প্যালা রে,
জানিস আমি ধ্যাননিমগ্ন ধূর্জটি হয়েও
দক্ষযজ্ঞ বিনাশী রূপ ধরে দিগ্বিদিক বিকীর্ণ হই?
আমি প্রগলভ পৌরুষ! আমি কি অমোঘ নারীহৃদয়দাহ্য
হাস্যলাস্যে নির্বাণেচ্ছু গৌতম বটছায়ে মার দর্শন করি!
আমি বহুবাঞ্ছিত, বহু রতিদেবী রমণকাঙ্ক্ষিত দেহতরী
বহুপ্রেম উপেক্ষার স্রোতের পক্ষে ভাসাই!
প্যালা রে, আমি আমৃত্যু কাঁদি আর তোদের হাসাই!
এই অমরত্বহীন জন্তুলোকে দেবত্বের অপলাপ গেয়ে
আমি খিন্ন, ছিন্নভিন্ন শিরা-উপশিরা বয়ে দেহসজ্জায়
দারুণ লজ্জায় আমি রাত্রিনিপাত করি গণিকার গানে!
আমার প্রবল দম্ভ, স্বাভিমান, দর্প, দোর্দণ্ড আত্মবল,
স্বয়ংপ্রভ অভিমান সবকিছু ভেসে যায় মিথ্যার টানে!
এই কদর্যাভিলাষপূর্ণ নরকের পথে, বিজয়ের রথে
দেখ কারা যায়? একটা মানুষ নেই! একটা ফুল নেই!
একটা শান্তির খণ্ড বাতাস নেই! শুধু রক্ত আর বীর্য্যে মাখামাখি!
অসতীর সতীচ্ছদ দীর্ণ হাহাকার শোন! ভণ্ডের দেশনা শোন!
অপ্রেমিকের মুখে শোন স্বর্গীয় প্রেমের যত দিব্য কাহিনী মালা!
শোন মূক চৈতন্যের গভীরে ক্ষতের জ্বালা টগবগে ফোটে!
প্যালা রে, আমি জন্মেছি এই যুগে, প্রদোষকালে আলোর সংকটে
তাই বুঝি দেখ প্যালা- ক্রমে ক্রমে কেমন আঁধারে ঢুকে যাই!
আমার ভেতরে কি যে আগুন! চোখের মধ্যে হরিশ্চন্দ্র ঘাট!
আমি আমাকে কি করে ভুলিয়ে রাখি, প্যালারাম চলে আয় পত্রপাঠ
সময় সমাগত, এইবার বড় সাধ- নির্বাপিত হই!
আমার কাগজপত্র কিছু, কিছু পুঁথিপাঁতরা বই
সংগ্রহে রেখে দিস! হয়ত তোদের ভবিষ্যৎ মর্যাদা দেবে!
হয়ত একদিন একমুঠো ছিন্ন পাপড়ি কেউ ছুঁড়ে দেবে
মনে করে না থাকা অস্তিত্বে! যে থাকে সে তো কেউ নয়!
সে তো কেউ নয়!
১৩ মে, ২০১৬
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন