বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬

কুহক

কিসের কুহকে ভুলি মনরে ভুলিয়া গেলি 
আপনার প্রাণনিধি, জীবনের ধনে? 
কাহার ছলনাবলে জ্বলিয়া এ প্রেমানলে 
বিনিদ্র নিশি যায় কাঁদি প্রতিক্ষণে? 
অতল দুখের আশে কে বা কারে ভালবাসে 
এহেন প্রেমের রীতি কে শিখালো তোরে? 
আপনা অনলে ফেলি, হৃদয়ে দুপায়ে দলি 
সুখহাসি মুখে আনি ভুলাইবি কারে? 
মিছামিছি অভিমানে অযথা সঁপিলি প্রাণে 
দয়িতার কর ত্যাজি দানব-দমনে! 
এ রণে না পাবি জয়, তিলে তিলে হবি ক্ষয় 
তীরবিদ্ধ বিহগসম বিভোল রোদনে।

৩১৭১৫

অস্ফুট আর্তি (রম্য)

সস্তা কথার বস্তা ঝাড়িয়া 
খেতাব নিয়াছি 'কবি' 
যাহা মনে আসে তাহা লিখে যাই 
মজা পাই তাতে খুবই! 
ছন্দের জ্ঞান ইহলোকে নাই 
পরলোকে জানি পাব না 
তবুও আমার পাঠক অনেক 
পাঠকেরা এত বোঝে না! 
আমি কি যে লিখি নিজেই বুঝিনা 
পাঠক বুঝিবে কেমনে? 
তবুও তো ইহা কবিতাই হয়- 
পড়েছিনু ব্যাকরণে! 
বানানে আমার বারআনা ভুল 
নিন্দুকে করে নিন্দা 
ওসবের আমি করিনা পরোয়া 
মরি আর থাকি জিন্দা! 
রবিঠাকুরের জামানা যে নাই 
বেকুবেরা তাহা মানে না, 
আমার কবিতা নবযুগবাহী 
অধমের দল জানে না! 
শ্লীল অশ্লীল- বলে কিছু নাই 
কবিতায় চলে ভাব, 
সে আবার কিসে কবিতা হইল- 
যদি শরীরে না বাড়ে তাপ? 
মডার্ন লোকেরা প্রশংসা করে 
বাহ! বাহ! কবি বেশ! 
পুরান পাপীরা হিংসায় মরে- 
আসরটা হল শেষ! 
আমার লেখার মাধুরী ইহারা 
বুঝিবেনা কোনদিন 
সাধু-চলিতের মিশ্রণে ভাষা 
হয়েছে নূতনে লীন! 
আমি যাহা লিখি তাহাই কবিতা 
তাহাই নূতন ছন্দ 
চাঁড়ালের দল পিছে ঘুরে সদা 
সদা করে গালমন্দ! 
ঈশ্বর এই দানবদিগের 
বুদ্ধি করহে নাশ, 
দিবারাত এরা পেছনে আমার 
দিতেছে কেন হে বাঁশ?

৩০৭১৫

নারী ও নরের প্রতি

একদিন স্বর্গের সুমিষ্ট ফল খেয়ে 
খেয়েছিলে সম্ভ্রম একে অপরের, অতঃপর 
ভূমিতে পতন, যবনিকাপাত, আদিম উপাখ্যান গেয়ে 
বুনেছিলে সংসার অক্ষতযোনি ছিঁড়ে, বেঁধেছিলে ঘর 
পুরুষের দম্ভদীপ্ত শিশ্নকে স্তম্ভ করে, দু'টি হাত ধরে দুয়ে 
চলেছিলে জলশূন্য মরু, জনহীন ধূসর প্রান্তর 
শ্বাপদসংকুল বনতল তুচ্ছ করে ছিলে একসাথে 
ছিলে রৌদ্রতপ্ত দিনে, ছিলে মৌসুমী রাতে 
ছিলে সঙ্গমরত- ছিল নৈমিত্তিক সমুদ্রমন্থন 
অমৃত আশাতে! 

যখন হলাহল উঠে এল, বিস্বাদের তীরে বসে 
বিষাদিত মনে ডেকে গেলে 'চন্দ্রমৌলীশ্বর' 
গরলশমন প্রভু, কন্দর্পের শর- 
দগ্ধ কর ত্রিনেত্রের কোপে। 

অতঃপর বিধাতার মৌনতা, তবুও 
অভ্যস্ত প্রণয়বোধে দেহলতা কাঁপে। 
তবুও নারীর চেতনাজুড়ে নর প্রতারক 
নরের হৃদয়ে নারী শুধুই ছলনা যেন, অসীম কুহক! 
কি করে এমন হল, কার অভিশাপে 
কে দেবে উত্তর? 

নর ছাড়া কি করে আসত নারী 
অথবা নারী ছাড়া নর? 

২৯৭১৫

ক্রোড়হারা ক্রন্দন

মাগো, 
কতদুরে আছি পরে- 
একেলা বিজন ঘরে, গভীর রজনী, 
পৌষের শুরু, সকালে কুয়াশা ঝরে। 
শিউলিও ঝরে ছোট আঙিনায় 
দুর পাড়াগাঁয় খেজুরের রস টুপ করে- 
পড়ে মাটির কলসে ধীরে, 
ভাপা পিঠে আর কেউ করেনা তো 
বলেনা তো 'খোকা খা রে।' 
কত কি যে খাই, কত কি যে লিখি 
কত করি আঁকিবুকি 
কর যন্ত্রণা বুকজুড়ে নামে 
কত গায়ে কত শিখি। 
শরীরে ক্লান্তি নেমে আসে মাগো 
জানি তুমিও ক্লান্ত বড় 
তবুও বলি মা আরেকটু জাগো 
ছেলেটাকে বুকে ধর। 

মাগো, 
এখানে বিষের আকাশ, 
বাতাসে আগুন, আমার চামড়া পোড়ে; 
রোদ্দুর দিনে ঘামে নেয়ে এলে 
তুমি আঁচলে জড়াতে মোরে। 
এই শীতল শান্তি কেউ দিলনা মা 
পৃথিবী হিংসার চোটে ঘোরে 
অপেক্ষা আমার হয়না তো শেষ 
কবে যাব ঐ ক্রোড়ে। 


২৮৭১৫

হে দারিদ্র্য

হে দারিদ্র্য তুমি মোরে করেছ মহান 
তুমি মোরে দানিয়াছ পাহাড় সমান- 
জঠরে বিরাট ক্ষুধা, প্রবাসে উপোস 
অসংকোচে মরিবার অদম্য সাহস! 

তুমি মোরে দানিয়াছ বুকভরা গ্লানি, 
ভিক্ষার পাত্র লয়ে ভিক্ষু শূলপাণি 
অন্নপূর্ণার দ্বারে শূণ্যহাতে ফেরে 
নিয়তিরে মানি! 

হে দারিদ্র্য, 
তুমি মোরে শিখায়েছ মান অপমান- 
ত্যাজি দু'হাত পাতিয়া বিনম্র বরাকাঙ্ক্ষা 
অতিদানবের পদে পুষ্পার্ঘ্য দিয়া 
অসত্যের বন্দনা, জয়-গুনগান! 

তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীষ্টের সম্মান 
কন্টক-মুকুট জ্বালা, ক্রুশবিদ্ধ শাপ 
জীবিত থাকার দুখ, দীর্ঘ অনুতাপ! 

-*- 
আমার প্রাণের কবির শ্রীচরনে নিবেদন করলাম।
২৭৭১৫

আমার মা

একটা পরম প্রাপ্তি, পরম প্রশান্তি 
জনম মরণের পারে চলে যাওয়া অবলীলায় 
এর নাম মোক্ষ, এর নাম মুক্তি, এরই নাম- 
বহুপূণ্যার্জিত স্বরগলাভ। শতধা দুখের তপ্ত ধুলায় 
লুটিয়ে পড়েও মনে হয় কোটি জনমের বাঞ্ছিত বিশ্রাম 
আমি এখনি পেলাম, আমি এইতো পেলাম। 

সে আমার প্রথম প্রেম, 
হিরণ্যগর্ভ থেকে প্রলয় অবধি বিধৃত আশ্রয়, 
আমার অশ্রুর অববাহিকা দু'হাতে অবহেলে নির্ভয়- 
করেছে আমায়, আমার সংসার, যোগ আর ক্ষেম- 
তুলেছে আপন স্কন্ধে কতনা দুঃখ সয়ে, 
সে আমার জীবনে প্রথম ও শেষ প্রেম। 

দশপ্রহরণধারিণীর মত 
রক্ষামূর্তি হয়ে বিনিদ্র রাত দিয়েছে উজাড় করে 
আড়ালে লুকোনো প্রাণঘাতী ক্ষত স্নেহের অমৃতে ধুয়ে 
বেঁধেছিল প্রাণ আমারই মুখ চেয়ে। 
সে আমার প্রাণ, আমার মানসপ্রতিমা নারী 
আমার স্বর্গ, আমার মোক্ষ, আমার জীবনতরী- 
আমার মা, আমার দুখিনী মা।

২৬৭১৫

সমাজতান্ত্রিক ডিম


অশ্ববসু ডিম পেড়েছেন আজকে সকালবেলা 
পাড়াপড়শি ভীড় জমেছে লোক হয়েছে মেলা। 
পুরুষ মানুষ ডিমও পাড়ে! এও আবার হয়? 
'কলিকালে অসম্ভব কি?' - বিজ্ঞজনে কয়। 
সকাল থেকেই হুঁশ হারিয়ে আছেন অশ্ব-গিন্নী 
বদ্যি এসে দেখল নাড়ি 'এটা সেরেই যাবে এমনি। 
ভোর রাতেই ডিম পেড়েছেন, ডিমের বরণ লাল 
ভাবছে সবাই এর ভেতরে আছে কেমন মাল! 
গবেষকের দল এসেছে, তুলছে তারা ছবি 
ডিম্ব নিয়ে লিখছে ছড়া, পাড়ার ছোকরা কবি। 
ডিমটা নিয়ে কৌতুহলের সীমার অন্ত নাই 
এমন ডিমের রহস্য কি সেটাই জানা চাই। 
হঠাৎ করেই বিনা তাপে ফেটে উঠল ডিম, 
ডিমের ভেতর আঠার মতন সমাজতন্ত্র থিম! 

২৩৭১৫

আমি আছি কোলকাতা আর তুমি ঢাকা

হোক কিছু খুনসুটি খুঁটিনাটি ঘাঁটাঘাঁটি 
কিছু কথা কাটাকাটি এটা সেটা নিয়ে। 
মন নিয়ে কাড়াকাড়ি দুম করে বাড়াবাড়ি 
দু'মিনিট ছাড়াছাড়ি কিছু দুরে গিয়ে। 

হোক কথা কড়কড়ে দু'চোখে দু'চোখ পুড়ে 
তবু শ্রাবণের ঘনঘোরে দুয়ে মিলে থাকা। 
পাশে বসে ঘেঁসাঘেঁসি ভুলে গিয়ে রেষারেষি 
আমি আছি কোলকাতা তুমি আছ ঢাকা। 

কিছু কথা তুমি জানো কিছু কথা আমি জানি 
মশারিতে টানাটানি রোজ বারোটার পরে। 
আজও আছে মশারিটা ছিঁড়ে গিয়েছিল যেটা 
ধুলো জমে পরে আছে এককোনে ঘরে। 

আমি ঘরে লুটোপুটি তুমি বেশ পরিপাটি 
কিচেনের ঘটি বাটি সব সাজাতে যতনে। 
আজও কিছু আছে তার কিছু করি ব্যবহার 
আর কিছু হল ছারখার স্বভাবের গুনে। 

হোক কিছু অভিমান চিনেমাটি খানখান 
কথায় জ্বলুক কান তাতে নেই ক্ষতি। 
তবু ভালবাসা জিতে যাক বাজিয়ে বিজয় ঢাক 
শ্রীমানেরা ফিরে পাক তাদের শ্রীমতি। 

সেই হাসি সেই চলা সুর করে কথা বলা 
সারা বাড়ি করে খেলা স্মৃতি মেলে পাখা। 
দু'জনে রয়েছি দুরে দু'জন দু'জনে ছেড়ে 
আমি আছি কোলকাতা তুমি আছ ঢাকা।

২২৭১৫

অভিনব প্রতিদান

নিভৃতে যখন হারায়ে গিয়াছে আপনার চিরসুন্দর 
কেন বা তখন নদীরা বহিবে, কোকিলও গাহিবে গান? 
কোমল কমল হৃদয় বৃন্তে চালাইয়া ক্রুর খঞ্জর 
কি করিয়া মাগ চিরদিন হাসি, অক্ষত তাজ প্রাণ? 

মিথ্যার দেশে প্রেমের বিলাপ উপহাসে ভরা প্রহসন 
কি করিয়া আর নিজেরে ভোলাই, বড় অশান্ত পোড়ামন। 
সাহসে ছাড়িয়া বক্ষের নিধি সকলি করেছি দান 
জগত দিয়াছে বক্ষের ব্যাধি অভিনব প্রতিদান! 

২১৭১৫

কি করে ঘুমালে জননী?

আর কত রাত বিনিদ্র যাবে জননী? 
দু'চোখে আঁধার দুরাশার নিশা- 
ভ্রুকুটি ভয়াল চাহনি। 

আরো কত রাত গহীন স্বপনে মিশেছে 
গভীর বাসনা বেদনার জলে ভেসেছে। 
ছোট দুটি হাত কোলে যাবে বলে ক্লান্ত 
জননীর স্নেহ এত দুর্লভ কভু জানিনি। 

আজ বরষার রাতে ফুকারিয়া কাঁদে আসমান 
জমিনে প্লাবন, তার মাঝে তোর কোলহারা শিশু- 
থৈথৈ স্রোতে ভাসমান। 
কেউ বুকে তুলে তারে রাখেনি, 
আঁধারে আমায় ফেলে রেখে একা 
কি করে ঘুমালে জননী? 

সোনার বৌ (প্যারডি)

বাড়িতে গরজে বউ, মনে দুরাশা 
কোথা যাই জানা নাই, নাই ভরসা! 
রাশি রাশি ভারা ভারা 
গালাগালে মুখ ভরা 
জিভ তার ক্ষুরধার, মুখ ফরসা। 
বাড়িতে উঠেছে ঝড়, ঘোর বরষা! 

একখানি ছোট ঘর আমি একেলা 
রাস্তায় কাদাজল করিছে খেলা। 
এ জীবনে দেখি সখা 
বানিয়ে আলুর চখা 
গিন্নি আমাকে খাবে রোজ দু'বেলা, 
রাস্তায় কাদাজল করিছে খেলা। 

দানবদলনী বেশে কে আসে এ ঘরে? 
দেখে যেন মনে হয় চিনিতাম তারে! 
দু'চোখে অনল ধায় 
ভয়ে মোর প্রাণ যায় 
আমি বড় অসহায় 
যাই বুঝি মরে 
দেখে যেন মনে হয় চিনিতাম তারে! 

ওগো আর চেঁচিয়ো না, কথা বল হেসে 
একটু আমার পাশে বসো না গো এসে। 
যেও যেথা যেতে চাও 
আমার মাথাটা খাও 
দুটো কথা বলে যাও 
ক্ষণিক হেসে, 
আমার সোনার বউ এসো না গো পাশে। 

যত চাও তত নাও ব্যাংক খালি করে 
আরো আছে? আর নাই সব দিয়াছি তোমারে। 
এতকাল এ কপালে 
কতটা শান্তি দিলে 
সকল হিসাব ভুলে 
দিয়াছি যারে, 
সে-ই আজ এ কপালে রোজ ঝাঁটা ঝাড়ে! 

ভাষা নাই, ভাষা নাই; ব্যথা বুকে ভরি 
আমার বারোটা বাজে- তুমি সুখে আছ নারী! 
শ্রাবণগগন ঘিরে 
সাদা বক ঘুরে ফিরে 
আমি অসহায় ঘরে 
একা কেঁদে মরি 
এই বার ক্ষমা কর, দুটি পায়ে পড়ি! 

১৯৭১৫

মধ্যবৃত্ত ছন্দ নিয়ে প্রথম চেষ্টা

কখনো যদি পারো কোরো দু'মিনিট অবহেলা, 
তাচ্ছিল্য কোরো, বিদ্রুপ কোরো, কোরো হাসির পাত্র 
কোরো গভীর রাত্রিবেলা- তবু আমাকে স্মরণ। 
ব্যস এতটুকু চাই, এইটুকু মনে করা ভালবাসা মেনে 
যাবতীয় হলাহল, বিষাক্ত বাক্যমালা করব বরণ 
অতি নিদারুণ জেনে- হাসব না হয় অমৃতের হাসি! 
যদি আনন্দ পাও, বিনোদিত হও আমাকে ক্রুশে বিদ্ধ দেখে 
তবে আমি তুষ্ট হব গভীর কষ্ট বুকে ছাইচাপা দিয়ে 
সপ্রতিভ শান্ত দু'চোখে- বলে দেব ভালবাসি। 

১৮৭১৫

এমন দিনে তারে বলা যায় (প্যারডি)

এমন দিনে তারে বলা যায় 
এমন ঘনঘোর বরিষায় 
এমন দিনে শুধু ক্ষিদে পায় 
এমন আষাঢ় ঝড়ে ইলিশ ধরা পরে 
অক্লেশে লালা ঝরে রসনায়! 

সে কথা বুঝিল না কেহ আর 
ব্যার্থ প্রণয়ের সংসার 
দুজনে মুখোমুখি ঝগড়া করে সুখী 
তোমার মুখে কেন এত ধার?       
সমাজ সংসার মিছে সব 
মিছে কিচিমিচি কলরব 
কেবলই ইলিশ দিয়ে উষ্ণ খিচুড়ি খেয়ে 
এমনি দিনটাকে অনুভব 
ঘুমেই মিলিয়ে যাবে আর সব।। 

তাহাতে এ জগতে ক্ষতি কার? 
কি ছিল যাকে তাকে বলবার? 
শ্রাবণগৃহকোনে একদা নিরজনে 
ইলিশ আয়োজন করবার 
গেস্ট ডেকে বানালে গো দরবার!!   

ব্যাকুল বেগে পেটে ক্ষিদে পায় 
ইলিশের পিস পাতে কমে যায় 
কেনগো অকারনে এ ব্যথা দিলে মনে 
রাঁধতে বলেছি তাতে এত দায়?       
এমন দিনে এটা বলা যায়!! 

১৭৭১৫

অনিবেদিত প্রস্তাব (রম্য)

তোমার বিরহে আমি অসহায়, হয়েছি বলির পাঁঠা 
তুমি গো মানিনী হৃদয়হরণী কপালে মেরেছ ঝাঁটা! 
সারাদিন আমি প্রেমে মজে আছি দিনরাত কোন হুঁশ নাই 
তুমি অবহেলে পায়ে দাও ঠেলে ভালবাসা-মুখে দিয়ে ছাই! 

তবুও আমিতো ছাগলের মত খুঁটি বাঁধা আছি তব পায় 
যত দাও তুমি ঘাস খেতে মোরে জেনো প্রিয়া আমি নিরুপায়। 
জানি ওগো জানি তোমার পেছনে ছাগলের দল ভরপুর! 
অনেকের ভীড়ে আমি নগন্য, আছে ধারহীন দুটো শিং ক্ষুর!! 

এত দীনতারে সম্বল করে আমি সাহসে পেতেছি হাত, 
এই হাতে আজ হাত রাখ প্রিয়া, নয়নে নয়নপাত!

১৬৭১৫

দেবযানীর প্রতি

প্রশ্ন কোরো না, 
বরং মূর্খ ও অবনত মস্তক হও চিরকাল 
আমার পায়ের কাছে। আছে যুগলবন্দী শেকল ও শেকড়ের 
দ্বৈত সংঘাত, অধিকতর কালো রাত ভবিষ্যতের পথে 
অগ্রসরমান তাদের ঐকতানে। বিনিদ্র পোকামাকড়ের 
উদ্বিগ্ন সংকেত শুনেও না শুনে তুমি সাহসের রথে 
সারথি হয়ে চলে এস আমার মৃত্যুকূপে 
আমি প্রতীক্ষায় আছি প্রথম নক্ষত্রের 
জন্মক্ষণ থেকে অধীর হয়ে! 
এসব নিয়ে প্রশ্ন কোরো না, 
বরং মুগ্ধ হও আমার স্বৈরাচারে, দুর্বোধ্য কবিতার স্তূপে 
গুঁজে রাখো দাসত্বের স্তবমালা। প্রকম্পিত ভয়ে 
বারবার কর আমাকে চুম্বন আমার কদর্য রূপে, 
আর ঘোষণা কর আমি কন্দর্পসমান, কবিত্বে কচের মত 
আর তুমি দেবযানী; 
শর্মিষ্ঠার কথা আমি ভুলেও ভাবিনি!

১৫৭১৫

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...