সোমবার, ১ আগস্ট, ২০১৬

অবিমিশ্রতা


ঈশ্বর নেই এমন একটা সত্যি কথা আমি কবে বলেছি?
ঈশ্বর আছে এমন একটা মিথ্যে কথা আমি কবে বলেছি?
ঈশ্বর আছে এমন একটা অজ্ঞাত, অননুভূত, অননুমেয়
অস্পর্শজাত মূল্যবোধে আমি কবে ডুবতে বলেছি?
ঈশ্বর নেই এমন একটা প্রমাণাতীত বিরুদ্ধবাদী অশান্ত
অপরিসীম সাহসী কথায় আমি কবে তোমাকে বেঁধেছি?
ঈশ্বরীয় ভাবসমুদ্র আর তার অপনৈতিক অস্থিরতার ঢেউ
যখন খান্ডব দহন হয়ে গিলে খাচ্ছিল একটা একটা মাথা,
মানুষের অমর প্রজ্ঞা, বিরাট বুদ্ধি যখন অপদংষ্ট্র বৃত্তবন্দী
তখন আমি শুধু হতাশ হয়েছি!
আমি তোমাকে হতাশ হতে কবে বলেছি?
নাস্তিকতার নামে অত্যুগ্র আস্ফালন, অনর্থক বাচালতা, কুরুচিপূর্ণ বুলি ঝেড়ে
আস্তিকের মুন্ডপাত যখন অস্ফুট প্রগতিবাদ নাম ধরে নিল
তখন আমি আরো হতাশ হয়েছি অনেককিছুই ভেবে।
আমি তোমাকে কবে হতাশ হতে বলেছি?

আমি তো মুক্তচিন্তক নই।
আমার চিন্তারাশি জন্ম থেকেই প্রভাবিত, মাতৃগর্ভেও তাই।
ক্রোমোজোম থেকে ক্রমবিকাশের পথে আমার মাথার তার গুলো
ডিএনের প্যাঁচালো গঠনে আমিও ঘুরপাক খাই তোমারই মতন।
এম্পেরিসিজমের কয়েকপাতার পরে আমিও জানতে পারি
আমি তো জন্তু মাত্র, সেরা প্রাইমেট, আমি তো মুক্তচিন্তক নই।
আমি কবে বলেছি আমি মুক্তচিন্তাবিদ?
এজাতীয় প্রলাপ আমি কখনো করিনি, এখনো করিনা।
কুবুদ্ধিজীবির পাল আজ রাজত্ব করছে আমাদের সমস্ত টকশোতে,
জনসমাবেশে, যাত্রাপালার পর যাত্রাপালা অক্লেশে দেখে যাই,
টিভির বাক্সে, মাঠে-ঘাটে, খোলাকাশে ভরা ময়দানে
শুনে যাই ঝাঁজালো সংলাপ- কান পেকে গেছে!
ভাঁড়ের দল যারা একটা চাষের ষাঁড় সামলাতে অক্ষম
তারা আজ স্বান্ত্রী-মন্ত্রী, হর্তা-কর্তা-ভর্তা, রাক্ষস-খোক্ষস !
পার্লামেন্ট, আইনগৃহ, মন্দির, মসজিদ, কলেজের ক্লাসঘর,
রাজনীতি, রাজকোষ- সব আজ তাদের ভাঁড়ামিতন্ত্রে শাসিত!
দেখে দেখে আমি শুধু ক্ষিপ্ত, তিক্ত, ক্লান্ত হয়েছি নেতিয়ে পড়া কুমড়ো লতার মত
মাচাঙ ছেড়ে মাটিতে পড়েছি লুটিয়ে!।
ধর্ম, অপধর্ম, বিধর্ম, কুধর্ম, ন্যাকা মানবতাবাদের অর্বাচীন প্রলাপ
আমাকে ছুঁড়ে দিয়েছে হলোকাস্টের মুখে
বহুবিধ অবিমিশ্র দুখে আমি আমাকে নিয়েছি ধুয়ে!
____________________________
৭ এপ্রিল, ২০১৫- চেন্নাই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...