যদি এইসব অবান্তর সমাজ সংসার না থাকত চোখের সামনে
না থাকতো অনেকগুলো কঠিন হাত, অনেকগুলো উদ্বিগ্ন রাত-
তবে আমি অনায়াসে ভুলে যেতাম তোমার দিব্যি খেয়ে!
ভুলে যেতাম নাগরিক ষড়যন্ত্র, প্রথাবদ্ধ নৈতিক স্বৈরাচার
ডুবে যেতাম ফিলোসফির পাতা ভুলে কবিতার স্বচ্ছ খাতায়!
আমি ঘুরে বেড়াতাম না এখানে ওখানে সারাদিন হন্যে হয়ে-
দু’কদম স্বাধীনতা ভিক্ষার ধন হত না আমার, আমার মাথায়
দৈনিক এতসব আবোল-তাবোল বোল গজাত না যখন-তখন!
যদি এইসব উদ্ভ্রান্ত মনস্তত্ববোধ, আদর্শের ফোবিয়া না খেত-
কুঁড়েকুঁড়ে কিশোর মগজ তবে এতদিনে আমি ভরা যৌবনে
এসে ঘোড়ার ঘাস কাটতাম না, আমি পরীক্ষার খাতা কাটতাম
রাতভর চেয়ারে বসে, ঘুমাতাম টেবিলে মাথা রেখে, তারপর-
ছাপোষা জীবন ছারপোকা হয়ে জাগিয়ে দিত একদিন সুঠাম সকালে।
আমি ভাবতামই না অধর্ম বিধর্মের কথা, ভাবতামই না একদম-
গেঁয়ো মোড়লের হাঁকডাক, প্রস্তরীভূত দেবতার অমোঘ বিধান,
আমি মানতাম না কোনদিন পূঁজিবাজারের দম্ভ শাসন, শ্রেণীশৃঙ্খলে
বাঁধা পড়তাম না কোনদিন, আমি পাখি হতাম, তুমি ডানা হতে
আর এইসব নিকৃষ্ট খাঁচার ভয় আমি ছুঁড়ে দিতাম পৌর আস্তাকুঁড়ে।
তারপর শুধু উড়ে চলা থাকত, থাকত নীল আকাশ; এখনো আছে-
তবে স্থবির লাগে, সারাক্ষণ মেঘলা মেঘলা লাগে আষাঢ়ের মত।
যদি এরকম উদ্ভট দৃষ্টি না হত আমার, আমি দেখতে পেতাম সবই-
তোমার মতন করে তবে এসব ঘুন ধরা যুক্তি আঁকড়ে ধরব কেন?
পঙ্গুত্বের অসহায়ত্ব নিয়ে এত লেকচার কি করে দিতাম বল?
এখন কবিতাগুলোও অপুষ্ট বিকলাঙ্গ মনে হয় আমার ঔরস বলে-
তেজহীন শৌর্যহীন হয়ে জন্মগত পাপ বইবার দায়ে বদ্ধ কথামালা যেন!
যদি আমার ভেতরে কেবল আগুন না থাকত, কিছু বরফও থাকত-
গলে যাবার, তবে আমি ভয়ও পেতাম না, আমি আরো কাছে আসতাম।
তুমি প্রবল দাহ্য বায়বীয় অনুভূতি এরকম একটা ক্ষ্যাপাটে তত্ত্ব যদি
আমি না বানাতাম রাত জেগে তবে আজ এত কথা নিষ্প্রয়োজন ছিল।
আমার অতলান্ত পাগলামোর মাঝে শুধু একটু অস্পষ্ট সুস্থতা- তুমি
কেবল তুমি, এইটুকু স্বাভাবিক চেতনা যদি আরেকটু প্রশস্ত পথ পেত
অভয়ে চলার তবে এত বেদনা হতনা,এত কবিতাও হতনা এটাও সত্যি!
__________________
৩১ মার্চ, ২০১৫।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন