‘অন্নদামণ্ডলকাব্য’
পদকর্তা
বজ্রযানী বৈষ্ণব প্রণীত
মণ্ডলাচরণ
জয়
রসরাজেশ্বর রসার্ণব যিনি,
অণ্ডবাক-অরি
প্রভো, অকূলে তরণী।।
বন্দি
শ্রীঠ্যাঙযুগল, ছন্দ পদ দিয়া,
না
জানি বন্দনা দেব, পাপে মত্ত হিয়া!
কৃপানেত্রে
হের নাথ, বিদ্যা দেহ মোরে,
যাহে
রচি এ কাব্যনিধি গঞ্জিকার ঘোরে।
দাস
তব বজ্রযানী, আছি জনমে জনমে,
ভ্রমিয়া
ভূমণ্ডল রসপতি, সংসার ভ্রমে;
রহে
যেন অক্ষয়, নাথ তব পদে মতি,
তুমি
হও মাহুত মম, আমি তব হাতি!
প্রথম
সর্গ- মহারাজ কন্দভোজের রাজসভা- সভাকবি বজ্রোজ্জ্বল- কাব্যস্ফূরণ।
মহারাজ
কন্দভোজ, কন্দ সেবে হর-রোজ
গতরে
কান্তি ছটা, হইয়াছে কিবা!
তিলোত্তমা
মুর্ছা যায়, রম্ভা অষ্টারম্ভা পায়,
অদ্য
চল যাই দেখি তার রাজসভা!
আছেন
অমাত্য কত, কাঠপুত্তলির মত,
দিবারাতি
তোষামোদে, আর কর্ম নাই!
আছেন
দু’এক ভাঁড়, সে কথা কি বলি আর,
আর
কত বল ভবে পরনিন্দা গাই!
প্রতাপে
দুর্বল রাজা, তাহে সুরক্ষিত প্রজা,
বিনা
করে রাজকোষ কানা-কড়ি-ছাড়া।
এ
কথা বলিবে যে, অকালে মরিবে সে
তৎক্ষণে
শিরোপরে নামে মুক্ত খাঁড়া!
মদিরা-মোহিনী
লয়ে, রাজকার্য্য যায় বয়ে,
তবে
গুণবান রাজা কাব্য-গীত-নিষ্ঠ!
এ
আর বিচিত্র কি, গুণীজনে কহ দেখি,
শ্রীরসরাজ
পদ যিনি করেছেন ইষ্ট!
সভামাঝে
সভাকবি, যেন রাহুর বিবরে রবি,
কুমার
বজ্রোজ্জ্বল আছে সভা আলো করি!
মহারাজ
প্রিয়পাত্র, মেদ জমে বাড়ে গাত্র,
বৈষ্ণবকলঙ্ক
কূলে, ঘোর মাংসাহারী!
লেখনিতে
কি বা জাদু, প্রতি পদে ঝরে মধু,
কন্দবন্দনায়
ভরা কত, নানা ছন্দ রঙ্গ!
গুণীজনে
কহে শুনি, বজ্রোজ্জ্বল ছন্দমুনি,
কর্মফলে
হয়েছেন- গোময়পরি ভৃঙ্গ!
কাব্যস্ফূরণ
রাজডরে
লেখে কবি রসরাজ স্তুতি,
অন্তর
অণ্ডবাকে, পরাভক্তি অণ্ডের প্রতি।
এই
প্রকাণ্ড ব্রহ্মাণ্ডে কেবলি ভজিয়া অণ্ডে
গ্রন্থ
রচে শতখণ্ডে অণ্ডকৃপাবলে,
বেষ্টিত
পন্নগদলে, তথাপি অভয়ে চলে,
অন্তরাণ্ডপুরিত
যার, তার কে করিবে ক্ষতি?
হেন
সাধ্য আছে কার, কার হয় নিজানিষ্টে মতি-
কহে
বজ্রোজ্জ্বলে কটুবাক্য জানিয়া স্বরূপ?
সান্ধ্য
কুক্কুটের স্যুপ- পিয়ে কবিবর,
চলেন
পদব্রজে মিলিতে রাজায়,
পশ্চাতে
কে ডাকে ঐ, ‘বজ্রোজ্জ্বল-
কৃপা
করে দু’দম দেহ, আমার গাঁজায়!’
সংবর
করিতে নারে আপনা অন্তর,
ছূটিয়া
গেলেন কবি স্মরে ভোলানাথে,
‘জয়
শ্রীঅণ্ড’ বলে, তুলিয়া ধূম্রনিধি,
কলিনিকন্দন-কল্কি
সেবা নেন হাতে!
-
আগ্রহী পাঠক, এ কাব্য ক্রমশ পাঠ্য
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন