহ,
অপঘাতে মৃত গানের বাণী কাঁদে, আমি নিরূপায়।

অথবা একদিন বড় সাধ করে টুপ করে ডুবে যাব
অনন্তের জনস্রোতে। তার বেশী হবে না কিছুই।
আমি কখনো চাইনি যদিও আরো বেশী কিছু হোক-
কেবল অল্প কিছু কথার স্ফুরণ ছাড়া! কিছু কথা
যা না বলা রয়ে গেলে- মনে করি আমি বঞ্চিত হই,
মনে করি আমার মতন অর্বাচীন আরো আছে যারা
সবার একটি ধ্বজা ধরার দায় আমি কাঁধে বই -
না হয় স্বার্থবুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে- ইদানীং আলুনি লাগে!
এখন কেবল বিস্বাদ, অবসাদ, ঋষভ-ধৈবত-নিষাদ
সব, সব আমার গ্রাস করে নেয়।











বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

এটাই কষ্ট

 

এত কিছু ঘটার পর,

এত সব দেখার পর, 

এত রক্ত ঝরার পর

যারা আজও চোখে বিষ্ঠা লেপে আছে- 

তারাও মানুষ! - এটাই কষ্ট! 


অন্ধও আঁচ করে সামনে বিপদ, 

বধির অধীর হয়ে থাকে যদি কিছু অস্পষ্ট শোনে,

তবু যারা সর্বার্থে সবলেন্দ্রিয় তারা ভাগাড়ে

মরা পশুর মতন কেন শুয়ে আছে? - এটাই কষ্ট! 


তারা কেন বলে না কিছুই, 

তারা কেন লেখে না কিছুই,

দেখে না কোন কিছুই যখন সত্য ন্যাংটো নাচে চোখের সামনে:

তার শিশ্ন উদ্যত মারণাস্ত্রের মত, সপাট, সঙিন-

অস্তিত্বের সকল রন্ধ্রে সে রেতঃপাত করে,

বিষের ফোয়ারা ছোটে, রক্তে রঙিন-

এরই মাঝে যারা গান্ধারীর সঙ ধরে- তারাও মানুষ- 

এটাই কষ্ট! 


এত নষ্টত্ব গ্রাস করার পর, 

এত ধ্বজভঙ্গ ক্লীবত্ব পেঁচিয়ে ধরার পর, 

প্রতিদিন তিলে তিলে মরার পর

আজও যারা মিথ্যে বলে ললিতকলায় ভরে অষ্টপ্রহর

তারাও মানুষ- এরাও মানুষ- এও যে কষ্ট!

সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫

কালী কালবারিণী

 

সগুণা নির্গুণা তারা, মা, লীলাময়ী, হরদারা, 

রে, ব্রহ্মরূপা পরাৎপরা, কালী, কালবারিণী।। 


'ত্বয়ৈব ধার্যতে সর্বং ত্বয়ৈতৎ সৃজ্যতে জগৎ।’ 

জেনেছি মরতভূমে তুমি গো অক্ষয় সম্পদ!

তনয়ে তার গো শিবে, অশিবক্লেশহারিণী।।

রে, ব্রহ্মময়ী পরাৎপরা, কালী, কালবারিণী।। 


বিপন্নে বিতর দয়া, গো জগন্মাতা, মহামায়া, 

তাপিতে বিতর ছায়া, মাগো ভবার্ণবতারিণী।।

রে, ব্রহ্মময়ী পরাৎপরা, কালী, কালবারিণী।। 


অনন্ত অসুখ-ক্লিষ্ট, ওরে বিশাখ নিরয়ে দৃষ্ট, 

মা হয়ে কি অচেষ্ট! বলি অদৃষ্টরে দোষদুষ্ট!

কুপুত্রে জনম দিয়ে, গো ত্যাজিলে কি জননী? 

রে, ব্রহ্মময়ী পরাৎপরা, কালী, কালবারিণী।। 

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

তবুও থাকবে চুপ

 

তবে অধীর খেদিয়ে পাঠান আনলে 

বধির অবোধ নালায়েকদল! 

মুর্শিদ বাদে, মুরীদ আবাদে নাজেহাল,

বেসামাল নড়ে ধর্মের কল! 


আর কত বল পালিয়ে বেড়াবে

খাল-বিল-ঝিল ঝোপ-ঝাড় ছেড়ে 

এদিকে ওদিকে বেওকুফ? 

মসনদে যারে চড়িয়েছ মহাসুখে 

সে যদি করেছে শত খুন আরও মওকুফ

তবুও থাকবে চুপ?

শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫

বিকট বিপদ

 


তোমাদের চোখে ঘুম লেগে গেছে। 

নলখাগড়ার ওপাড়ে কিছু শেয়ালের চোখ জ্বলে। 

আমি স্পষ্ট দেখতে পারি। 

বাঘের ভয় ডিঙিয়ে বটে, অদ্য শেয়ালের ডেরায়- 

যত অবিমৃষ্যকারী-  দিব্যি শুয়ে আছ সদলবলে-

মেয়ে-মদ্দ, বলি হারি! তাও এ সংকটে? 


দ্যাখো, মশালে তেল ফুরালো বলে! 

নিত্য আত্ম-কোন্দলে ক্লান্ত দেহ নড়ে না আর। 

অবহেলে শ্বাপদ-সংকুলে- 

এদিকে সুর্য গেল ডুবে। চৌদিকে মস্ত আঁধার- 

পছিমে-পুবে হা করে গিলতে বসেছে নিকট ভবিষ্যৎ;

চরাচরে পরাৎপর বিকট বিপদ!


গাজন

 


তোরা ভাই নাচবি কত শিবের গাজন খড়্গ তুলে?
ঈশাণ কোনে মেঘ জমেছে, ঝড় জেগেছে পথের ধুলে!
সঙ সাজনের শস্ত্র পূজায় উর্দ্ধে তুলে মড়ার খুলি!
মদ-মাতালের মচ্ছবে ভাই ক্ষাত্র গেল জলাঞ্জলি!
যত দানার দলে দিচ্ছে হানা ভাঙছেরে দেখ ঘরের খুঁটি!
বোনের আঁচল অরক্ষিত, ধরছে মায়ের চুলের মুঠি!
তোরা ভাই বেহুঁশ বড়ই, লাথ খেয়ে জাত গেছিস ভুলে!
লাশের মতন ভাসবি কেবল এ কূল হতে অন্য কূলে! 

সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫

নহুষ

 



যদি নিত্য নৈরাশ্য বুনো লতার মতন পেঁচিয়ে ধরে,
পদসঞ্চারে পাই বাধা, অনেকটা পথ রইল বাকী-
তবু যদি প্লাবনের শংকা ঘেরে চারিপাশ, যদি
প্রাপ্তির ঝুলিতে দেখি এখনো শূন্যতার ভার একগাদা,
যদি বাতাসে ফেরে গোটাকয় দীরঘশ্বাস- অহরহ,
আমৃত্যু বুকের নিধি হয় তারা; বাঞ্ছিত সকল কিছুতে
যদি জোটে বঞ্চনা তাতে আপত্তি নেই, কিন্তু যদি
অস্তিত্বের শেষটুকুও হই হারা; দুর্বিসহ! এতটা যদি
কাঁটার পথ মাড়িয়ে এসে পাই সকলই পরের মন্বন্তরে-
গচ্ছিত রাখা, এ বার শুধু ভেঙে পড়া পাহাড়ধসের মত,
তবু যদি জানতাম অনন্ত তুমি এক চিলতে দেখা দিতে
মেঘের ভেতর থেকে অন্তত একটিমাত্র ক্ষণ তরে,
তবে নিয়ত আমি আগুনে আহুতি হব নিরুদ্বিগ্ন চিতে।
কিন্তু সকলই যদি ছেলেভোলানো গল্প হয়ে ওঠে,
অতি অপ্রাকৃত জুজুবুড়ির ভয় শুধু সত্যি হয় মনে,
আষাঢ়ের মেঘ জমে বসন্তের সমাগমে কেবলই,
এতটা যদি ভাব-দ্রবিণ কবিত্বকলা সব প্রলাপপ্রায় স্বনে
কাঁদে যদি আঁধারে ডুবে গিয়ে তারার মতন, বলো-
যদি এতটা বিপন্নতা পন্নগের ফনার মত দোলে,
এতটাই অরুন্তুদ সব অতিরিক্ত বেরসিক গানের ডালা
দ্ব্যর্থহীন ভিক্ষা চেয়েও জানে বটে 

পাবে না কিছুই,
তবু যদি হাওয়ায় হাওয়ায় দিতে কিছুমাত্র আভাস
না হয় নতুনতর ব্যথা ছলে, তবু হয়ত স্বস্তি পেতাম।

এখন সবেতেই ক্ষয়ে যাবার ভয়,
বয়ে চলার ক্লান্তি আর ভেঙে যাবার অযথা বিশ্বাস,
ত্রিদিবপতিত নহুষের মত জেঁকে ধরে যেন!


শুক্রবার, ২১ মার্চ, ২০২৫

কে আসে ঐ বামা মুণ্ডমালিনী

 


কে আসে ঐ বামা মুণ্ডমালিনী! 

অসিধরা, বর-অভয়-করা, 

দানবদলনী! 

লোল রসনা, বিগত-বসনা

রণপ্রমত্তা, বিকট দশনা;

ত্রিপুরারিজায়া, ভো মহামায়া, 

সুরারিমর্দিনী! 

ঘোর ভবার্ণবে বিশাখ পতিত

শমন ভয়ে সদা ব্যাকুল, শঙ্কিত। 

স্নেহকরে ধরে ক্রোড়তলে রাখো

দীনতারিণী।। 

সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

ফাগুন জেগেছে

 

প্রবল রবির কিরণে বন্ধু

বনানীর ছায়ে বিজনে 

বাঁশরীর ধ্বনি

দূর সমীরণে ক্ষণে ক্ষণে আসে শ্রবণে

ফাগুন জেগেছে গগনে বন্ধু

ফাগুন লেগেছে নয়নে। 


পলাতকা কিছু পরদেশী মেঘ

ধেয়ে আসে যেন সহসা

নবপল্লবে বাসা বাঁধে সুর

সুরহীনে পায় ভরসা। 

বিহগকূজিত বিটপীর শাখে, 

চিরবহমানা তটিনীর বাঁকে

কার মঞ্জীর বাজে চরণে

ফাগুন জেগেছে গগনে বন্ধু

ফাগুন লেগেছে নয়নে। 




বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

তবু পাখী উড়ে যায়


 


তবু পাখি উড়ে যায় 

সুনীল আকাশ, শ্যামল শস্যখেত

গোচারণভূমি আর ফুলেল বাতাস ফেলে

তবু সে চলে যায় 

মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫

কালী করালি

 


কালী করালী নরমুণ্ডমালী

মহাকাল-মহারানী শিশুচন্দ্রভালী।। 

দিতিসুতত্রাসিনী দীনদুখবারিণী

সুরনরপাবনী জীবমুক্তিদায়িনী

বিশাখে বিতর কৃপা ত্রিজগতপালী।। 

আমায় তুমি করছ আড়াল

  আমায় তুমি করছ আড়াল আঁচল ছায়ে তোমার কোলে, আমি বড়ই অধীর বাইরে যেতে বড়ই  ব্যাকুল, দুষ্ট ছেলে! বিশ্বভুবন দিচ্ছে সাড়া- 'ও তুই চোখ খুলে...