মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২

পাঠোদ্ধার

 


আরও একটা দিন অহেতুক বেঁচে থাকতে হল।

এতে কোন হর্ষ বিষাদ নেইপ্রেম অপ্রেম নেই।

শুধু জমে যাওয়া বরফ খণ্ডের মত নিশ্চেষ্ট নিশ্চলতা,

নিরন্তর নিরর্থকতা পুঁজি করে আছি-

বিষোল্লাসের কবিত্বে


তারারা ঘুমাতে যাবে আরেকটি প্রহর পর।

রাত্রি বিবরে গ্রাসিত শহর নেতিয়ে আছে যেন মরা সাপ।

এখন কথারা মগজে হাঁটেঅশরীরী প্রেতের বহর-

তারাচোখের আলো নিভে এলে জ্বলে ওঠে কল্পনার

জোনাকি উদর ফেঁড়ে চিকচিক করে। ত্রিলোক-ত্রয়তাপ-

আমায় করে ভর। 


আমার কয়েক অর্বুদ অলিখিত পংক্তির মত

এরও আজও হয়নি পাঠোদ্ধার-

কেন বেঁচে আছি







আতশবাজি

 

আতশবাজির মস্ত ধোঁয়ায় ত্রস্ত আকাশতল
নীড়ের মাঝে বুক কাঁপে, ঐ পাখির চোখে জল,
শুধায় মাকে, 'কারা এরা?' ছোট্টো পাখির ছানা
'বিশ্বমায়ের পূজায় মাতাল মত্ত কতক দানা!'

শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২২

বিশাখে না পেল সাড়া

 

ষড়জে সরোজমালা, ঋষভে রুধির ধারা,

গঙ্গা তুমি গান্ধারে, মধ্যমে মাতঙ্গী তারা। 

পঞ্চমে পদযুগ, মাগো ধৈবতে ধারণ করি,

নিষাদে নিঃসীম রুপা, ধরে ধ্যান হরহরি। 

ওমা মন্দ্র-মধ্য-তারে রাজ নিত্য তুমি ভবদারা,

সুরে তালে লয়ে তবু, বিশাখে না পেল সাড়া! 

বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২

উমা আমার থাক

 

আমার যেন মনে হল হঠাৎ যেন দ্বীপান্তরে 

অমানিশার আড়াল ফুঁড়ে, কতক তারা আকাশ জুড়ে

খিলখিলিয়ে উঠল হেসে, ঘুম ছুটিয়ে সর্বনেশে

নেশায় আমার পাগল করে, করাল ঘূর্ণিপাক! 


যেন আগল ভাঙা বান ডেকেছে, 

মত্ত স্রোতে ত্রস্ত বাতাস,

বাতায়নের ও ধার হতে সুর তুলেছে

দারুণ হতাশ- সারেঙ্গী কার, 

ঠিক যেন তার অঙ্গে অঙ্গে লক্ষ-হৃদয় ব্যথার গাঁথা,

আমার হঠাৎ মনে হল কাঁপন ধরে চোখের পাতা

যেন ইঙ্গিত পাই চরণধ্বনির,

পৃষ্ঠে বাঁধা অধীর তুণীর পিনাকে দেয় ডাক,

বিষাণ বাজে বিষের নেশায়, 

বিসর্জনের ঢাক-


পাষাণ ঘরে; মন-মেনকা উঠল কেঁদে

'উমা আমার থাক'। 

সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২

গরলস্নান

যে প্রশ্ন করতে শিখে গেছে

সে জানে- উত্তর চাইতে নেই,

বরং স্তব্ধ হবার দিন ঘনায় ঘোর

একটু একটু করে।

বহিষ্কারের পথে রাত্রি করে ভীড়,

ত্যক্ত ঘর দোর

মর্মন্তুদ বলে জাপটে ধরে

পাঁজরার হাড়। বিধাতা বধির! 


জিজ্ঞাসার বধ্যভূমি জাগে-

আকাশে হাহাকার-

মাতম লাগে ঝড়ে, দিগ্বিদিক-

শূন্য প্রাণ ছোটে অকুস্থল ছেড়ে,

জানে না ঠিক-বেঠিক,

আচার অনাচার

শুধু জানে বাঁচতে হবে। 


জিজ্ঞাস্য কিছু নেই,

দেখো ঘাটে ভিড়েছে সাম্পান! 

ওপারে বোধিদ্রুম,

হয়ত বা, এপারে গরলস্নান। 





শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২

বাম-ডান

 

আচার বিচার জানিনে ছাই কদাচারের পক্ষে নই!
তাই না দেখে ভাবছে বামে বুঝি ডানের পক্ষে কই!

নিয়ম-রীতি, ভড়ং নীতি উভয় দিকে বেশ ভালো!
ডান বলেছে বাম যে আঁধার, বাম বলেছে ডান কালো!

মতামতের হতাহতে গুনতে গিয়ে সীমা নাই!
দিবারাতি হাতাহাতি, এর গায়ে ও ছুঁড়ছে ছাই!
_________________________________

Nihilism এর নাম প্রগতি নয়! Iconoclastic হয়ে গেলেই মুক্তি তাও নয়!

বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০২২

মনে পরে আমি হেরেছি


তের নদীপাড়ে তেরটি কল্প হেঁটেছি,

বিকল্প ছিল অজানা। 

পায়রার পায়ে বেঁধে চিরকুট দেখেছি,

সে আর মেলেনি ডানা। 


ঠিকানা কোথায় তাও যে জানতে বাকী,

আকাশের গায় ভাষা বুনে গেছি বিস্তর-

কোথায় পাঠাব পাখী? 


বনানীর ধারে শ্যামল ক্ষেত্রে

শিবা-সেনানীর তারকা-নেত্রে

রাত্রি বিবশ, নিকষ তমসা, মাঝে তার 

যেন জেনেছি- 


শুধু আমি আছি, আমি আছি। 


অখিল অচল হয়েছে, অক্ষি হয়েছে প্রস্তর,

অক্ষত আছি, স্বাক্ষী কে দেবে, 

বিবাদে যখন অন্তর? 


ঘুনে ধরা কথা গুনে গুনে লিখে,

কবিতার দায় সেরেছি।

বিজয়মাল্য গলায় নেবার ক্ষণ,

মনে পরে আমি হেরেছি। 

মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২

হতে কি না বলো

 


তোমার সীমান্তে তুমি যদি জানতে 

এলোমেলো ঝড়,

কারো বাসা ভেঙে যায়,

কারো অন্তর,

তবে কি সে পোড়া দেশেধুলোমাটি ভালবেসে,

হাজার প্রহর,

এভাবেই রয়ে যেতেএতটা পাথর-

হতে কি না বলো

হত নাকি ব্যথা বুকে আঁখি টলোমলো


ঘুমহারা রাত্রির গায়ে চাঁদ হাসে,

জ্যোছনার আলো ঝরে উঠোনের ঘাসে।

ঝিকিমিকি জোনাকির ছুটোছুটি অস্থির-

তুমি যদি জানতেতোমার সীমান্তে

তারা বাঁধে ঘর

কত রাগ-রাগিনীরকত মধু স্বর,

তবে কি সে দূর দেশেউদাসী মেঘের বেশে

এত মন্থর

এভাবেই বয়ে যেতেহতে না মুখর?

হতে কি না বলো?

হত কি না ব্যথা বুকে আঁখি টলোমলো?

সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০২২

এই খেদে বিশাখে রটে

 

মহামায়ার এমনি মায়া, কি দারুণ ভেল্কি বটে,

বুঝিতে কে পারে ওমা ঘটে ঘটে কি বা ঘটে! 

পেয়ে রে গরল গন্ধ, তাই ত্যাজে রে মকরন্দ, 

নিত্য ধনে করে সন্দ, কেঁদে মরে কি সংকটে! 

ওমা তুমি যে পরমানন্দ, বুঝে তবু মনে দ্বন্দ্ব

এমনতর কপাল মন্দ, এই খেদে বিশাখে রটে! 

সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২

ঐ আসিল মা হেমবরণী

 

ঐ আসিল মা হেমবরণী হেরম্বে লয়ে কোলে 

জগজনে হেরি জগদম্বে জগদুখ যত ভোলে। 

পেয়ে ভবরাণী ভূধর-ভবন

গিরিরাণী আজি সুখ-নিমগন, 

উঠিল মাতিয়া গগন পবন সুধারাশি কলরোলে। 

ঐ আসিল মা হেমবরণী হেরম্বে লয়ে কোলে।।


৩-১০-২২

অষ্টমী 









রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২

অন্যে যেন নাহি জানে

 

দরিদ্রে পাইলে রতন সেকি অযতনে রাখে?

  • কমলাকান্ত ভট্টচার্য্য। 


দরিদ্রে পাইল রতন, রাখি কি বা অযতনে?

রেখেছি হৃদয়ে শ্যামা, দেখাব কি জনে জনে? 


দীনের সম্বল ধন, হৃদিপদ্মে ও চরণ-

স্মরি নিতি অনুক্ষণ, নিরজনে মনে মনে। 


দুটি কথা দুটি সুরে, বেঁধেছি তায় অন্তঃপুরে,

খিল দিয়ে নবদ্বারে, গাই তারে ক্ষণে ক্ষণে। 


বিরলে বিশাখ ভাষে, মন ভুলো না কথার বশে,

মায়ে পোয়ে এমনি থাকো, অন্যে যেন নাহি জানে। 

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

ভবিষ্য ও হবিষ্য

 

বুঝতে নারি, ঘোর কলি কাল

কোনটে পুজো, কোনটে থিম,

ভবিষ্য কি জানিনে ছাই-

হবিষ্যে খাই সেদ্ধ ডিম! 


ঋণ করে চাই ঘি এর ধারা, 

ফাও পেলে হই পাগলপারা,

রঙ-তামাশা লাগামছাড়া-

কে খেতে চায় হিম বা শিম? 


চটকে দিয়ে পিণ্ডি কত,

মাইক বাজে গো কয়েক শত,

অমায়িকের দলে যত-

বোলচে 'মশাই ততঃ কিম?’ 


বুকের কথা নাই ক’ মুখে 

সাহস কোথা দাঁড়াই ঠুকে,

দিনে কতক বিড়ি ফুঁকে-

ফর্শা হবার মাখছি ক্রিম! 



গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...