বুধবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৮

অতঃপর আর কিছু নেই

অতঃপর বলে আর কিছু রইল না,
আমি বর্তমান আর অতীতের নিশ্বাস
ভারী হয়ে আমার অস্তিত্বে ঘুরি।

যেদিন পশ্চিমকে পশ্চাতে রেখে, তোমায় পূবে ধরে
অস্তাচলের সূর্য্যকে শাসালাম, 'এ মূহুর্ত শুধুই আমার',
আমিও ভাবিনি সূর্যের মত স্মৃতিও ডুবে যেতে পারে।

আমি এখন আমার শূণ্যতায় উড়ি,

চির-অনালোকিত ছিল না এমন নশ্বর অন্ধকারে,
পাংশু বেদনার নিরালম্ব গহ্বরে প্রাণ-পতঙ্গ, আমি আছি,
আমাকে থাকতে হয়, আমি ছিলামও কোনদিন।

ব্যস, এখানে পুরো কবিতাটা শেষ।
অতঃপর আর কিছু নেই।

বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৮

অন্তরীণ

নিশ্চিন্তভাবে আমি কবিতা লিখে মরতে আসিনি,
আমাকে সকালে ডেকে দিয়ে বোলো 'বাজার কিছু নেই!'
এতটুকু হলেই আমার পৌরুষের বোধ ভালই জাগতে পারে!

এক প্রকাণ্ড নৈরাশ্যের পাহাড় কেটে কেটে মিস্টিক হতে চাইনে,
প্রচণ্ড অপারগতায় অপরের স্বার্থকে বলিনে বুর্জোয়াতন্ত্র, একান্ত করে-
ছুঁতে না পারার নিপাট ব্যর্থতাকেও বলিনে বিরহ কোনদিন, কবিতার মন্ত্র-
আমি স্পষ্ট বলি- আজেবাজে কথাকে কবিতা বলে চালাতে আসিনি...

আমি তোমার অন্তরে অনন্ত অন্তরীণ-
প্রেমের বিষ হয়ে জ্বলে মরতে চাই!

শনিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৮

নীরোর বাঁশরী

যাহারা পরলোকে বেহেশতে যাইবার আশায়
ইহলোকটিকে দোজখ করিয়াছে
এই জমানা তাহাদের জন্য!

যাহাদের স্বর্গে যাইবার সুযোগ নাই,
মর্ত্যে তাহাদের বাঁচিবার কি অধিকার?

'ন হন্যতে হন্য....
উদরে যার অনুদার ক্ষুধা তার আত্মা যাক জাহান্নামে!
বধির-অন্ধ ঈশ্বর, অপ্রতিম, অনন্য-
আত্মজ্ঞানের পিণ্ডি চটকে দিলাম
যতনে খাইও!

আমি ভাল নাই,
ভাল নাই আমাদের সম কঙ্কালের সত্বাধারীবৃন্দ!
রোম জ্বলিয়া যায়, পুড়িয়া ছাই-
নীরো তুমি বাঁশরী বাজাইও!

রবিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৮

অসমাপ্তিকা ৪

ভালবাসা?
সে কি প্রথম পৌষ প্রাতে অপেক্ষায় থাকা
নগর ঢাকার কোন রুক্ষ সড়ক পাশে বিমূঢ় পুরুষ?
অতন্দ্র অবয়ব শুষ্ক ধুলোমাখা প্রসাধনে কতটা প্রসন্ন,
কতটা বাতাস টানে বিপন্ন ফুসফুস- মানবরন্ধ্রপথে
তার হিসেব রাখে অস্থির পদবিক্ষেপে?

সে কি শুধু অনুভব?
বিমুগ্ধ অনুভব বিমুক্ত চুলের ঘ্রাণ থুতনির নিচে?
থিতু হয়ে গেছে যেন কবে কোন যুগে কার বিলোল পরশ,
কুচযুগ থেকে থেকে বুকে এসে লাগে! সমুখে ও পিছে
খুঁজে ফেরা বাহুর বেষ্টন? অধর অনুসৃত অতিপ্রেমরস
নিষিক্ত হয় বিজন দুপুরবেলা বিষাদিত মনে?

অব্যক্ত আবাহন দু'চোখের কোনে
সে কি স্থবির ক্রন্দন? নির্নিমিখ? নিভৃতে ফোনে
প্রহরব্যাপী নিরলস কথোপকথন নিশুতি শয্যায়?
আকাঙ্ক্ষা আর উৎকন্ঠার সংবেগ প্রবাহ শুধু?
হা-হুতাশ, উদাস দংশন শুধু অস্থিমজ্জায়
পলে পলে বিষদাঁত বিঁধে?

সে কি কাছে পাওয়া নয়?
সে কি নয় হাতে হাত রাখা?
সে কি নয় ফুলশরে সজ্জিত মিলন বাসর?
কেঁপে কেঁপে ওঠা স্খলনাভিষিক্ত হওয়া প্রমথ যৌবন?
সে কি নয় এক ছাদ, এক দোরে বাঁধা ছোট ঘর?
সে কি শুধু অশ্রুকণায় জমা প্রতীক্ষার ক্ষণ?
সে কি শুধু বেদনায় ছিঁড়ে যাওয়া মৃত নিউরণ
অবিরাম কেঁদে চলে মাথার ভেতর?

ভালবাসা?
সে কি? তবে সেটা কি?

(অসমাপ্ত)

অসমাপ্তিকা ৩

আমার হৃদয় আছে।
এতটুকু দিয়ে অনেক কিছুই দুষ্প্রাপ্য এখানে।
এই সামান্য সম্পদে বেঁচে থাকা দায়।
বেঁচে থাকা সুকঠিন প্রতিক্ষণ লোকসানে
জীবনটা ভারী হয় হৃদয় বোঝায়!

তবুও বাঁচতে হয় ভালবাসি বলে।
খুন করা এর চেয়ে শ্রেয়তর অপরাধ,
অমোচনীয় পাপ, দু'চোখের জলে
যায় না তো মুছে!

তবুও বেঁচে থাকি।
আত্মহত্যা? সে তো অসাধ্য! দুষ্কর!
নয়তো কবেই হত সে মহাপূণ্য কাজ
অতঃপর মিলে যেত অফুরন্ত অবসর,
আকাশের মাঝবুকে তারকার সাজ-
পেলে আমি সুখীই হতাম!

তুমি কেন এত ভালবাস?
আজ আমার কেন এত মৃত্যুতে ভয়?
তুমি কেন অমনি করে প্রাণখুলে হাসো?
আমারো যে থেকে থেকে প্রবল ইচ্ছে হয়
হাসিটাকে বুকের ভেতর বাঁধি।

অনেক কষ্টে কাঁদি।
তুমি যদি দেখে ফেলো! কি জানি কি হয়!

(অসমাপ্ত)

অসমাপ্তিকা ২

শেষ পর্যন্ত আমি নিজেকে মুক্ত করেছি প্রিয়।
এই অত্যাধুনিক কবিতার যুগে জীবনানন্দ নিষ্প্রয়োজন!
নিতান্ত নিষ্প্রভ ন্যাকামি ছাড়া কিছু নয়। জানি যদিও
বক্তব্যে অনেক কিছুই সহজ কিন্তু করে ফেলা দুষ্কর।
দু কদম এগিয়ে চলা কবিতা ছাড়া অনেকাংশে আত্মহনন!
অনেকাংশে অসম্ভবপর!

তবুও মুক্ত করেছি প্রিয়।
রাশি রাশি অলীক আবেগ আবহ নিয়ে হৃদরোগে ভুগি।
এইসব যা-তা না লিখেও তো চলা যায় অনায়াসে ভালো।
তবুও কেন যে কিসের মোহাবর্ত টানে প্রগলভতার পথে
যা কিছু প্রকৃত আঁধার তাই লাগে আলো।

জানো আমি আজ ছ'টা মাস সঙ্গীতহীন?
মন্দ্র সপ্তকে সুরের গাঁথুনি ওঠে কেঁপে। অথচ একদিন
এখানেই আমি জীবিত ছিলাম অকৃত্রিম প্রেমে
পৌষের হিমবাহে, জ্যৈষ্ঠের তাপে
এই মহাবোধিদ্রুমে, বিলম্বিতে লীন।

চুলোয় যাক কবিতা ফবিতা সব!
আমি আজ নিজেকে মুক্ত করেছি প্রিয়!
অবসন্ন আবেশের বিমূর্ত বিসংবাদে জমা হাহারব
বাজুক সঙ্গীতে। ঢের ভাল! কবিতা মরুক!
আমি সুখী হব। তুমি সুখী হয়ো
হাতে রেখে হাত!

লক্ষ জোনাকি রাত জেগে থাক তানপুরা নিয়ে!
কবিতাটা যাক!

(অসমাপ্ত)

অসমাপ্তিকা ১

আমার প্রতিটি সকাল ব্যার্থ তোমাকে ছাড়া।
প্রতিটি রৌদ্রস্নাত পার্থিব দ্বিপ্রহর, পরাঙ্মুখ বিকেলবেলা,
তমসার সায়ংকাল, অনঙ্গের ফুলশর,
পুরুষ-প্রকৃতি খেলা লাগে অসহ্য যন্ত্রণাময়।
তোমাকে ছাড়া ব্যার্থ প্রতিটি মূহুর্ত চরম দুঃসময়।
অলঙ্ঘ্য সাগরের ছিন্ন দ্বীপের মত ভেসে থাকে রাত্রি
চোখের কোটরে, স্বপ্নবৎ বিপন্ন প্রতিটি দীর্ঘশ্বাস
দুরাশার যাত্রী। লক্ষ কল্প দূরে অধীরা হয়ে তুমি কি
অপেক্ষায় আছো এক বুক বিরহ নিয়ে উদাসী বাতাসে?

আমার আকাশ গেছে ডুবে।
কবে কোন কৃষ্ণ কুন্তলার কুঞ্চিত মেঘে প্রণয়ের কৃষ্ণগহ্বর
হৃদয়কে করেছিল গ্রাস, প্রগাঢ় অনুভবে
অধরে অধর মিলে উষ্ণ নিশ্বাস নিভিয়েছিল নক্ষত্রালোক
প্রথম বাসরে প্রমথ দয়ায়। অতঃপর
ফিরেছিলাম মৃত অগ্নিপুরুষ হয়ে। বলেছিলে, 'প্রেম হোক
সুশীতল প্রশান্তা গঙ্গার মত!'

তা কি আর হল?

এখন প্রতিটি প্রহর কাটে বিরহাহত
দ্ব্যর্থহীন ব্যর্থতা অঙ্কুশ মারে অস্তিত্বের গায়ে,
হৃৎপিন্ড রক্তাক্ত, কিসের আঁচড়ে যেন বর্ধিষ্ণু ক্ষত
বসে গেছে স্পষ্ট হয়ে। বিনা আমন্ত্রণে!

জানি না এ কি ছিল আরাধিত বিধাতার মনে
কোন সে পাপের দণ্ড নেমে আসে বিরহের ক্ষণে
আমি তাতে বারে বারে ক্রুশবিদ্ধ হই!

(অসমাপ্ত)

উচ্ছন্নে গেছি

কবিতা দিয়ে যদি বাঁধা যেত ঘর
জন্ম জম্মান্তর তবে লিখেই যেতাম।
আবিষ্ট অষ্টপ্রহর হে অর্বাচীন ঈশ্বর
কিসের আরাধনায় গেল?
প্রবল বিরাগে ভর্তৃহরিও কবিতা লেখে
'বৈরাগ্যশতকম'- মাথামুণ্ডুহীন! অকাল ভর্তৃহীনার
ভগাঙ্কুর শেষে বাৎস্যায়নে খেলো।
আমি মাৎস্যন্যায় দেখি কি চমৎকার!

চেতনা পথচ্যুত শিশ্নরন্ধ্রপথে প্রদোষকালে,
উপগত কামনার উষ্মা উদগীরণে আমি সচকিত।
নিদ্রালসা উষসীর শাঁখা সিঁদুরের জালে
কি পরাক্রান্তা মায়া প্রণয়ে রুদ্ধ হল, পৌরুষ 
আর সব কাজ গেল ভুলে!

যদি এতসব ছাইপাশ লিখে গড়া যেত সংসার,
বুক যেত মুদ্রাস্ফীতিতে ফুলে দু'ইঞ্চি বেশী,
তবে যত খুশি লিখতাম গোটা রাতভর।
বোধ-অগম্য শব্দোপমা জুড়ে বাঙনিষ্পত্তি করানো যেত
আনকোরা পাঠকের, জুটে যেত হাততালি,
অথচ জুতোর সুখতলা আর বিড়ির সুখটান
অলক্ষ্যে চলে যায় বিলুপ্তির পথে। রাজপথে ধুলোবালি 
গিলে রৌদ্রপক্ব হয়ে মিলে যেত কবির খেতাব।
সংসার তবুও হত না।

তাই আর লিখি না গো,
একেবারে উচ্ছন্নে গেছি হৃদয়কে নিয়ে।

সত্য প্রেম

আমি সবটুকু বলতে পারি না।
কেন না সত্য প্রেম অব্যক্ত থাকে।
কেন না সত্য প্রেম অসংজ্ঞায়িত।
আমি সবটুকু বোঝাতে পারি না।
জীবনটা অনুক্ত সংলাপের বোঝা
যার প্রতিটি শব্দ গেছে তোমার পদাঙ্ক ধরে
দিশাহারা পথে।
কেন না হৃদয় বিপথগামী!
কেন না সত্য প্রেম মানে বিপদগ্রস্ততা!
আমি আর ছাড়তে পারি না।
জমে যাওয়া কান্নায় নেশা ধরে গেছে।
কান্নার প্রতিটি বিন্দু গেছে বিপর্যয়ের দেশে
আঁচলের হাওয়া লেগে বিরানভূমিতে।

দিনান্তের ঝাপসা মেঘে চোখ ডুবিয়ে দিই।
যা কিছু ডুবে গেছে এভাবে ধীরে ধীরে
তার সবটুকু মনেও পড়ে না।
কেন না স্বপ্নেরা বিস্মরণীয়।
কেন না আকাশ বদলে যায় আকাশের মত
সে যদিও অস্থির তবুও অনপেক্ষ।
আমার ব্যতিক্রম।

আর আমি মরতে পারি না।
চলমান মৃত্যু হয়ে তোমাকে জড়াই।
হৃদয় আর মস্তিষ্কের ক্রুর দ্বন্দে এই যেন মনে হল
তোমাকে পেলাম, এই যেন মনে হল
তোমাকে হারাই।
হারাই হারাই- যেন এটুকুই সত্য বোধ
বাকি সমস্ত পরশ সুখ, বাঁধভাঙা অনুরোধ
সংযত হবার- সব মিথ্যে ছিল!

মনে হল পুড়ে যাওয়াটাই প্রেম।
আর বেশী কাছে না এলেই ভাল।

শকুন্তলা - ২

তবু কোন অন্ধজনে ভালবাসা দিয়া
নয়ন হইলে প্রিয়া সংসারের পথে।
কি সুখেরে বাঞ্ছা করি নিজেরে বাঁধিয়া
সারথী হইতে চাহ দারিদ্র্যের রথে?
এত প্রেম বক্ষে যদি দিয়াছিল বিধি
কেন না করিল তবে তিলমাত্র কৃপা!
কেন বা কাড়িয়া নিবে সর্বস্ব নিধি
ঈশ্বরের দয়াপাত্র কেন এত মাপা!

যাহারে চাহিয়াছিলে দুই বাহুডোরে
সে জন ঘুমায়ে রহে বিটপীর ছায়ে
অস্তগামী দিনমণি প্রেমরিক্ত করে
জাগাইতে ব্যার্থ যারে উষ্ণতার ঘায়ে!
কেন হৃদে শকুন্তলা আকুলিয়া কাঁদ?
দূরের দূষ্মন্ত্যে কেন এত প্রেমে বাঁধ?

____________________
কখকখগঘগঘ চছচছজজ

আলো জ্বেলো

তোমাকে আমার চাই।
চাওয়াটুকু অপরাধ নয়। হতে পারে নির্বুদ্ধিতা।
হতে পারে অবোধের অসীম বিলাপ,
কবিতার অপলাপ। ওগো দীপান্বিতা
তবু বলি- আলো জ্বেলো।

আঁধার শরীরে এক টুকরো আলোক দেখে পতঙ্গের মত
আমি ধেয়ে আসি। হতে পারে এ পিপাসা পরম মৃত্যুর
তবু জানি শান্তি পাব। ওগো দীপান্বিতা তবু কিছু সুধা ঢেলো
অধরে অধরে। হতে পারে এক বিন্দুধার দূরাগত বিধুর 
অবিনাশী প্রেমিকের মোক্ষের ধন!

ওগো দীপান্বিতা, তবু বলি দ্বার খোলো।
আমি স্খলিত হই বোধিদ্রুমের তলে আগুনের হল্কা দেখে
তোমার গলিতচিকুরে অথবা আলুলায়িত অঞ্চলে।
একদিন হে তপস্বিনী, তপস্যা ভোল।
এ আহবানে পাপ কিছু নেই!

ওই যারা প্রাগৈতিহাসিক আছে, মিথ্যাকে সত্য বলে
তাদের কথাকে আমি এতকাল মেনে ধ্যানস্থ ছিলাম।
ছিলাম চোখের কোনে প্রেমাশ্রু হয়ে তোমার কপোল বেয়ে
গঙ্গার মত পূতসলিলা আমি নেমে গেছি তিরতির করে।
ক্রন্দসী, কি সাধনে বল আমি তোমাকে পেলাম?

আজ শুধু তোমাকে একান্তে চাই,
জনান্তিকে, সঙ্গোপনে বাসনার নাগপাশে।
এ আহবানে পাপ কিছু নেই।

অনন্ত লজ্জার রাত্রি, জানি মুখ লুকোতে চাও
তবু বলি- আলো জ্বেলো।

একটি মন্তব্য

জানি এ যে মৃত্যুসম
হৃদয়ের সাধ মম
তবু প্রাণে কি আশায়
তারে ধরিলাম!
কি ছিল বিধির মনে
নিরবধি নিরজনে
যুক্তকরে একদিন
তারে শুধালাম!

আমারে করিল বিধি
কাঙালের প্রতিনিধি
বক্ষমাঝে প্রেম দিয়া
দহি সর্বসুখ!
নহিলে জনম বৃথা
কে লিখিত হে কবিতা
কে দেখিত দিবারাত
প্রিয়া তোর মুখ....

নয়নের নীরে?
সখি আজিকে বিধুর নিশি
বিরহের তীরে
চল দুজনে বেড়াই!

এত ভালবাসো কেন?

আমাকে এত ভালবাস কেন?
আমি তো মানুষ! 
মরণোন্মুখ মনুষ্যত্ব নিয়ে জীবিত ছিলাম!
এত ভাল কেন বাস? 
এখন জীবনকে মনে হয় মূল্যবান কিছু,
ইচ্ছে হয় আরও বাঁচি, বাঁচি আরও দু'শো-
বছর চোখে চোখ রেখে!

আকাশকে মনে হয় আগুন, আগুন!
আগুনকে মনে হয় ধানমন্ডি লেক!
মনে হয় প্রথম পরশ, দু'হাতে দু'হাত রেখে
প্রণয়ের মন্ত্রাভিষেক
জ্বলে ওঠে চিন্তাগ্রস্ত রাতে তন্দ্রা অতলে!

এত ভাল কেন বাস বল!

শিশুকালে শেখা সব নীতির শিক্ষা, সব ভুলভালে ভরা
বমি আসে, কেঁদেকেটে অসুস্থ, চোখ ওঠে ফোলে,
চরিত্র নাকি সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ!
এত বড় ভন্ড কথায় আমার প্রবল আস্থা ছিল একদিন
আজ পকেটে হাত দিলে বুঝি, ওয়ালেটের গভীরে গিয়ে বুঝি
আমি কতটা নির্বোধ হলে এসবে বিশ্বাস রাখি!

এত কেন ভালবাস?
আমি তো মানুষ।
জন্মে জন্মে দাস হতে রাজি।
এ জন্ম বিলিয়ে দিতে পারি হাসির শব্দ গেঁথে
আমার হৃদয়ে নিভৃতে। প্রতিটি নিশ্বাস বাজি-
রাখতে পারি কবিতা লিখে।
এর বেশী কি করতে পারি বল?

এত ভালবাসা পেলে অসহায় লাগে!
উঠে দাঁড়াতে গিয়ে দেখি পঙ্গুত্বের গ্রাস ধরেছে আমায়
বহু বহু আগে। তবু যে কি অজানিত প্রেরণায় দু'হাত বাড়াই
স্নায়ুকলা কেঁপে ওঠে, ঝংকার জাগে-
রক্তকণায়, তার কোন ব্যাখ্যা যে নেই!

এ পৃথিবী কি প্রেমের মূল্য দেবে?
অথবা আমি কি দেব তোমায় পূজার বেদী ছাড়া?
উচ্ছন্নে যাওয়া ছন্নছাড়ার কাছে কিই বা পাবে?
শুধু একগাদা বর্জ্যকবিতা! যে মানুষ বাস্তুহারা
সে শুধুই প্রেমিক! এর বেশি কিছু নয়!

এত ভালবাস কেন?
খুব ভয় হয়। 
আতঙ্কে ঘুম নেই আজ ক'টা দিন
ক'টা দিন জগতের সবটা সময়
আত্মহন্ত্রী হয়ে গেছে!

তোমাকে পেলাম

আমি জানি আজ এই গোটা আকাশটাই আমার
আমি বুক ভরে নিশ্বাস নেব, বাতাস দিয়েছে দাসখত
সে এখন আমার অধিকারে, আমি জানি, আজ জানি
এই তারাগুলো সব আমার জন্য জ্বলে, উল্কারা ছোটে
আমার অন্বেষণে! পৃথিবীর সকল সত্য, যাবতীয় বিপর্যস্ত মত
সব আমার পক্ষে আজ, আমি জানি!
জানি আজ তোমাকে পেলাম!

জানি তুমি বিহ্বলা, বিগত তন্দ্রা হয়ে চাঁদ দেখ
আমি জানি পরিত্যক্ত ভীতি ও বিরহ তোমাকে পোড়ায়
একান্তে আমার মত, অথচ দেখো আজ আমি নির্ভার!
দেখো আমি আমার আমিত্ববোধ তোমাকে দিয়েছি
তাই আজ যা কিছু ছিল চোখ বুজে হারাবার
আমি তার সবই যে পেলাম।
আমি তোমায় পেলাম!

আমি জানি দুনিয়া নিজের নিয়মে ঘোরে।
অথচ সে আজ থমকে যেতে পারে তোমাকে ভালবাসি বলে
সব শেকলবৃত্তের বাইরে গিয়ে মারাত্মক প্রেমের জোরে
জানি তুমি আমি মরতেও পিছপা হব না একসাথে।
আমি জানি আজ এই বিরহের বিতস্ত্র মধ্যরাতে
সব কথা আমাদের হবে নিতান্ত আমার
কারণ আমি আজ তোমাকে পেলাম!

আমি আজ সবই যে পেলাম
তোমাকে পেলাম নিবিড় বেদনাতে
যেন কয়েক জন্ম পর!

দুখের ঊষা

ঊষা আমি তোমাকে দেখি না কেন?
সূর্যের আলো এসে শয্যায় লাগে, কটকটে আলো।
ঘুম ভাঙে, বুক ভাঙে- তোমাকে দেখি না কেন?
মনে হল গতরাতে ছিলে, এখনো চুলের গন্ধ পাই বিষন্ন নিশ্বাসে, 
তোমার নিশ্বাস কাঁপে সুরে -আমার দীর্ণ বুকে।
উষ্ণতার বিলোল রাতে আবেশিত হাত ছিল গভীর বিশ্বাসে
আমাকে জড়িয়ে, অথচ ঘুম ভেঙে তোমাকে দেখি না কেন?
তোমাকে দেখি না কেন নিদ্রাতুরা চোখে
তাকাতে আমার দিকে আরেকটু ঘুমাবে বলে সকালবেলায়?
আঁকড়ে থাকতে সকল অস্তিত্ব আমার অত্যন্ত ভালবেসে
প্রগলভা হয়ে, তুমি বাঁধতে আমায়
আঁচলের প্রান্তদেশে চাবির গোছার মত প্রতিদিন।

ঊষা, এমন হয় না কেন?

প্রতিদিন ঘুম ভাঙে, পাঁজরার নিচটাতে চিনচিনে ব্যাথা
তুমি যে কালকে ছিলে, এটা কি স্বপ্ন ছিল, এটা কি মিথ্যে কথা?
আমি উন্মাদ বলে হল্যুসিনেশনকেও সত্য বলে মানি?
তুমি কি সত্যি ছিলে না পাশে?
তবে এখনো কিসের স্পর্শ পাই আমার বিপন্ন দেহে
রোজ রাতে? কার হৃদয়ের শব্দ আসে
আমার হৃদয় নিতে চুপিসারে, ধীরলয়ে, মৃদু মৃদু পায়?
যা কিছু প্রতিরাতে সত্য বলেই জানি
ঘুম ভেঙে কি করে ভাবি সব ছিল ভুল?
সবকিছু কি এভাবেই ভুল হয়ে যায়?

ঊষা আমি তোমাকে দেখি না কেন?
তোমাকে দেখি না কেন ঘুম ভাঙলেই?

উত্তর খুঁজি

কৃষ্ণপক্ষ আঁধার করেছে কুঞ্চিত কালোকেশে
দীঘল রজনী প্রাণের বঁধুয়া সেই কেশ ভালবেসে
উতলা হয়েছি, উজাড় করেছি যত প্রেম ছিল বুকে
গহীন মনের জ্যোছনা দেখেছি ভুলে যাওয়া সেই মুখে
গভীর নিশীথ বেলা;
দূর সাগরের উজানী বাতাস এলোচুলে করে খেলা
আমি বিস্ময়ে চেয়ে রই, তুমি বলেছিলে প্রিয়া হেসে
'চুপ করে কেন? দুটো কথা বল। দুটি ক্ষণ কাছে এসে।'

আকাশে তারার মেলা
বিস্মৃত কোন অতীতের দুখে ছিঁড়ে ফেলা ফুলমালা
মাঝেমাঝে খুব কাঁদে, আমাকে ভাবায় নিদারুণ তাপে
তাসের দূর্গ বাঁধে, ক্ষণভঙ্গুর জীবন তরণী অজানিত অভিশাপে
তটে একা বসে থাকে।
এতকাল পরে মনে কি পড়ল ভুলেছিলে সেই যাকে
যে পুরুষ ছিল গত জনমের পিয়াসী প্রবল প্রেমিক
যে ছিল তোমার আঁচলে বন্দী, উদাসী, দিগ্বিদিক-
যে শুধু খুঁজেছে পাগলের মত তোমার হাসির মাধুরী
যে পুরুষ ছিল ক্ষতবিক্ষত বিঁধিয়ে প্রেমের ছুরি
গোপন হৃদয়যন্ত্রে
কি করে ভুলেছ সেই অভাগারে? কোন সে যাদুর মন্ত্রে?
এর উত্তর আমি খুঁজি
কেন তুমি এত দেরী করে এলে? 
খুব ব্যস্ততা ছিল বুঝি!

(মুক্তকছন্দ)

ঘুম নেই মা

আমার রাত রাত ঘুম নেই মা
লক্ষ লক্ষ জোনাকীর মত দুঃশ্চিন্তা জ্বলে মাথার ভেতর।
ডাগর চোখে ডুকরে ওঠে উতলা অন্ধকার
আমার ভালবাসা, আশা ও সংসার
যা কিছু দেখি রাতের শরীরে নিরব নিথর
লুটিয়ে থাকে, আমি কি তার যোগ্য মা?

আমি কি ভিক্ষুকের সিংহাসন ছেড়ে নেমে এলাম
অমরাবতীর ধুলোমাখা পথে কারো পায়ের ছাপ দেখে?
তারপর যে কত মূহুর্ত গেল, কত স্বপ্ন এল কত রঙ মেখে
তার সবই কি আমার হবে মা?

কি প্রচণ্ড বিরহ আর দুরূহ বাস্তববোধ আমাকে পিষে পিষে মারে
আমি প্রেমের সাগরে কি সুখে ভাঙা তরীর পাল উঠিয়ে
অপেক্ষায় আছি, যে আছে ওই যে সুদূর পাড়ে
সে কি আমার জন্যই আছে জন্ম জন্মান্তরে
এলোচুলে তটস্থা আলোর জ্যোতি উদাসিনী?
বল মা, এত সুখ কি আমার কপালে ধরে?

মাগো, জগতে আর কাকে বলি আমি কত অসহায়
কতটা যন্ত্রণায় ইস্পাত কঠিন মনও ন্যুব্জ হয়ে যায়
লজ্জাবতীর মত, এতটা সংবেদশীলতা আমার আছে
জানো তো মা মুখচোরা ছেলেটা কতটা লুকিয়ে বাঁচে
ছুরি বিঁধিয়ে পাঁজরার নিচে কি করে সে হাসে
জানো তো মা, তুমি ছাড়া আর কে জানবে বল?

এটা ছিল ভুল

সুরঞ্জিতা,
দুম করে বিয়ে করে ফেললে।
আমি বলেছিলাম 'এটা হবে ভুল'
তুমি বলেছিলে আকাশটা কত সুন্দর
পৌষের পথ ধরে ফোটা ভাটফুল
এসব দেখেই কাটিয়ে দেবে একটা জীবন
একান্তে নীলের সাথে!
ভালবেসে ভাল থাকা যায় বনে বনে ঘুরে
নল দময়ন্তীর মত, সব বাধা ছুঁড়ে
নিভৃতে দুটো প্রাণ দারুন আশায়, 
খুব ভাল থাকা যায়
পাখির বাসায় দুটো খড়খুটো এনে,
দুটো খুদ কুড়ো খেয়ে!
আমি বলেছিলাম- 'সুরঞ্জিতা, এটা হবে ভুল!'

এখন তো লেগে থাকে প্রতিদিন কলহ বিবাদ
প্রত্যাশার আগাছায় ঢেঁকিগেলা সাধ ঢেকুর তোলে!
সন্দেহ- মন, দেহ সব কিছু ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়
ঘুন ধরা বাসনার ঘুর্ণিত পাকে কিছু কথা মনে পড়ে যায়
আর শুধু মনে হয় 'দূরে যাই চলে-
নীল শুধু ডুবে যাক নীলের অতলে!'

বাচ্চাটাকে কোথায় নেবে বল?
সে তো প্রতিক্ষণে বেড়ে ওঠে যুদ্ধের মাঝে, ফ্যালফ্যাল চোখে
তারও তো কান্না পায়, ভয় লাগে বুকে।
সে তো কিছুই বুঝে না সে কি করে বা এলো;
কার কত ভালবাসা, কত ভুল ছিল
যার ঈপ্সিত ফলাফলে- সে আজ মানুষ!
বাচ্চাটাকে কোথায় নেবে বল?

টেনে টেনে সংসার- কুকুরের লেজের মত
যত টানো মনে হয় তবু বেঁকে যায়!
আমি তো বলেছিলাম- 'সুরঞ্জিতা ভুল হবে বড়'
তুমি হেসে বলেছিলে 'সে আমার দায়
তুমিও তোমার মত যাও বিয়ে কর
সুখী হও, আমি রব নীলনদে পদ্মের মত।"
নীল এসে বলেছিল সে আজ আহত
কবিতাশূণ্য হয়ে নেশায় গোঁঙায়!

সুরঞ্জিতা,
দুম করে বিয়ে করে ফেললে।
আমি বলেছিলাম, 'এটা হবে ভুল!'

সন্ন্যাস মন্ত্র

ওহে অতন্দ্র, চোখ বোজ।
হায়েনার নখর বিষিয়ে তুলেছে রাত্রির বুক!
বিবেকে বৈকল্য এল, কৈবল্য লাভের কথা
ভন্ডরা বলে, তারা বলে ধ্যানী হও
হৃদয় উচ্ছন্নে যাক, মৈথুনোদ্রেক চাপা থাক
পাথরের মত, স্বমেহনে কেঁপে ওঠ থরথর করে;
মুখে বল তুমি মদনবিজয়ী বীর, পঞ্চশরের ক্ষত-
মুক্ত, অচঞ্চল, নিষ্কম্প দীপশিখা, অকলঙ্ক, ঝড়ে
পদ্মাসনস্থ বুদ্ধ সেজো, সেজে থাকা শ্রেয়,
হতে যাওয়া অতীব দুষ্কর!
লোকে তো পদধূলি আপনিই নেবে!

কলিকলুষ রঞ্জিত গৈরিক যোগী, ধনতন্ত্র তস্কর
সবার সম্মান আছে রাজাধিরাজ! কাঁঠাল ভাঙো
সমাজের মাথার ওপর, ভেঙে খাও, আমরা নিরব!
অর্থ নিও, আশির্বাদ দেবে, ধর্মদেশনা হবে ব্যবসানির্ভর
আমরা নিরব! আমাদের জুজুবুড়ি চারপাশে ঘোরে,
তুমি সুযোগটা নিও!

সবকিছু চলে গেছে প্রেমের বিরুদ্ধে আজ,
তোমাদের ত্যাগের মন্ত্র, ভোগবাদ বিরোধিতা সব
উচ্চমার্গের উন্নাসিকতাজাত অপরিপক্ব অবদমিত বাসনার
ক্রন্দনধ্বনি, তা দিয়ে ভুলিয়ো জগত, ভালবাসাকে বোলো
মায়ার সংসার, অতএব ত্যাজ্য বটে!
গুপ্তকামে জ্বলে যেও, আর সত্যের বিরাট সংকটে
মিথ্যাকে দিও গভীরে আশ্রয়!
লোকে তো পদধূলি আপনিই নেবে!

অনিদ্র দাবী

প্রতিদিন একটা দাবী বুকের ভেতর তোলে মুষ্টিবদ্ধ হাত
আকাশের দিকে, রূপের মশাল জ্বলে, রিরংসু রাত;
শ্লোগানে মুখরিত ফুসফুসে ফুঁসে ওঠা অ্যালভিওলাই
জীবন যদিও ভাসে কচুরিপানার মত নিরলস স্রোতে
তবু দু কদম সাহসে বলি 'আমি তোমাকেই চাই!'
একান্ত অধিকারে গ্রীষ্মে ও শীতে- একই শয্যায়!

ভেবো না এত কথা নৈশকালীন নেশা, কবির খোয়াব,
অতন্দ্র বিরহীর বিভোল প্রলাপ সব ছেঁড়া ছেঁড়া কথা
মাথামুন্ডুহীন যত আবেগের বুনো চাষ, উদাসীর ভাব
আমাকে আশ্রয় করেছে ক্রমে, ঘনিয়েছে ব্যথা
রজনীর অন্ধকারে, জানালাকে খোলা পেয়ে লুটেরার বেশে
কবিতার বয়ান শেষে ক্রুর হাসি হেসে
এলো প্রেম, পোড়াতে আমায়!

কোঁকড়ানো কালো চুলে, খোঁপাজোড়া গাঁদাফুলে
অথবা লোহিতবসনে যদি লোচন লুব্ধ হয়,
তবে বল আমার কি দোষ তাতে? অথবা তোমার কি দায়?
অথবা কঠিন সংসারধর্মে কার কত ক্ষতি হয়?
তবু দেখি বহু হাত একসাথ, বহু বাধা বয়ে যায়
গড়ে তোলে আচমকা বিকট দেয়াল।

বুকের ভেতর দাবী গর্জে গর্জে কাঁদে প্রতিটি পাড়ায়,
মহল্লায় হল্লা করে, আসরে চমকে ওঠে বিধুর খেয়াল
জন্মান্তরের সাধ, অসাধ্য ভালবাসা আমাকে তাড়ায়
তোমার হাসির পিছে, পেলব বক্ষোজ সুখে, উন্মত্ত তাল
কেটে কেটে নটরাজ মহাক্লান্ত, কবিতা বিভোর!

তোমাকে ঘুমাতে হবে,
আমি আজ জেগে থাকি, রাত থেকে ভোর!
তোমার শরীরটা ভাল নেই প্রিয়।

A Poet

He, who is a poet can never claim a life
Can never cherish a dream, or can never strive
For a hope, for a tiny desire to fulfill
Can assume a pretension of bliss, till
He is alive, for eternity he has to lie!

And I never wanted to be one of them
Behold! My utter despair overwhelmed
Everything, a flower without a stem
alike, I am alive, and I cry!

Passions for love, lust and a family
Accomplish a friend, a partner, sounds silly
To me, thus life is harsh and rude
The intermittent judgement of bad and good
Of a false philosophy may become a poem!
A poet has a mind, he can always blame!

দুর্গতিদায়িনী

দুর্গতিনাশিনী তোরে যে বলে বলুক
আমার দুর্গতি দেখি ক্রমবর্ধমান
নিয়তির দুষ্ট চক্র যেভাবে চলুক
ভাবি না আমি যে তোর যাচিত সন্তান!
ধরণীর ধম্মকম্মে ছাই ভস্ম মেরে
বুকের প্রদাহ বেঁধে কবির খাতায়
আমি আছি মৃত্যুমুখে আলো অন্ধকারে
কলঙ্কের সর্বভার নিয়েছি মাথায়!
কে বলে জননী তুই! মাটির গাঁথুনি!
স্নেহহীনা পুত্তলি! কত পূজা পাস!
ধিক তোরে নিদয়িনী, অন্তরের ধিক!
চলে যদি যাবি তুই, একেবারে যাস!

অনন্ত দুখের রাত প্রলম্বিত হয়
বেঁচে আছি এটুকুই বিমূঢ় সান্ত্বনা
যে কদিন বেঁচে রব বেঁচে রবে ভয়
এ জীবন বয়ে চলা নিছক যন্ত্রণা।
তার মাঝে দেখি তোর খিলখিল হাসি
সন্তানের অশ্রুজলে কত বিনোদন,
ঘৃণায় বলি না আর তোরে ভালবাসি
ঘৃণায় করিনা আর ও মুখ দর্শন!

দে দে রে অভিশাপ, চূর্ণ হই তবে
জননীর ধর্ম তুই শিখেছিস ভালো!
কি হবে রে যদি এই তুচ্ছ মরে যায়
সহস্র প্রদীপে তবু তুই পাবি আলো!

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...