মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০২০

রসরাজ-কীর্তন

রসরাজ-কীর্তন

___________

 

কোথা প্রাণপতি রসরাজ, ভকতে দর্শাও আজ-

মদনমুর্চ্ছিত সাজ, দেখে তবে অক্কা পাই!

ভেবেছি মারিব ছক্কা, বারেবারে জোটে ফক্কা,

যমে দেয় টরেটক্কা, ভয়েতে ভিরমি খাই!

 

মাংসাহারী এ কারণে, পোছে না বৈষ্ণবজনে,

নিন্দা করে জনে জনে, গাঁয়ে চলা হল ভার!

ভজিয়া শ্রীঅণ্ডবাকে, পড়েছি কি দুর্বিপাকে,

কু-শ্রাস্ত্রবচন ধরি, হল ধর্মাধর্মে ছারখার!

 

রসুন-পেঁয়াজ ছাড়ি, শ্রীচরণে রব পরি,

তার মোরে দয়া করি, না তারিলে কোথা যাই?

দিবানিশি আছি ঘরে, কলত্র কলহ করে,

এতে যদি যাই মরে বৈকুণ্ঠে পাব কি ঠাঁই?


সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০

শ্রীঅণ্ডবাক-কীর্তন

শ্রীঅণ্ডবাক-কীর্তন

 

রাগঃ সুরকানান্তকা

তালঃ চতুরাণ্ড

_______________

 

(উজ্জ্বল) মণ্ডলমণ্ডিত তালটালতিরোহিত কীর্তনে মাতো হে!

ঝাড়িয়া ভবের বোঝা, কালসর্পে যিনি ওঝা-

শ্রীঅণ্ডবাকের পদে আপনা লুটাও হে!

 

(ওহে!) সংসারে কি পঙ্ক ঘাঁটা, হয়েছ বলদ, পাঁঠা,

নিত্য ভার্য্যাহস্তে ঝাঁটা, হেরিয়ে না গেল ভ্রম!

এখন হাড়িকাঠে উপনীত, ধান ভানতে শিব-গীত,

গেয়ে কি ভেবেছ তুমি পাবে কিছু উপশম!

 

লভি গো ‘দেব-আশিস’, ওরে কোথা কে পড়ে আছিস,

আয় ছুটে পদপ্রান্তে, ভবার্ণবে তরিতে হে!

বরিয়া সে ভববৈদ্য, নবজন্ম লভি সদ্য,

মাভৈঃ, শ্রীঅন্ড বলে ব্রহ্মাণ্ড বিচর হে!

 

(ও মন), অন্তরে ‘অপ্রকাশ’ যিনি, সর্বভূত হৃদে বাস,

গুরুবাক্য বিনা কার, হয়েছে হে এ বিশ্বাস!

তাই ভজ মূঢ় গুরুপদ, ছাড়ো মায়ামোহমদ

ওরে হাঁদা নির্বোধ, কেন পড়িয়া ঘুমাস রে!

 

ঝাড়িয়া ভবের বোঝা, কালসর্পে যিনি ওঝা-

শ্রীঅণ্ডবাকের পদে আপনা লুটাও হে!

 

 


রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০

দিলি না দিলি না তারা দীনে গো মা দরশন - বিশাখদত্ত - Dili na dili na Tara







দিলি না দিলি না তারা
দীনে গো মা দরশন,
ত্রয়তাপে গাত্রদাহ,
কোথা স্নেহ পরশন?

ধরেছে সংসারব্যাধি,
কোথা পাব সে ঔষধি,
ভয়াকুল মা নিরবধি, আমার
শিয়রে শমন!

রচনা ও সুরঃ বিশাখদত্ত
২৮ জুন, ২০২০।

অভিমানী

বড় অভিমানী - এ তীর ও তীর,

অধীর অধীর এ বাঁক ও বাঁক,

উজান-ভাটায়,

স্রোত কেটে কেটে শ্রান্ত।

ঘড়ি ধরে চলা কাঁটায় কাঁটায়,

তবু ভুল হয়-

কে বা জানতো!

 

এখন খানিক চোখ বুজে আসে,

বরষা আকাশে, পাল তোলা মনে-

মল্লারে লাগে হাওয়া!

সেধে সেধে গেছি পাঁজরার নিচে,

বিষে ভরা গান,

এখনো হল না গাওয়া!

 

ভাল মন্দের সংজ্ঞা হারিয়ে,

কতকিছু লিখে, দেখো-

আমি পাথরের মত ক্ষান্ত!

অভিমান জমে আঁধার ঘিরেছে,

বড় অভিমানে

আমি ক্লান্ত।

 

 

 

 

 


বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০২০

সাধে কি ত্যাজেছি তোরে - স্বরচিত - Sadhe ki tyajechi tore







স্বরচিত শ্যামাসঙ্গীত
আরেকটি
_____________________

সাধে কি ত্যাজেছি তোরে
সেই কথা তুই ভাল জানিস!
পাড়া-পড়শি যে যাই বলুক
(আমার) মনের দুখ তুই
তো মানিস!

সঙ সাজিয়ে খুব পাঠালি,
সঙ দেখে দিস দু’হাত
তালি!
(আমার) পাওনা নেবার
হিসেব দিলে
কত টাল-বাহানার ফিকির
টানিস!

লোকের কথা বলব কি আর,
যার যা ভাল সে বুঝুক
তার।
আপন পরের ফারাক খুঁজে
সবই দেখি বিশ আর ঊনিশ!

ভেবেছি তুই জগত-ছাড়া
তাই অহর্নিশি ডেকে তারা;
কপাল জুড়ে দুখের ফাঁড়া
নিত্য নতুন কতই আনিস!

রচনা ও সুরঃ
বিশাখদত্ত
২৫/৬/২০২০।



সোমবার, ২২ জুন, ২০২০

কে গো ভীমা ভামিনী রণে - বিশাখদত্ত - Ke Go Bhima Bhamini Rane







কালীকীর্তন

মালকোঁষ-
তেওরা
_________________

কে গো ভীমা
ভামিনী রণে!
দনুজদলনী
শোণিত-শোভিত-পদে
ত্রাসিত
ত্রিলোক গজগমনে, প্রলয় গরজনে!
ভীমা ভামিনী
রণে

দিতিসুত-মুণ্ডচয়
দুলাইয়ে গলে,
মেঘবরণী
হুহুংকারে আসব পানে ঢলে
বধিছে অরিকুলে
রুধির পিয়াসে-
ক্ষোভিত
কৃপাণে, রক্ত আননে!
ভীমা ভামিনী
রণে

নীরজ-নয়নে
নবারুণ আভা ধরি,
ভয়ংকরী রণপ্রমত্তা
অট্টহাস ক্ষণে ক্ষণে!

ত্রয়তাপ
নিকন্দনী, দুরিতবারিনী-
সংবর রূপ
ভীষণা, হেরি স্নেহ-সুহাসিনি,
বিশাখজননী,
ক্রোড়-প্রসারিনী-
অভয় দাও,
শমন-শাসনে!
ভীমা ভামিনী
রণে

কথা
ও সুর- বিশাখদত্ত
২২/৬/২০২০

বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০

শান্তি চাইতে নেই?

দোপায়া-জানোয়ার হয়েছি বলে কি শান্তি চাইতে নেই?

সোজা হয়ে হাঁটতে শেখার পর মাথাটা ছোট হয়ে গেল,
অল্প গ্রে-ম্যাটারে দুনিয়া দাপিয়ে বেড়াই বলে কি
আমার কখনো শান্তি চাইতে নেই? সমস্ত অগোছালো-
এলোমেলো করে আমি যুদ্ধেই যাব?

বুদ্ধিরিন্দ্রিয় কি তুখোড় হয়েছে দেখি!
প্রতি দ্বিতীয় বাক্যে আমরা পাই
একে অপরের সাথে স্পষ্ট দ্বিমত!
প্রতিটি ভিন্নতার খাঁজে লুকিয়ে রাখি রক্তপায়ী হাতিয়ার,
নিত্য সাজিয়ে তুলি রণক্লান্ত রথ-
একেকটি স্বতন্ত্র মন্ত্রে, একেকটি মারণ উপচার-
অভিষিক্ত করে আমরা কতই গর্বিত হই!

তবুও ভুল করে একটিবার শান্তি চাইতে নেই?

প্রাণী, প্রজাতি, জাতি, উপজাতি, গোত্র, কূল, গাত্রবর্ণ,
পাড়া-মহল্লা-দেশ, ধর্ম, রাজনীতি, ধনী-গরীব, লাভ-ক্ষতি——
থরে বিথরে নিজেদের খণ্ড খণ্ড করে,
টুকরো টুকরো করে সার্বভৌম কুলীনতায় বেঁধেছি—
তাই বলে কোনদিন একবার একটু নীচে নেমে,
হোক না একটু দ্বিধা— ভুল করে—
তবু কি শান্তি চাইতে নেই?
আমার অনাগত শিশুটির অনঘ আত্মাটি নিয়ে
আমি কি শুধু যুদ্ধেই যাব?

সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০

এ চন্দ্রমৌলী শিব - ধ্রুপদাঙ্গ - বিশাখদত্ত 'E CHANDRAMOULI SHIVA'







সন্ধ্যায় চেষ্টা করছিলাম ধ্রুপদের বাংলা বন্দিশ সৃষ্টি
করতে। ফলাফল পেশ হল-
_______________________________________________________________________________

এ চন্দ্রমৌলী শিব!
উমাপতি পশুপতি আদিদেব।।

অনাদি অনন্ত মূরতি প্রশান্ত
ভকতজন-হৃদি নিশঙ্ককারী,
শোকতাপহারী দেব, দেব মহাদেব।।

অশেষ কৃপানিধি আশুতোষ
হর হে ত্রিপুরারি ভবদোষ-
মিনতি আমারি।

গুণাতীত মহাকাল, গিরিজা-প্রাণেশ্বর,
হর হে ভবব্যাধি দুখভয় হর-
হর শংকর, দয়া কর, নটরাজ, ভৈরব।।




রাগঃ ইমন
তালঃ চৌতাল
রচনা ও সুরকালঃ
১৫ জুন, ২০২০।
বিশাখদত্ত

রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০

ডিপ্রেশন? ডাক্তার দেখান।



খুব পরিচিত কাউকে যখন মানসিক ভাবে প্রবল বিপর্যস্ত দেখি, আমি বলি- একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে। কারো শরীরে রোগ এলে তাকে আমরা কিছু সুস্বাস্থ্য বিধি মানার পাশাপাশি ডাক্তার দেখিয়ে পথ্য নিতেও বলি। মনে রোগ বাসা বাঁধলে একই উপদেশ দিতে গেলেই দেখবেন বিপদ। খচে যায়- ‘আমি কি পাগল?’ এই প্রশ্নটা খুবই বেরসিক! কিছুতেই কিছু বোঝানো যাবে না। কারণ মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের তেমন কোন ধারণা নেই! কেননা মন যে কিছু Hormonal reactions, কিছু Neuro-activities এ নিয়ে কোন শক্তিশালী বিজ্ঞানমনস্ক বোধ আমাদের নেই। আমাদের কাছে ‘মন’ একটা সাহিত্য-প্রপঞ্চ!

মন খারাপ?

কিছু সহজ ওষুধ আছে! যেমন- এই একটু ভাল গান শুনুন। প্রাণখুলে হাসুন। কোথাও বেড়াতে যান যান। ইত্যাদি ইত্যাদি! কিন্তু কেবল এসবেই কি রোগ সারে? অনেক দিন ভুগে ভুগে আপনার মস্তিষ্কে Neurotransmitters নড়ে চড়ে গেছে। কিছুতেই কিছু আর ভাল লাগছে না। জীবন বিস্বাদ আর বিষাদ ছাড়া যেন কিছু আর নয়। এরকম পরিস্থিতিতেও আমাদের নিজে থেকে মনে হয় না যে আমরা ডাক্তার দেখাব। ‘আমি কি পাগল?’

এই কারণে দেখবেন আমাদের দেশের সাইকিয়াট্রিস্ট ডাক্তারদের ভিজিট ফি কম! পেশেন্ট নেই। তবে যদি কি না মানুষকে বোঝানো যেত যে শরীরের রোগগুলোর পাশাপাশি মনের রোগগুলোর জড়ও শরীরবৃত্তীয়- তাহলে দেখতেন সাইকোলজি ও সাইকিয়াট্রি আলাদা ইন্ডাস্ট্রিয়াল রূপ পেয়ে যেত। ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে সাইকিয়াট্রিস্টের দরবারে (চেম্বারে) ধর্না দিয়ে বসে থাকতে হত আমাদের। মাইগ্রেনের ব্যাথায় যে লোক ডাক্তার দেখাতে দু’বার ভাবে না, তাকে মাথার ডাক্তার দেখাতে বললে ক্ষেপে যাবে। ‘আমি কি পাগল?’

মানুষের আজও এই ধারণা যে সাইকিয়াট্রির কাজ পাগল দেখা!

মন নিয়ে আজও আমরা তীব্রভাবে অসচেতন। মনেরও পার্সোনাল হাইজিন মানতে হয়, মনকেও সুরক্ষা দিতে হয়, মনেরও যত্ন নিতে আর আর মনে বিকার এলে তারও চিকিৎসা করতে হয়। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে মনের চিকিৎসা স্রেফ কাউন্সেলিং পর্যন্ত গিয়ে থামেনি- আমরা এমন সব থেরাপি আর ওষুধও হাতে পাচ্ছি যাতে খারাপ মনকে কিছুটা সফল ভাবে ভাল করা যায়। আমাদের মনের অবস্থা লাগামছাড়া অধোগতি পেলে আমরা সে পথ একবার ঘুরে আসতেই পারি।

মনের দুর্ভোগ আধুনিক নরনারীর জীবনে খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। এ নিয়ে দীর্ঘ কথা লেখার প্রয়োজন নেই। এই মূহুর্তে যে এই লেখা পড়ছেন- তারও মনের কোথাও একটা কিছু খচখচ করছে। কিন্তু আমাদের জানতে হবে এই মানসিক দুরবস্থা বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে। সেটা বুঝবেন এবং নিরাময়ের জন্য সচেষ্ট হবেন।

ডিপ্রেশন আজকের পৃথিবীতে মহামারী (কোভিড-১৯ এর চেয়ে কম নয়!)। এর একটি বড় উপসর্গ হচ্ছে নিজেকে আইসোলেট করে ফেলা এবং অস্বাভাবিকভাবে আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে ওঠা। আমার ধারণা – আধুনিক সময়ে এই উপসর্গ থেকে রেহাই পাচ্ছে এমন যুবক-যুবতী কম। নিজে নিজের অবস্থা বুঝুন এবং কল্পনানির্ভর Optimism এর শরণাপন্ন না হয়ে বরং একজন সাইকোলজিস্ট বা সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যান। ব্যাপারগুলো আপনা-আপনি ঠিক হয়ে যাবে, বা ‘এই দিন দিন নয় আরো দিন আছে’ ভেবে মনের প্রতি অবহেলা না করলেই ভাল।

আজ একজন অভিনেতা মারা গেলেন। শোর উঠেছে তিনি ডিপ্রেশনে ভুগে আত্মহত্যা করেছেন। আমি আমার খুব প্রিয় একজন অভিনেতার প্রসঙ্গ নিয়ে এলাম রেফারেন্সের প্রয়োজনে- বাঁচার রেফারেন্স- বাঁচার প্রয়োজনে।

জিম ক্যারি। আমি যাবত বাঁচব তাবৎ এই লোকটার সিনেমা দেখেই যাব। জীবনে যত ম্লান মূহুর্ত আসবে আমি ততবার একটা জিম ক্যারির সিনেমা নিয়ে বসব। কারণ আমাকে পেটে হাত দিয়ে হাসতে হবে। এই মানুষটা তাঁর গোটা ক্যারিয়ার আমাদের হাসিয়ে গেছেন, কিন্তু নিজে ভুগেছেন মারাত্মক ডিপ্রেশনে! তাঁর একটি কথা লিখছি -

‘“People talk about depression all the time. The difference between depression and sadness is sadness is just from happenstance—whatever happened or didn’t happen for you, or grief, or whatever it is. Depression is your body saying f*ck you, I don’t want to be this character anymore, I don’t want to hold up this avatar that you’ve created in the world. It’s too much for me. You should think of the word ‘depressed’ as ‘deep rest.’ Your body needs to be depressed. It needs deep rest from the character that you’ve been trying to play.”

এটাই কথা!

Always be who you really are! Don’t play a different character because the society is demanding you to do so! প্রতিনিয়ত নিজের সাথে নিজের অভিনয় আর বাহ্য সমাজের সমস্ত মেকি মিথ্যে সঙের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে আমরা কি করে নিজেদের শেষ করে দিচ্ছি- তার অনুভব হয়ত এমন একটা সময়ে গিয়ে আমাদের করতে হচ্ছে যখন আমাদের হাতে পায়ে শেকল শক্ত হয়ে গেছে।

শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০

বর্ধমানের খানা

বর্তমানে বর্ধমানে হচ্ছেটা কি আল্লা জানে
দেখছি কারা দিচ্ছে ছবি খানাপিনার ধুম!
এদিক এখন বর্ষা ভারী, চালে ডালে তাই খিচুড়ি-
চাপিয়ে হাড়ি, অতঃপরে জানলা বেঁধে ঘুম!

লোভ দেখানো হচ্ছে ভীষণ মেসেঞ্জারে,
বন্দীদশা কাটলে যখন পড়ব ঘাড়ে-
বাপরে মারে- করেও তখন পার পাবে না আর!
রাখচি টুকে, টাচস্ক্রিনে আঙুল ঠুকে,
কোভিড-ফোভিড গেলেই চুকে
শোধ তুলব তার!

খাও বাছাধন যতেক পারো,
দিন যে পড়ে রইবে আরো,
সুদ-আসলে মিলিয়ে নেব পাওনা যা যা বাকী!
বর্ধমানে আসব যখন
বানিয়ে রেখো ওসব তখন
ভুলেও তুমি ভাববে না যে- আমায় দেবে ফাঁকি!

অন্ডবাকের রোষ

শ্রীঅণ্ডবাকোবাচঃ
________________________

হেরি এ মানবকুল অপক্ক গণিতে,
রচিব গণিত বিধি এবে সরলতর করি!
কোথা বৎস অপ্রকাশ প্রকাশ ক্ষণেক,
মসীপাত্রে দাও দেখি কিছু কালি ভরি!

অপ্রকাশোবাচঃ
______________________

ক্ষমা মাগি গুরুবর তব শ্রীচরণে,
‘ডিম্বোপনিষদ’ রচনান্তে
যবে প্রভূ ধরিলেন সমাধির ধ্যান,
শতেক বৎসর করি সে রূপের পূজা,
আশির্বাদে লভিলাম কাব্যের জ্ঞান,
তাহে সমস্ত মসীর কালি বিনষ্ট হয়!

শ্রীঅণ্ডবাকোবাচঃ
_____________________

তোর পরে সমর্পিয়া আশ্রমের ভার,
ভাবিলাম সমস্ত বাড়িবে ক্রমে, নাহি হবে ক্ষয়,
ইহা কি করিলি ছোরা, অনঙ্গপ্রভাবে-
কাব্যে সাধন শক্তি করি অবক্ষয়-
নষ্ট করি দৈববলে প্রাপ্ত যত কালি,
মমদত্ত শিক্ষা-দীক্ষা দিলি জলাঞ্জলি!
বুঝি দিবারাত্র ধূম্রময়-
করি গঞ্জিকাবাসর, লইয়া স্ববান্ধবজনে-
প্রমোদে লিখিয়া পদ্য মদ্যপায়ী যত,
যতকে পামর-
করিলি এ তপোভূমি কলঙ্ককলুষ!
দূর হ সম্মুখ হতে, দূর হ এক্ষণে
ক্রোধাগ্নিরে দিতে নারি, ক্ষনেক অঙ্কুশ-
তুই ভস্ম হয়ে যাবি!

অপ্রকাশোবাচঃ
___________________________

ক্ষমা, ক্ষমা, হে করুণার্ণব,
অজ্ঞানে করিনু নাথ এ হীনতম দোষ,
ভগবন,তুচ্ছ দাসের প্রতি কৃপা সঞ্চারি-
দয়েশ্বর, দয়ানিধি সংবর রোষ!

পড়িয়া বিশাখপঙ্কে ভাবিলাম
শাখামৃগতুল্য জীবন তবে ধন্য করি ভবে,
শাস্ত্র-পুঁথি নিত্যকর্ম নিত্য ত্যাজি দূরে,
কবিত্ব-পরাক্রমে উদিত হই যবে-
তবে শিরোপরে গুরুকৃপা সার্থক জানি!
আজ ভাঙিল সে ভ্রমের পাশ,
প্রভূ রাঙা ঠ্যাঙে রাখো, দাও হে ঠ্যাঙানি-
তথাপি মিনতি করি- ত্যাজিও না মোরে,
তুমি বিনা নাই নৌকা এ ভবার্ণব ঘোরে!


৯.৬.২০২০

বুধবার, ১০ জুন, ২০২০

নিভে যাবার গান

পড়েছি সংসার পঙ্কে
ভবানী ভবের অংকে
পেয়ে গোল্লা
করে হল্লা
রসাতলে যাই!

কি আনন্দ বিষপানে, 
সে তো বিশ্বেশ্বরে জানে,
আমিও খাই গো বিষ
দিয়ে নামের দোহাই!

অহোরাত্র বুক জ্বলে
মরি বাঁচি পলে পলে
কিসে জ্বালা নিবারি গো
তাতো জানা নাই!

চারিদিকে শূণ্য হেরি,
নয়নে আঁধার ঘেরি,
ঘুম আসে অতলান্ত
কি করে ঘুমাই?

জেগে রই চক্ষু মেলে
ব্যাথার সলতে জ্বেলে,
আশা করি কোন ঝড়ে
যদি নিভে যাই!

মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০

মা তোমাকে যে ভালবাসি

মা তোমাকে যে ভালবাসি 
এ কথা সাগর জানে, এ কথা আকাশ জানে, পদ্মার ঢেউ জানে,
যে সাগরে ঝড় ওঠে, যে আকাশে মেঘ ছোটে,
যে নদীতে কুল ভাঙে বিপুল জোয়ারে; এ কথা তারাও জানে।
এ কথা বাতাস জানে, গভীর অরণ্য জানে, পাহাড়ের পথ জানে;
যে বাতাসে সুর ভাসে, যে অরণ্যে পাখি গায়-
যে পাহাড়ে ঝরনা নামে তটিনীর টানে, একথা তারাও জানে।
কতটা যে ভালবাসি এ কথাটা চাঁদ জানে, প্রখর সূর্য জানে,
মিটিমিটি তারা জানে; যে চাঁদে জ্যোছনা ক্ষরে,
যে সূর্যে আগুন ঝরে, যে তারারা স্মিত হাসে তারাও জানে।
এ নগর সে ও জানে, দুরের পল্লী জানে, খাল-বিল সব জানে;
যে নগরে নদী নেই, যে গঞ্জে মেঠোপথে বৃষ্টিতে কাদা,
ঝিলে বিলে মাছ খেলে তারাও জানে।
এ কথা এরাও জানে, এ কথা ওরাও জানে, শত্রু মিত্র জানে;
এরা যারা কাছে আছে, ওরা যারা দূরে গেছে,
আর যারা পাশে আছে নানা প্রয়োজনে- একথা সবাই জানে।

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সোমবার, ৮ জুন, ২০২০

কিছু অজানা কথা

জানো কি না তুমি জানি না,

সবকিছু তুমি একাই জেনেছ

এতটুকু আমি আমি মানি না!

 

হতে পারি আমি চাষাভুষো লোক

বইটই অত পড়ি না,

তোমরা যেটায় ষোলআনা বোঝ

আমি একআনাও তার বুঝি না!

 

তবুও

 

কাস্তে কোদাল বাজি ধরে বলি,

তুমি মানো আর না-ই মানো!

আমার কোদাল থামবে যেদিন,

তুমি টের পেয়ে যাবে জেনো-

 

এই ধরণীতে

আমাদেরও আছে কিছু না কিছু তো জানা!


রবিবার, ৭ জুন, ২০২০

জীবন, যুদ্ধ ও কবিতা

বিষণ্ণ কবিতার সকল গ্রন্থ ফুরালে

যে ভেবেছে এখন অতলে তলিয়ে যাবে,

সে করেছে সমস্ত যুদ্ধ উপেক্ষা!

অরিখঞ্জর বুকে বিঁধে মরে যাওয়া ঢের ভাল

ব্যর্থ মসীর কালি ঝরিয়ে ক্লান্ত হবার চেয়ে,

এত অকরুণ, ক্রুরতার শিক্ষা-

কবিতার কিতাবে পাইনি আমরা!

 

তাই দ্ব্যর্থক, অবিমিশ্র কত ভাব ও ভাষার প্যাঁচে

নিজেকেই গুলিয়ে নিয়ে এক আত্মমগ্নতার সুখ-

আমরা বলেছি- এ আমাদের একান্ত স্বতন্ত্রতা,

যে বোঝে না সে না হয় নাই বা বুঝুক,

উই ডোন্ট কেয়ার!

 

নিরবধি বাকচতুরতায় জয়ী যুদ্ধবিমুখ,

অথচ আত্মহননের চেয়ে রণভূমে বীরগতি শ্রেয়

তবু বিনা রণে প্রাণ দেয়ার-

অ-কবিত্বটিকে বাড়িয়ে ভেবেছে বাঁচার প্রেরণা,

কবিতা বুঝতে গিয়ে মুগ্ধ প্রেমিক,

কবিতা বুঝেছে কিছু, জীবন বোঝে না।


শনিবার, ৬ জুন, ২০২০

শিষ্যের প্রতি

মণ্ডলাযার্য্যের কবিতার প্রতিফলন-

 

গিন্নী তোমার পাকা ধানে মই,

 

যেমন ছিলে বেশ তো ছিলে,

ভদ্দো ঘরের ভদ্দো ছেলে,

দিনদুপুরে ঘুরতে কত

রোদ্দুরে টইটই!

 

এখন খোঁয়াড়খানায় ফেরার তাড়া,

নম্র করে খিড়কি নাড়া,

ত্রস্ত ভীষণ বুকের ভেতর-

ডাঙায় ওঠা কৈ!

 

তবু তোমার মন্দ কপাল,

খুন্তি নেড়ে সকাল বিকাল

দিচ্ছে গালি ইচ্ছে মতন-

কোন প্রাণে তা সই?

 

আমি তোমার গুরু বটে,

বুদ্ধি তোমার নেই যে ঘটে,

কত করে না করেছি-

দুখের কথা কই!

 

শুনলে না তো একটি কথা,

হাড়িকাঠে গুঁজেই মাথা

ছাদনাতলায় ছাগল সেজে

করলে কি হইচই!

 


চট্টগ্রামের ঘূর্নিঝড় (টাইমলাইন - ১৯৯০ থেকে।)


১৯৯০ সাল থেকেই একটা লিস্ট দিচ্ছি ঘুর্ণিঝড়ের যা বৃহত্তর চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে গেছে। (তার আগের কথা আমার বয়সকালে উপলব্ধির বাইরে তাই বাদ দিচ্ছি!)

________________________

১। ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯০- কক্সবাজার উপকূল। মৃতের সংখ্যা নিয়ে তথ্য নেই।

 

২। ২৯ এপ্রিল ১৯৯১- চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি ভয়াল দিন। মৃত ২ লক্ষের কাছাকাছি। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টা প্রতি ২৪০ কিলোমিটার।)

 

৩। ৩১ মে ১৯৯১, অর্থাৎ মাত্র একমাস ব্যবধানেই দ্বিতীয় ধাক্কা! সমস্ত দক্ষিণবঙ্গে আঘাত হানে। চট্টগ্রামে কিছুটা কম।

 

৪। আবারো ২৯ এপ্রিল, তবে ১৯৯৪। কক্সবাজার। মৃত সরকারী মতে ৪০০। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘন্টায় ২১০।

 

৫। ২১ নভেম্বর ১৯৯৫।  কক্সবাজার। মৃত- সরকারী মতে ৬৫০। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘন্টায় ২১০।

 

৬। ১৬ মে ১৯৯৭। চট্টগ্রাম উপকূল ও সংলগ্ন অঞ্চল। বাতাসের গতি ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার। মৃত সরকারী তথ্যে ১২৬।

 

৭। একই বছরে আবার। ২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭।  চট্টগ্রাম উপকূল ও সংলগ্ন অঞ্চল। বাতাসের গতি ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটার। মৃতের সংখ্যা নিয়ে তথ্য নেই।

 

৮। ১৬ মে ১৯৯৮।  চট্টগ্রাম উপকূল ও সংলগ্ন অঞ্চল। বাতাসের গতি ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটার। মৃত সরকারী তথ্যে ১২৬।

 

এবার ২০০০ সালের হিসেব-  (এখন থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ চালু)

 

 

৯। সাইক্লোন আকাশ। ১৫ মে, ২০০৭। চট্টগ্রাম উপকূল। মৃতের সংখ্যা ১৪। বাতাসের ঘন্টাপ্রতি গতি ১১৫।

 

১০। সাইক্লোন মহাসেন। ১৬ মে ২০১৩। চট্টগ্রাম উপকূল। গতিবেগ ৮৫ কিলোমিটার ঘন্টায়। মৃত ১৭ জন।

 

১১। সাইক্লোন কোমেন। ২৯ জুলাই, ২০১৫। চট্টগ্রাম উপকূল। গতিবেগ মাত্র ৭৫ কিলোমিটার ঘন্টায়। তবুও মৃত ১৩২ জন।

 

১২। সাইক্লোন রোয়ানু। ২১ মে ২০১৬। চট্টগ্রাম উপকূল। বাতাসের গতি ছিল ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার। মৃত ২৬।

 

১৩। সাইক্লোন মোরা। ২৯ মে, ২০১৭।  চট্টগ্রাম উপকূল। ঘন্টাপ্রতি ১১০ কিলোমিটার গতিতে আঘাত হানে। মৃতের সংখ্যা ১৮।

 

 

 

 

* যা এখানে লিখলাম না-

 

আপনারা অনেকেই ভাবছেন আরো বিরাট বিরাট কতক ঝড়ের নামোল্লেখ নেই কেন? এ কথা সত্যি যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ছোট বড় সকল ঘুর্ণিঝড় উপকূলে- তা ল্যান্ডফলের স্থান থেকে যত দূরেই থাক না কেন- কোন না কোনভাবে একটা প্রভাব ফেলবেই! এখানে যেহেতু কেবলমাত্রে বৃহত্তর চট্টগ্রাম (আমার জন্মভূমি) অঞ্চলে ল্যান্ডফল করা ঝড়গুলোর কথা লিখছি তাই- বাংলার (পূর্ব ও পশ্চিম) দক্ষিনাংশ দুমড়ে মুচড়ে যাও্য়া সিডর, আইলা, বুলবুল- প্রভৃতির কথা একেবারেই টানিনি। একটা আশ্চর্য্যের ব্যাপার লক্ষ্য করুন- ১৯৯৮ এর পর থেকে চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে কোন অতিমারী ঝড় যায়নি! যা গেছে সব দক্ষিণবঙ্গ, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে। আর এই ক’দিন আগের আম্ফান তো কোলকাতাকেও কাঁদিয়ে ছাড়লো!

 

ঘুর্ণিঝড়ে সৃষ্ট বিধ্বংসী জলোচ্ছাস মানুষের পাশাপাশি গবাদি ও বন্য পশুর বিনাশ করে! এসব ঝড়ে নানাবিধ মানবসম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিপুল পরিমাণের কথাও অনুল্লিখিত রাখলাম এখানে।

 

এই পোস্টটি তাদের জন্য- যাদের জন্ম সাগরপাড়ে নয়! তাদের অনুভবের বাইরে- আমরা কিভাবে বেড়ে উঠেছি! আমরা কালবৈশাখী দেখে মূর্ছা যাবার প্রাণ ধরিনি! ঝড় আছড়ে পড়ার আগ পর্যন্ত আমরা ফুটবল খেলে অভ্যস্ত। তবে আমরা জানি- দুর্ভোগ শুরু হতে যাচ্ছে!  যারা সাগর থেকে অতি দূরে থাকেন, তাদের অনুরোধ ঝড় নিয়ে মজা –মশকরা করবেন না। এ ঝড় কালবৈশাখীর মেঘ দেখে মল্লার কি সারঙ গাইবার নয়!

বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০

'রিয়াজুদ্দিন'

হয়ত কোনদিন আবার সেখানে যাব,
ফানুশের মত উড়ে,
কোন প্রবারণা রাতে।

কোন চেরাগীর মোড় ফেলে,
একটু এগিয়ে কোন বৌদ্ধ বিহার,
স্মৃতির গতায়ু চেরাগ জ্বেলে,
নিঃশব্দে কাছে ডাকে সাগর ও পাহাড়;
আমি কত দূরে পড়ে রই,
হয়ত বা বেশ আছি, গান গাই, কথা কই,
তবু যা কিছু বলি না আর, সব এই কবিতার-

ছত্রে ছত্রে যেন ঝনঝন বাজে,
'রিয়াজুদ্দিন' আজও ভোলেনি আমায়,
ফোন করে অবসরে, ঘুমে মাঝেমাঝে!

(একটি ফেসবুক কমেন্ট।)

কবে গো আর নগেন্দ্রনন্দিনী

কবে গো আর নগেন্দ্রনন্দিনী বল,
পাষাণ পরানে তোর তিলেক দয়া হবে?
কালপাশে আয়ুক্ষয়, মনে জাগে সদা ভয়,
নয়ন যে মুদে আসে, কোলে কে মা লবে!

এ আমার মিছামিছি, দাঁড় ধরে বসে আছি,
যে নদীতে স্রোত নাই, তায় ভাসিয়ে তরণী,
ভেবেছি গো পারে যাব, ভবের জ্বালা জুড়াব,
রাঙা পায়ে লুটাবো- ওগো শিবের ঘরনী,
ছাই হল তবে!

কি গরলে তৃপ্ত হয়ে, অমৃতে করেছি দূর,
তাতেও তুষ্ট নন, ভবনাথ, চন্দ্রচূড়!

সুখে মা র'ব না জানি, তাতে নই অভিমানী,
অন্তে পদে কপালিনী, দিস শুধু ঠাঁই!
কুলভাঙা ঝড় আসে, মরি গো মরণ-ত্রাসে,
আমার শিয়র পাশে কেউ কেন নাই?
চলে গেল সবে!

আর কবে নগেন্দ্রনন্দিনী - স্বরচিত- বিশাখদত্ত

আর কবে নগেন্দ্রনন্দিনী,

পাষাণ পরাণে তিলেক দয়া হবে

এ দীনে জননী?

 

নেমেছি এ বেলা ভবের পাথারে নাহি গো তরণী

পারে যাব আশা করেছি গো মনে, শিবের ঘরণী।

করাল জলধি পথ নাহি জানি, হেরি মা অশনি।।

আর কবে নগেন্দ্রনন্দিনী...

 

এ ভবতরঙ্গ হয় না রে ভঙ্গ, তারা একি রঙ্গ!

গরজে পবন, ত্রাসিত নয়ন, থরথর অঙ্গ!

 

কোথা ভয়হরা দীনের তারিণী, দুঃখবারিণী!

তনয় বিশাখে জলধির পাঁকে ডোবে মাগো, ডাকে-

কোথা ত্রিনয়নী, পতিতপাবনী, শঙ্কাহরণী।।

আর কবে নগেন্দ্রনন্দিনী...

 

রচনা ও সুরঃ ৪/৬/২০২০

বিশাখদত্ত।

 

গতরাতে একটা ধ্রুপদ লেখার তাড়না এলো মনে। আজ সকালে দেখি গলা খুশখুশ করছে প্রচণ্ড।  রাত ৩টা পর্যন্ত জেগে একটা কাব্য লিখে ফেললাম ধ্রুপদের জন্য। ভেবেছি চৌতালে বাঁধব। কিছুতেই সেই ভাবটা এলো না। তারপর এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত এই রূপে আনতে পেরেছি।

 

রাগ সম্পুর্ণ মালকোঁষের ছায়ায় ৯ মাত্রার শিবতাল! এ-তালে কখনো কিচ্ছুটি গাইনি! তাতে আবার নিজে গান তৈরির চেষ্টা একটু বেশী দুঃসাহসিকতা হয়ে গেল না? গলা খারাপ থাকা সত্ত্বেও গেয়ে রেখেছি- নইলে সুরটা মন থেকে সরে যাবে।

 

 

 

 

বুধবার, ৩ জুন, ২০২০

করলা ব্যাপারী



মুরগীর ঝোলে সেদ্ধ করলা
যদি তুমি খাও দিনে এক বেলা
রবে না করোনা, রবে না রবে না
যমের অরুচি হবে ষোলআনা-
পথ্য এনেছে বৈদ্য,
উহান নগরে সেরে গেছে রোগ,
খেয়ে করলার সনে মদ্য! 

এখানে কি আর বলা যাবে ভাই,
প্রকাশ্যে হেঁকে মদের দাওয়াই!
তাই মদ ও মুরগীর সমার্থ ধরে
বেচতে লিখি এ পদ্য,
ইনগ্রেডিয়েন্ট মূলত করলা,
এক কিলো কেনো অদ্য!

সোমবার, ১ জুন, ২০২০

নৈশভোজ (পুরাতন কবিতা)



একপ্রস্থ আঁধার গিলে এই নৈশভোজ-
সেরে, আমি বলি চাঁদ, আমার ঢেকুরটা কৈ?
ভরা পেটে দু'বালতি চালান দিয়ে ত্রয়োদশী ভাঙ
এ কবিতা যে লিখে ফেলে সে কি আমি নই?

বাঁশবাগানের পাড়ে, কেওড়াপুকুর, শ্যাওলার ঘাট,
আমি ডুবিয়ে দিয়েছি পদ, বিপদ বিধায়!
এ ভীষণ রাত্রিবেলাও গায়ে ছাই রৌরব তাপ,
নগকন্যা, শীতল যে কিসে হব রয়েছি দ্বিধায়!

জ্যোছনা নদীর মত তোমার সিঁথিতে
সহস্রাব্দ বয়ে গেছে কত কবি ফবি খেয়ে,
দু ধারে ভাঙন দিয়ে কোঁকড়ানো চুলে
অলিখিত ছন্দ কত নিয়ে গেছে ধুয়ে,
তার বৃত্তান্ত অতশত জেনে বল আমার কি কাজ?
আমার যে ভেসে যেতে নেই কোন ভয়,
আমার যে নৌকাটিতে তুমি এলে আজ! 

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...