বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০২০

স্থবিরতা

কেমন এক স্থবিরতা পেয়ে বসেছে।

জানালার পাশে ভরা সন্ধ্যায়, আঁধারে যেমন

নেতিয়ে পড়েছে এক জোড়া জবা ফুল,

আমিও… আমাকে তেমন…

কি যেন অরতি-অরিষ্ট আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে

বয়ে যায়, কি যেন বিরহ-সমাকুল-

গানের সারেঙ্গীর তার ছিঁড়ে-

বড় অবসন্ন, অরুন্তুদ-

বড় বিচিত্র, অদ্ভুত-

এক স্তব্ধতা আমাকে ময়ালের মত

মুখে পুরে নিল!

 

চোখের পলক ফেলতেও পাহাড়-কাটা শ্রম লাগে,

অন্তরের অর্গল খুলি- সে শক্তিটুকু নেই,

বিষাদের বিষিত সব;

এমন এক অনভিব্যক্ত, অলঙ্ঘ্য বিষ্টম্ভ বিমর্ষতা-

কি এক বিমিশ্র অনুভব

আমাকে পথে পথে হেঁচরে নিয়ে যায়;

নিরুদ্দিষ্ট যুগযুগান্ত, নিরুদ্বেগে অচঞ্চল,

অথচ ভেতরে আমি ভীত ভুজঙ্গের মত-

উদগ্রীব, উদগ্র, সচল।

ত্রাসিত, হৃত-বল-

আমি আত্মসঞ্জাত কোন অরিঘ্নে আস্থাহীন হয়ে

আমাকে নিয়ে একলা পড়ে রই!

 

আমাকে এমন এক ক্রুর-

অতিক্রুর আড়ষ্টতা আড়াআড়ি ছেদ করে গেছে!

 

 

 


মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০২০

কি জ্বালায় জ্বলি গো তারা

কি জ্বালায় জ্বলি গো তারা, ভবদারা কি বা রঙ্গে!

এ অঙ্গে অঙ্গার করি অনঙ্গ-তরঙ্গ-ভঙ্গে-

ক্ষান্তি দিয়ে শ্রান্তি পাব?

 

মায়ার কুরঙ্গ-পিছে, ভ্রমিয়ে ক্লান্ত মিছে,

কপট কুসঙ্গ-সুখ-আসঙ্গ টানিল নীচে।

ঠেকেছি গো রসাতলে, কৃতান্ত করতলে,

এভাবে কি চলে যাব?

 

কৃপাময়ী কৃপাণ ধরি, কিঙ্করে করুণা করি,

অভয়দায়িনী হও ভীতজনে ক্ষেমকরী।

আবদ্ধ সংসারপঙ্কে, পঙ্ককশোভিত অঙ্কে

কবে গো লুটিয়ে রব?

 

 

 

 


রবিবার, ১৯ জুলাই, ২০২০

আষাঢ়-কেষ্ট-ক্লেশ

আমায় দেখে তোমার বাড়ির হাঁসগুলো সব হাসে

প্যাঁকপ্যাঁকিয়ে পুকুরধারে, ভেঁচি কাটে, পুচ্ছ নাড়ে,

তেড়ে গেলেই অমনি তারা পুকুর জলে ভাসে!

তোমার বাড়ির হাঁসগুলো সব হাসে।

 

তোমার বাড়ির সামনে আসি, রাস্তা জুড়ে কাদা,

আষাঢ় দিনে, ষাঁড়ের মতন একটি মাত্র দাদা,

দেখতে পেলাম আছেন ঘরে, তাকিয়ে আছেন কেমন করে,

জানেন আমি কেষ্ট ঠাকুর, বোনটি যে তার রাধা!

তোমার একটি মাত্র দাদা!

 

চোখের দেখা আর কি দেখি, ফিরে যাবার ক্ষণে

স্যাঁতলা ইটে পা পড়েছে, কি করে কে জানে!

এক আছাড়েই বিধির বিচার টের পেয়েছি বেশ,

আষাড় মাসের কেষ্ট হওয়া – এ যে ভীষণ ক্লেশ!

 

 

 

 

 

 


শনিবার, ১৮ জুলাই, ২০২০

বিশাখ ভনে

ভেবেছি মা সুর সাধিব, তোমার বীণার তার বাঁধিব,

শ্বেতবসন মলিন করে, তোমার কোলে রইব পড়ে!

আমি কি গো সতীন-ছেলে, এমনি করে রাখলে ফেলে,

কত লোকের কথার ছলে, বদ্ধ করে মায়ার ডোরে!

 

কে বা আমায় দিচ্ছে মালা, সেই বুঝি দেয় কাঁটার জ্বালা,

এত বাকচাতুরির কর্মশালা, বকবকানি জগতজুড়ে!

আমার কানে মীড় লেগেছে, সুর দরিয়ার পাড় ভেঙেছে,

স্রোতের আশায় চক্ষু মেলে বসেই আছি বার-দুয়ারে!

 

একি রঙ্গ ভদ্রকালী, ভরাডুবি আমার খালি,

কি শেখাতে কি শেখালি, কি বলে গাল দিই বা তোরে!

আর হল না এ জনমে, এই ব্যথাটি রইবে মনে,

মনের দুখে বিশাখ ভনে, এই দুখ আর বোঝাই কারে!

 

 


বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০

তোমার দায়

সাত জনমে সাত ভূবনে সাত সাগরের পারে
জেনো তোমার দায় রয়েছে ফিরতে বারেবারে!

উতোল স্রোতের জলোচ্ছাসে, ভাসিয়ে নেবার সর্বনাশে,
ভাসতে হবে আমার পাশে, ভয়াল পারাবারে!
জেনো তোমার দায় রয়েছে ফিরতে বারেবারে!

আমার আকাশ অন্ধ হলে, আঁখি আমার ডুবলে জলে,
আমায় রেখে আঁচল তলে, আমারই সংসারে-
জেনো তোমার দায় রয়েছে ফিরতে বারেবারে!

আমার যত মিথ্যে-সুখে, আমার সকল সত্যি-দুখে,
জাপটে ধরে আমায় বুকে, সৃষ্টি ও সংহারে-
জেনো তোমার দায় রয়েছে ফিরতে বারেবারে!

জাগরনী

শত লোকের কত কথায় দোর দিয়েছি কানে,
আমার সকল গানের কলি, সকল ছিন্ন তানে—
কেমন ব্যাথার সুর কেটে যায়, তাল কাটে মাঝখানে,
তারা কি আর জানে!

রাতবিরেতে কে ডাকে ‘আয়,
এমন ঘোরে আর কে ঘুমায়,
দিন ফুরালো, রাত ফুরাবে, জোয়ার-ভাটার টানে!
তরী যে তুই বাইবি একা, কে যাবে তোর সনে’!

জেগে আছি চক্ষু মেলে,
(যদি) ফেললে পলক যায় সে চলে,
যদি সে আর না ডাকে ভাই, ভুলে যাওয়ার ভানে!
সে তো এম্নি ধারার চিরকালই, তেম্নি জগত জানে!

মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই, ২০২০

বজ্রযানীর বেহাল দশা

গুরুদেব,

 

লোকমুখে শুনছি প্রভু, মোরা নাকি কর্তাভজা,

অণ্ডবাকের গুণ্ডারা সব, রাস্তাঘাটে নিচ্ছে মজা-

টিকি ধরে মারছে গো টান,

তোমার আর রইল না মান,

কোনক্রমে বাঁচিয়ে পরাণ, এলেম ছুটে এথায় সোজা!

 

ঘরে বাইরে চোখ রাঙানি, কবে তারা দেয় ঠ্যাঙানি,

তারা নাকি বলছে শুনি, ছাল ছাড়াবে বাইরে এলে!

রক্ষা কর তোমার দাসে, মরেই যাব ভয়-তরাসে,

তারা যদি সত্যি আসে, প্যাঁদায় যদি একলা পেলে!

 

রই গো তোমার চরণছায়ে, দেখি না গো ডাইনে বাঁয়ে,

কোন রকম খাচ্ছি ভাল, আলু-পটল-উচ্ছে ভাজা!

তাতেও তারা রুষ্ট এত,

লোকের কাছে নিন্দা কত,

আমি নাকি ধর্মদ্রোহী- ত্যাজেছি তাই চরস-গাঁজা!

 

 

অনেক ইতিহাসের দলিল ঘেঁটে পদকর্তা বজ্রযানী বৈষ্ণব বিরচিত এই পদ উদ্ধার করতে পারলাম। আপনারা যারা জানেন শ্রী অণ্ডবাক মণ্ডলাচার্য্যকে ত্যাগ করে বজ্রযানী বৈষ্ণব রসরাজ শ্রীদেবকৃপাশিসানন্দ গোস্বামীপাদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করার পর এ নিয়ে তেমন কোন উচ্চবাচ্য হয়নি, উভয়দিক থেকে তেমন কোন প্রতিক্রিয়ার বিবরণ পাওয়া যায়নি- এটা ভুল, আমরা এতদিন এইটুকু জানতাম। কিন্তু আবিষ্কৃত এই পদ থেকে এটা স্পষ্ট যে- উভয় গোষ্টীতে একটা বৈরীতা এসে গিয়েছিল। এই নব-আবিষ্কৃত পদ তার দৃষ্টান্ত।

 

 

 


বীণাবাদিনীর মুরোদ

বিদেশে থাক মা, বীণাবাদিনী,
আর ঘরে আনব না তোরে!
যারই তরে তোর বুকে বাঁধে দয়া
তারে কমলা কাঁদিয়ে মারে!

যার
মসীমুখে তুই কাব্যের স্রোত,
কন্ঠে সুরের লহরী,
পেঁচকে আরূঢ়া তারে দেয় গাল,
ছাই মেলে কানাকড়ি!

বীণা পুস্তক হাতে ধরে থাক,
আমার যা হবার তা তো হবে!
তোর আর তাতে কি বা এসে যায়,
কি বা এসে গেল কবে!

এখন ভাবছি লক্ষ্মীর ঘটে
মাথা ঠুকে চাই ক্ষমা!
বাঁচতে হবে তো দুটো খেয়েপড়ে
টাকশালে কিছু জমা—

তাই করতেই হয়,
নচেৎ অকূলে মরি!
তুই দিবি না তো একটা আধুলি,
মুরোদ আছে কি থুড়ি?

শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০

পলায়ন

লুকাতে লুকাতে মুষিকের গর্তে 
আসার পর মনে হল,
এ ত’ কেউটের ঘর! 
আমি বেরিয়েওবা যাব কোথায়?

আমার কত যে দিনরাত্রি গেল,
বুকের পাশে, বুকের ভেতর,
কত উছল কোলাহল, 
গীতবাদ্য হাসির হিল্লোল 
আমি তুলে দিয়ে গঙ্গাযাত্রায়,
ভেবেছিলাম এমনি থাকি,
এমনি প্রতীক্ষায়;
আমার সর্বস্ব অর্পন হলে সেদিন
নিশ্চয় কথামতো সে আসবে!

কেউ আসেনি,
কেউ এলো না কোনদিন! 

তারপর নিজের ছায়াটিকেও ছেড়ে যাব-
এই পণ ধরে আমি নিজের থেকে নিজে সরে দাঁড়াই,
এতটুকু আলোয় পাছে ছায়া পরে—
এই ভেবে আমি পালিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি,
আমি ভেবেছি নিজেকে স্তিমিত করার পর,
এক জ্যোতির ছটায় আমি মিলিয়ে যাব;
যে আলো অপার্থিব!

অথচ পৃথিবীর বাইরে কিছু নেই,
আমি একাই চলে গেছি অন্ধকারে!

করোনা-পীড়ন

নভেল করোনা, কর হে করুণা

কোরো না কোরো না এত নিপীড়ন,

আর যে সইতে নারি!

কত দিন আর কাটিব না চুল,

কতদিন রাখি দাড়ি?

 


বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০

আশা রইল খালি

সংসারসরিৎস্রোত করাল কূলঙ্কষ,

কল্মষকর্দমক্লেশ অশেষ ধরেছে পায় কালী,

নলিনীনীলপদে ধরি এ ত্রাসিত হৃদে-

দেব গো সাঁতার তারা, আশায় যে গুড়েবালি!

 

মহেশরোষে সে দেখায়ে অষ্টরম্ভা,

অবধ্য-অনঙ্গ বেটা, শোন তবে জগদম্বা,

বিঁধে অহোরাত্র মোরে!

বলি ‘আমি তারাতনয়, পশুপতি পিতা হয়,

আমায় মারিলে বেটা, না ছাড়িবে তোরে’!

 

ভেবেছি এমন দুর্দৈবঘোরে,

ছুটে এসে নেবে ক্রোড়ে,

তবে জননীর ধর্মখানা রক্ষা হয় ভবে!

কে জানতো মহেশ্বরী, তোর ধর্মজ্ঞান আছে থুড়ি,

শ্মশানে-মশানে ঘুরি সব লুপ্ত হল কবে!

 

আছি গো শরশয্যায়, ষড়দস্যু দড় কব্জায়,

সংসারে সঙ-সজ্জায়, আমায় ভালোই ডুবালি!

নীরদনীলপদ করি গো মা সম্পদ,

ধরব পারের তরী, আশা রইল খালি!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


বুধবার, ৮ জুলাই, ২০২০

অন্নদামণ্ডলকাব্য

‘অন্নদামণ্ডলকাব্য’

পদকর্তা বজ্রযানী বৈষ্ণব প্রণীত

 

মণ্ডলাচরণ

 

জয় রসরাজেশ্বর রসার্ণব যিনি,

অণ্ডবাক-অরি প্রভো, অকূলে তরণী।।

বন্দি শ্রীঠ্যাঙযুগল, ছন্দ পদ দিয়া,

না জানি বন্দনা দেব, পাপে মত্ত হিয়া!

কৃপানেত্রে হের নাথ, বিদ্যা দেহ মোরে,

যাহে রচি এ কাব্যনিধি গঞ্জিকার ঘোরে।

দাস তব বজ্রযানী, আছি জনমে জনমে,

ভ্রমিয়া ভূমণ্ডল রসপতি, সংসার ভ্রমে;

রহে যেন অক্ষয়, নাথ তব পদে মতি,

তুমি হও মাহুত মম, আমি তব হাতি!

 

 

প্রথম সর্গ- মহারাজ কন্দভোজের রাজসভা- সভাকবি বজ্রোজ্জ্বল- কাব্যস্ফূরণ।

 

মহারাজ কন্দভোজ, কন্দ সেবে হর-রোজ

গতরে কান্তি ছটা, হইয়াছে কিবা!

তিলোত্তমা মুর্ছা যায়, রম্ভা অষ্টারম্ভা পায়,

অদ্য চল যাই দেখি তার রাজসভা!

 

আছেন অমাত্য কত, কাঠপুত্তলির মত,

দিবারাতি তোষামোদে, আর কর্ম নাই!

আছেন দু’এক ভাঁড়, সে কথা কি বলি আর,

আর কত বল ভবে পরনিন্দা গাই!

 

প্রতাপে দুর্বল রাজা, তাহে সুরক্ষিত প্রজা,

বিনা করে রাজকোষ কানা-কড়ি-ছাড়া।

এ কথা বলিবে যে, অকালে মরিবে সে

তৎক্ষণে শিরোপরে নামে মুক্ত খাঁড়া!

 

মদিরা-মোহিনী লয়ে, রাজকার্য্য যায় বয়ে,

তবে গুণবান রাজা কাব্য-গীত-নিষ্ঠ!

এ আর বিচিত্র কি, গুণীজনে কহ দেখি,

শ্রীরসরাজ পদ যিনি করেছেন ইষ্ট!

সভামাঝে সভাকবি, যেন রাহুর বিবরে রবি,

কুমার বজ্রোজ্জ্বল আছে সভা আলো করি!

মহারাজ প্রিয়পাত্র, মেদ জমে বাড়ে গাত্র,

বৈষ্ণবকলঙ্ক কূলে, ঘোর মাংসাহারী!

 

লেখনিতে কি বা জাদু, প্রতি পদে ঝরে মধু,

কন্দবন্দনায় ভরা কত, নানা ছন্দ রঙ্গ!

গুণীজনে কহে শুনি, বজ্রোজ্জ্বল ছন্দমুনি,

কর্মফলে হয়েছেন- গোময়পরি ভৃঙ্গ!

 

কাব্যস্ফূরণ

 

রাজডরে লেখে কবি রসরাজ স্তুতি,

অন্তর অণ্ডবাকে, পরাভক্তি অণ্ডের প্রতি।

এই প্রকাণ্ড ব্রহ্মাণ্ডে কেবলি ভজিয়া অণ্ডে

গ্রন্থ রচে শতখণ্ডে অণ্ডকৃপাবলে,

বেষ্টিত পন্নগদলে, তথাপি অভয়ে চলে,

অন্তরাণ্ডপুরিত যার, তার কে করিবে ক্ষতি?

হেন সাধ্য আছে কার, কার হয় নিজানিষ্টে মতি-

কহে বজ্রোজ্জ্বলে কটুবাক্য জানিয়া স্বরূপ?

 

সান্ধ্য কুক্কুটের স্যুপ- পিয়ে কবিবর,

চলেন পদব্রজে মিলিতে রাজায়,

পশ্চাতে কে ডাকে ঐ, ‘বজ্রোজ্জ্বল-

কৃপা করে দু’দম দেহ, আমার গাঁজায়!’

 

সংবর করিতে নারে আপনা অন্তর,

ছূটিয়া গেলেন কবি স্মরে ভোলানাথে,

‘জয় শ্রীঅণ্ড’ বলে, তুলিয়া ধূম্রনিধি,

কলিনিকন্দন-কল্কি সেবা নেন হাতে!

 

 

-          আগ্রহী পাঠক, এ কাব্য ক্রমশ পাঠ্য

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০২০

একটুকু ছোঁয়া লাগে (প্যারডি)

একটুকু ছোঁয়া লাগে, একটুকু চুলকানি,
তাই নিয়ে ক্ষণে ক্ষণে মান নিয়ে টানাটানি!
বিছুটি পাতায় মেশা, ছল করে গায়ে ঘেঁষা,
তারপরে এত জ্বালা, এই কি গো আগে জানি?
যেটুকু কাছেতে আসে ক্ষণিকের ফাঁকে ফাঁকে
কুটিল মনের কোনে কূটশর লুকিয়ে রাখে!
যটুকু যাই-রে দূরে, লাফ দিয়ে ওঠে ঘাড়ে,
তা-ই বয়ে যায় বেলা, পাঁচকানে জানাজানি!

রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০

তফাৎ

যারা পণ করে আছে, তারা—
কোনদিন কিছু দেখবে না,
হরধনু-ভাঙা-টংকার হলে—
কোনদিন কানে শুনবে না,
টুটি ধরে যদি টেনে নেয় জিভ
দু’চার দানব মিলে—
এরা কোনদিন কিছু বলবে না—
আমি তাদের বন্ধু মোটেও নই,
তেমন বন্ধু হলে—
আমি দু’হাত তফাতে রই!

বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০২০

নেভার পরে

কতক কবিতা কতক ছন্দ

কতক গানের কতক সুর,

কতক ফুলের কতক গন্ধ

কতক কথার রাত-দুপুর-

 

সব ডিঙিয়ে তোমার মাঝে

মিটব বলে হচ্ছি ছাই,

এ আগুনে জ্বলব আরো;

যদি নেভার পরে -

তোমায় পাই!  

 

 


কোথা প্রাণপতি রসরাজ - রম্য রচনা (বিশাখদত্ত) - Kotha Pranapati Rasaraaj







আজ থেকে ৪২০ বছর আগের কথা। শ্রীঅণ্ডবাকমার্গপন্থী
পদকর্তা বজ্রযানী বৈষ্ণব ঋষি অণ্ডবাক প্রবর্তিত মার্গকে বৈষ্ণবধর্ম বিরুদ্ধ ও নিরয়-দ্বার-প্রশস্তকারী
আখ্যা দিয়ে অণ্ডবাকমার্গ পরিত্যাগ করে বৈষ্ণবশ্রেষ্ঠ গোস্বামীপাদ রসরাজ শ্রীদেবারিকৃপাশিসানন্দ
প্রভুর চরণে নিজেকে নিবেদন করেন। কথিত আছে এই ভক্তিসুধাসঞ্চারিনী রসরাজ-প্রার্থনা পদকর্তা
বজ্রযানী বৈষ্ণব, শ্রীরসরাজ চরণে উপনীত হওয়া-মাত্রই বিগলিত কন্ঠে গেয়ে ওঠেন। সেই ঐতিহাসিক
কীর্তনটি পরিবেশিত হল।

কোথা প্রাণপতি রসরাজ, ভকতে দর্শাও আজ-
মদনমুর্চ্ছিত সাজ, দেখে তবে অক্কা পাই!
ভেবেছি মারিব ছক্কা, বারেবারে জোটে ফক্কা,
যমে দেয় টরেটক্কা, ভয়েতে ভিরমি খাই!

মাংসাহারী কারণে, পোছে না বৈষ্ণবজনে,
নিন্দা করে জনে জনে, গাঁয়ে চলা হল ভার!
ভজিয়া শ্রীঅণ্ডবাকে, পড়েছি কি দুর্বিপাকে,
কু-শ্রাস্ত্রবচন ধরি, হল ধর্মাধর্মে ছারখার!

রসুন-পেঁয়াজ ছাড়ি, শ্রীচরণে রব পরি,
তার মোরে দয়া করি, না তারিলে কোথা যাই?
দিবানিশি আছি ঘরে, কলত্র কলহ করে,
এতে যদি যাই মরে বৈকুণ্ঠে পাব কি ঠাঁই?

- পদকর্তা বজ্রযানী বৈষ্ণব





গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...