১৯৯০ সাল থেকেই একটা লিস্ট
দিচ্ছি ঘুর্ণিঝড়ের যা বৃহত্তর চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে গেছে। (তার আগের কথা আমার
বয়সকালে উপলব্ধির বাইরে তাই বাদ দিচ্ছি!)
________________________
১। ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯০-
কক্সবাজার উপকূল। মৃতের সংখ্যা নিয়ে তথ্য নেই।
২। ২৯ এপ্রিল ১৯৯১-
চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি ভয়াল দিন। মৃত ২ লক্ষের কাছাকাছি। বাতাসের
গতিবেগ ঘন্টা প্রতি ২৪০ কিলোমিটার।)
৩। ৩১ মে ১৯৯১, অর্থাৎ
মাত্র একমাস ব্যবধানেই দ্বিতীয় ধাক্কা! সমস্ত দক্ষিণবঙ্গে আঘাত হানে। চট্টগ্রামে
কিছুটা কম।
৪। আবারো ২৯ এপ্রিল, তবে
১৯৯৪। কক্সবাজার। মৃত সরকারী মতে ৪০০। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘন্টায় ২১০।
৫। ২১ নভেম্বর ১৯৯৫। কক্সবাজার। মৃত- সরকারী মতে ৬৫০। বাতাসের
সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘন্টায় ২১০।
৬। ১৬ মে ১৯৯৭। চট্টগ্রাম
উপকূল ও সংলগ্ন অঞ্চল। বাতাসের গতি ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার। মৃত সরকারী তথ্যে ১২৬।
৭। একই বছরে আবার। ২৫
সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭। চট্টগ্রাম উপকূল ও
সংলগ্ন অঞ্চল। বাতাসের গতি ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটার। মৃতের সংখ্যা নিয়ে তথ্য নেই।
৮। ১৬ মে ১৯৯৮। চট্টগ্রাম উপকূল ও সংলগ্ন অঞ্চল। বাতাসের গতি
ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটার। মৃত সরকারী তথ্যে ১২৬।
এবার
২০০০ সালের হিসেব- (এখন থেকে ঘূর্ণিঝড়ের
নামকরণ চালু)
৯। সাইক্লোন আকাশ। ১৫ মে,
২০০৭। চট্টগ্রাম উপকূল। মৃতের সংখ্যা ১৪। বাতাসের ঘন্টাপ্রতি গতি ১১৫।
১০। সাইক্লোন মহাসেন। ১৬
মে ২০১৩। চট্টগ্রাম উপকূল। গতিবেগ ৮৫ কিলোমিটার ঘন্টায়। মৃত ১৭ জন।
১১। সাইক্লোন কোমেন। ২৯
জুলাই, ২০১৫। চট্টগ্রাম উপকূল। গতিবেগ মাত্র ৭৫ কিলোমিটার ঘন্টায়। তবুও মৃত ১৩২
জন।
১২। সাইক্লোন রোয়ানু। ২১
মে ২০১৬। চট্টগ্রাম উপকূল। বাতাসের গতি ছিল ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার। মৃত ২৬।
১৩। সাইক্লোন মোরা। ২৯ মে,
২০১৭। চট্টগ্রাম উপকূল। ঘন্টাপ্রতি ১১০
কিলোমিটার গতিতে আঘাত হানে। মৃতের সংখ্যা ১৮।
* যা এখানে লিখলাম না-
আপনারা অনেকেই ভাবছেন আরো
বিরাট বিরাট কতক ঝড়ের নামোল্লেখ নেই কেন? এ কথা সত্যি যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ছোট বড়
সকল ঘুর্ণিঝড় উপকূলে- তা ল্যান্ডফলের স্থান থেকে যত দূরেই থাক না কেন- কোন না
কোনভাবে একটা প্রভাব ফেলবেই! এখানে যেহেতু কেবলমাত্রে বৃহত্তর চট্টগ্রাম (আমার
জন্মভূমি) অঞ্চলে ল্যান্ডফল করা ঝড়গুলোর কথা লিখছি তাই- বাংলার (পূর্ব ও পশ্চিম) দক্ষিনাংশ
দুমড়ে মুচড়ে যাও্য়া সিডর, আইলা, বুলবুল- প্রভৃতির কথা একেবারেই টানিনি। একটা
আশ্চর্য্যের ব্যাপার লক্ষ্য করুন- ১৯৯৮ এর পর থেকে চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে কোন
অতিমারী ঝড় যায়নি! যা গেছে সব দক্ষিণবঙ্গ, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে। আর এই
ক’দিন আগের আম্ফান তো কোলকাতাকেও কাঁদিয়ে ছাড়লো!
ঘুর্ণিঝড়ে সৃষ্ট বিধ্বংসী
জলোচ্ছাস মানুষের পাশাপাশি গবাদি ও বন্য পশুর বিনাশ করে! এসব ঝড়ে নানাবিধ
মানবসম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিপুল পরিমাণের কথাও অনুল্লিখিত রাখলাম এখানে।
এই পোস্টটি তাদের জন্য-
যাদের জন্ম সাগরপাড়ে নয়! তাদের অনুভবের বাইরে- আমরা কিভাবে বেড়ে উঠেছি! আমরা
কালবৈশাখী দেখে মূর্ছা যাবার প্রাণ ধরিনি! ঝড় আছড়ে পড়ার আগ পর্যন্ত আমরা ফুটবল
খেলে অভ্যস্ত। তবে আমরা জানি- দুর্ভোগ শুরু হতে যাচ্ছে! যারা সাগর থেকে অতি দূরে থাকেন, তাদের অনুরোধ ঝড়
নিয়ে মজা –মশকরা করবেন না। এ ঝড় কালবৈশাখীর মেঘ দেখে মল্লার কি সারঙ গাইবার নয়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন