মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আবার কবিতা লিখব

মাঝেমাঝে ইচ্ছে করে- আমি আবার কবিতা লিখব,
আজকাল বহু অজপ্রসূতেরাও দার্শনিক হয়, কখনো কবিও;
আমাকে যে দলেই ফেলো- আমি আবার কবিতা লিখব!

চায়ের টঙে জমাট খিস্তিখেউড়ে গুণ্ডাগুলো গণতন্ত্র নিয়ে গেলো,
ভণ্ড, বিদূষক, কলহকাতর ভাঁড়েরা খেলো বিপ্লবের সমাজতন্ত্র,
মিস্টিসিজম ম'লো ধর্মের আস্তাকুড়ে, সমহারে মূর্খেরা নাস্তিক হল!
শত শত, শত শত।

সৌন্দর্য্যেরও যে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী-
সে কথা ক'জন মানে?

শত শত সেক্সিস্টরা রোমান্টিসিজমের ডিগ্রী পেয়েছে,
রবি ঠাকুরের কবিতা জননাঙ্গ অনুত্তেজক বিধায়
ধ্বজভঙ্গের লিস্টে পেলো সম্মানের সংযোজন,
আমার আর ভরসা কোথায়!
তবুও লিখব ভাবি!

সৌন্দর্য্যেরও যে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী!

চারিদিকে অকালপক্ব নাগলিঙ্গমের গন্ধে বসে ভাবতাম- 
এত উচ্ছন্নোৎসবের ভেতর কবিতা বমির উদ্রেককারী-
আজ কেন যেন মনে হচ্ছে- সে হয়ত উপশমও দেয়।
সে তোমরা যা-ই বল, আমি আবার কবিতা লিখব!

আবার কবিতা লিখব!
কবিতাটি ৩৭৮ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৬/০১/২০১৮, ১১:২৫ মি:

ইদানীং এর কড়চা

চারিপাশে এত বুজর্গ লোক
আমি আনপড় এথা বেমানান!
বাবুদের সুখ ভোদকার মুখে
ভোদাইয়ের বিড়ি সুখটান!

অহো!

খাসা লিখচে গো ভাতঘুম সেরে
কিসে জগতের দুখ বিমোচন! 
হাভাতেরা সব ফুটো থালা নেড়ে
রচে বাবু টাবুদের বিনোদন!

মহাশয়!

আমি মুরুক্ষু লোক, ফেসবুকে বড় অসহায়,
জ্ঞানের দাওয়াই আর কত খাব
বদহজমে মরি, বাঁচা দায়!
কবিতাটি ১২৫ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৬/১২/২০১৭, ১০:১৪ মি:

বাঁচার বিকার

অন্ধকারে ঘুম ভেঙে যায়, কপালে কার চুমো?
স্নেহের স্বরে কে বলল গো, 'খোকা এবার ঘুমো'?

আর জানি নে কার জননী কার কোকেতে দিলি,
মাগো জনম দিয়ে জনম ভরে আকুলিবিকুলি.....

এই ভবের দেহে বিষের বিভব মিশিয়ে দিয়ে তারা,
তুই মাতৃনামে গরবিনী, আমি যে কোল-হারা!

তাতে কি আর যায় আসে মা, আমি আমার মতই মরি,
আমিও তোকে দেখাতে চাই, মরতে কি ভয় করি!

আয় করালী, মুণ্ডস্রজা মৃত্যু মাতম নিয়ে,
নইলে এ ঘুম ভাঙবে না আর, দরজাকবাট দিয়ে....

পড়েই আছি, - বাঁচার বিকার আঁকড়ে ধরে দেহে,
যমের আমি নাম শুনিনি, যমটা আবার কে হে!
কবিতাটি ৯৯ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৭/১১/২০১৭, ০৯:৫৪ মি:

সুরমা নদীর স্রোত

তোমায় দেখি ঝাপসা চোখে ভোর রাতে,
কুজ্ঝটিকার অন্তরালে হাত রেখেছ কার হাতে......
ঝঞ্ঝা বাতাস ঝটকা লাগে খিড়কি নড়ে একলা ঘর,
তোমায় দেখি দাঁড়িয়ে আছো সুরমা নদীর স্রোতের পর.....

প্রকাশের সময়:২০/১১/২০১৭, ১৭:২৩ মি:




সঙ্গীতে রূপান্তরিত রূপটি জুড়ে দেয়া হল

ছিলিমের বিপ্লব

আরও বৈপ্লবিক গাঁজার চাষে ধানের ক্ষেত মাড়িয়ে দেবার সাধ
গুড়েবালি, কপালে ব্যালট সিল, মহাশয় এত অসাম্য গরমিল-
ভাঙব বলেই আমরা কলকে ও কলম এক করে নিলাম।
ফলাফল- এক পাখি হাজার ঢিল, একটাও অব্যর্থ নয়!

যারা বোঝে না কবিতা ও সবজিওয়ালার হাঁকে সুরের কি ফারাক,
তাদের আজ সুসময়- লেকচার দিয়ে ভাগারে মরার!

মহাশয়, ছিলিমটা কৈ?
কবিতাটি ১০৮ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১০/১১/২০১৭, ১৩:০০ মি:

বেঁচে আছি ডাক্তার

বেঁচে আছি ডাক্তার,
আপাতত হার্টে স্টোনটাই ব্যথা,
গলব্লাডারেও কিচ্ছু নেই-
অস্তিত্বের অনিত্যতা ছাড়া!

আমি সুস্থ আছি।

নেফ্রোলজিস্ট দেখিয়ে এলুম,
কিডনির ফাঁকে নস্টালজিয়া জমে গেছে,
শত রেচনেও আটকে থাকে সব!
এক প্রস্ত অস্বস্তির দাওয়াই দিলে, 
বললে মাথায় মৃত্যুর খাঁড়া-
পড়তে দেরী আছে,
এক্ষুণি মরা তো অসম্ভব!

কতটা দুর্ভাগ্য বলুন?
কবিতাটি ১২৯ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৮/১০/২০১৭, ১৭:২৫ মি:

আমার শিক্ষাহীনতা

বারংবার অকৃতজ্ঞ কৃতঘ্নদের সুযোগ দিয়ে গেছি
আরও আরও অকৃতজ্ঞ হবার।
দোষ তো আমারই বলো?
জিঘাংসুদের দিয়েছি জুগুপ্সার ভার। অতি উদার-
হতে গিয়ে ছুরির ফলায় দিয়েছি একটা মাত্র হৃদয়
বারবার, অসংখ্যবার।
আমার আজও শিক্ষা হল না কেন?

আমি জানি কে আমার পেছনে আছে উদ্যতমুষ্টি,
আমারই প্রতাপে কে দেবে অর্ধচন্দ্রদান,
কার মুখে অমৃতফোয়ারা, শরীরে গরলপুষ্টি,
হলাহল-ফনী কে আমার কদলী-দুগ্ধে বাড়ে,
কার একান্ত চিন্তায় আমারই সংহার,
আমি চিনি হাড়েহাড়ে!

আরও আরও নীরবতায় অগণিত বার
আমি দিই বিনয়ী সম্ভাষণ। হুতাশন-
ত্বকীয় রন্ধ্রে পুরে, পরম স্বকীয়তায়
আমি সয়ে যাই বিষবাক্য শাণিত তূণীর,
দ্বিধায়, অনেক দ্বিধায়, আমি এমনই বিধায়-
এরা আমাকে গিলে খায় ছিঁড়ে ছিঁড়ে!

আমার আজও শিক্ষা হল না কেন?
কবিতাটি ১১৮ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১৪/১০/২০১৭, ১৭:৩৭ মি:

অধুনাতন পদ্যকার

আমার হাতে ছন্দ বিকল, 
তবু গদ্য লিখে পদ্যকার।
দোকান জুড়ে কাঁসা পিতল,
-নাম জুড়েছি 'স্বর্ণকার'!

আদা বেচি, কিনব জাহাজ,
বেগুনে চাই হীরের দাম।
যার যা খুশী বলুক গে যাক
-বায়সে গায় স্বরগ্রাম!

তালের জ্ঞানে বেতাল আমি
সব গানে চাই হাততালি!
উন্নাসিকে নাক উঁচালেই
কবিতাটি ৯১ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৫/১০/২০১৭, ১৭:২৫ মি:

কৃতিত্বকথা

বেঁচে যে আছি এটাই বিরাট কৃতিত্ব আমার!
অনেক অপারগতায় বাঁচার অসহায়ত্ব কেমন জানো?
নিজেকে ভুলিয়ে রেখে কল্পনার ঘোরে নিঃশব্দে পুড়ে যাওয়ার
যন্ত্রণা কতটা বোঝ? কতটা অশ্রুপ্লাবনের কল্লোল শোনো-
জ্যোছনাহীনা নিস্তব্ধ রাত্রির বুকে দ্বান্দ্বিক বন্ধু?

বুকের বামদিক-
আমি আমাকে খুঁড়ে খুঁড়ে বের করেছি বেদনা গুপ্তধন,
লোকোত্তীর্ণ অভিমান, কুড়েকুড়ে খায় পাঁজরা পিঞ্জর-
ঘুনেপোকার দঙ্গল, তবুও কি এক আকুলিত আসক্ততায় আছি বেঁচে
বন্ধুবর, হৃৎপিন্ডে খঞ্জর- আর হাসির রম্যাভিনয়- বলছি এও তো অমৃতময়!

একি কম কৃতিত্ব আমার?
কবিতাটি ৮৪ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১০/১০/২০১৭, ১৮:৫৯ মি:

কোজাগরী প্রেম

প্রবারণার প্রদীপ জ্বালি, আজকে কোজাগরী,
লক্ষ্মী হয়ে এলে গো তাই ফানুস হয়ে উড়ি!

আজ আকাশের আলোর মেলায় প্রাণের পরশ ঢেলে
আঁধার ঘরে আলতা পায়ে পূবের বায়ে এলে।

শিঞ্জন শুনি নিদ্রালুতায়, (তোমার) শোণিতবরণ শাড়ী-
দেখি চৌকাঠ ফেলে ধীরলয়ে আসে, প্রেমে প্রলয়ঙ্করী।

রুদ্ধ বুকের কঠিন কবাট, তুমি দরজায় দিলে হানা,
মনের বেদীতে স্বাগত হে দেবী, এটুক মন্ত্র জানা-

আমি জানি তুমি তুষ্ট তাতেই, তাই দিয়ে বাঁধো ঘর।
তোমায় পেয়েছি, এটুকু স্বার্থে (আমি) প্রবল স্বার্থপর!

ওষ্ঠ অধরে চিবুকে চিকুরে দিবারাত আমি পুড়ি,
আমি তো হয়েছি মানুষের মত, তুমি কেন ঈশ্বরী?

কবিতাটি ২২৩ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৫/১০/২০১৭, ১৮:৩১ মি:

নে এবার ছুরিটা চালা

কিছু মানুষ জন্মেছে মরে মহাণ হবার জন্য!
ধ্যাষ্টামো করেই না হয় বলি- ওহে জিঘাংসকের দল,
আমিও তাদেরই একজন, নে এবার ছুরিটা চালা!

কিছু গরলের জ্বালা- লুকাতে যেয়েও পারি না আর।
দৈন্যতায় মজ্জাস্থি ভরে দূরায়নী দুশ্চিন্তার-
লাভাস্রোত আমি যে উদাত্ত উচ্ছলতায় গাই
স্বর্গসুখের সুর, অতলান্ত রাগমালা-
বুঝিস বা না বুঝিস, নে এবার ছুরিটা চালা!

তোমার ঈশ্বর নিষ্ঠা

প্রিয়তমা,

তোমার ঈশ্বর নিষ্ঠায় আমার অবিশ্বাস নেই,
আমার সমস্ত অবিশ্বাস তোমার ঈশ্বরেরই প্রতি!

তোমাকে বিশ্বাস করি ঈশ্বরের চাইতে বেশী,
তাই অতন্দ্র নিঃস্বতায় ভয় করি খুব!

তুমি তো মানুষ বটে, আমারই মতন,
ঈশ্বরের মত নও অচল, নিশ্চুপ!
কবিতাটি ১১৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের সময়:০১/১০/২০১৭, ১৭:১৪ মি:

অসময়ে প্রেম

অরুণিমা,

আমরা বড় অসময়ে প্রেমের কাঙাল হয়েছি,
আমি পনের’শ সালের কোন এক সামন্ত কৃষাণ হলে,
তুমি আজ কৃষাণী হয়েই পেতে যথোচিত সম্মান!

নব্বান্নের ধান,
রৌদ্র-ত্রাস- পরাহতকারী স্বেদজল,
খরার ভ্রুকুটি ম্লান-
করে সোনালী আশায় বাড়ির উঠান, 
সাধের গোলা, ঢেঁকিশাল ভরে গেলেই,
অরুণিমা, সেদিন বাস্তবতা তুষ্ট হত!

মাটির ঘর, খরের চালা, একটা সবলা গাই,
দু’তিনটে বসার পিড়ি, দু’তিনটে কাঁসার থালা-
থাকলেই আমাদের নবাবী আমল যেত
ধনেজনে তৃপ্ত হয়েই।

দুটো নউল আমের চারার মত
কোমল অস্তিত্ব পেতে সানন্দে কোলে!

অরুণিমা,

এ পৃথিবী আর চাষীর জন্য নয়!
অথচ আমি আজও চাষীরই দলে।

__________________

আমার কবিতার সম্ভাষিতাদের মধ্যে অরুণিমা একজন। বেশ আগে অরুণিমা নিয়ে কয়েকটা কবিতা লিখেছিলাম। আজ আবার আরেকটা লেখা এল। লিখেই ফেললাম।
কবিতাটি ১৪৫ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৩/০৯/২০১৭, ১৭:১১ মি:

প্রায় অমিত্রাক্ষর (পরীক্ষামূলক)

অমিত্রাক্ষরের মত।
_________________

অবোধ চঞ্চল রে চিত মোর,
বিকট ভাদর তাপ বিটপিবিহীন বিজন দ্বিপ্রহর সম
আশার প্রান্তর, হুতাশন ঘোর-
ক্ষমা নাহি করে।
অনীশ অনিকেত জনের আকুতি নিষ্ফল,
অরতি অন্তরে চক্রাবর্ত বেগে
ত্রিদিবের অবরুদ্ধ দ্বারে দ্বারে ফেরে,
কণ্টকসংকুল লোকে,
পদে পদে বিপদশৃঙ্ক্ষল!

জননী জন্মভূমি অকলঙ্ক প্রাণের ক্রোড়
কুহক-কুজ্ঝটিকার মাঝে মিলায়ে গেল হায়!
অশন অন্বেষণ, তিয়াস মোচন আশে
রৌরবের পথে তুই ছুটিলি ত্রিবিক্রম,
ওরে প্রমত্ত প্রবল,
অমিত আনন্দে ওরে, বহুল বাঞ্ছায়-
প্রস্তরখণ্ডে দিয়া বৈদূর্য্য প্রমাণ মূল্য
সর্বস্ব বিকায়ে এলি ক্ষণকাল শেষে
অতঃপর বুঝিলি রে অন্তিমের ভ্রম,
ভিক্ষুকের বেশে-
অনন্তের অধিকারী অনশনে মরে!

___________

অমিত্রাক্ষর আগে কয়েকবার লিখেছি। এবার একটু নিজের মত খেললাম। সাহিত্যের লোকেরা ভাল বলতে পারবেন কেমন লাগছে।
কবিতাটি ১১২ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৯/০৯/২০১৭, ১৮:০৮ মি:

কান্নার গুরুত্ব

অপদার্থ নির্বোধদের উচিত অপদার্থ নির্বোধদের ভালবাসা।
নয়ত ভেজা বারুদের গুরুত্ব নেই কোন আগুনের কাছে!

মানুষ তো পোষা পাখির জন্যও কাঁদতে জানে,
মানুষের জন্য হু হু করে বুক ভাসা- এ আর দুর্লভ কি জিনিস!

অতএব হে নির্বোধ, সব কান্না গুরুত্ববহ নয়!

যে কান্না আমাকে করেনি বজ্রের মত মন্দ্র কঠিন
আমি তাকে নিয়ে লিখেছি অবিরল নিশুতি ব্যথার গাঁথা!

মানুষের একটা শ্রেণী- চিরকাল এমনই আত্মঘাতী হয়!

অতএব হে নির্বোধ, সব কান্না গুরুত্ববহ নয়!
কবিতাটি ১১৯ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৩/০৯/২০১৭, ১৮:৪৪ মি:

মাগো, দরজা কি খোলা?

কেমন এক বুক ভাঙা লালচে মাটির ঘ্রাণ আজও টের পাই
পথের দু'ধারে ধুলোলেপা অশ্বত্থের পাতায় খেলে সাগরের দোলা।
চন্দ্রনাথের নীল স্বচ্ছ চূড়ায় জাগে বিবাগী দেউল, শুনি ষষ্ঠী শানাই-
বাজে হামাগুড়ি জীবনের মাটির মন্ডপে; মাগো দরজা কি খোলা?
যদি ফিরি তোর বুকে, আছে কি আগের মত অবারিত ঠাঁই?
প্রখর ভাদ্র দিনে চোখ ফাঁড়া তাপে?

কখনো তোর এঁটেল সুফলা তট ঘেঁষে ইছামতির রোদেল সাম্পান যেত,
দশহরার কাঁসর আহ্নিক বেলায় যুগযুগান্তের নিনাদ তুলে স্বাক্ষ্য দিত রোজ।
বেড়ার ঘর, টিনের চালা, আমিত্তির উষ্ণ আভা, কাঠের বেঞ্চ, হরেক মিঠাই-
চাষের গল্প, ঘাটের সওদাপাট, এখনও কি এমনি করে নিত্যকার খোঁজ-
কেউ তোর রাখে? কেউ কি আজও তোর ঘাসের আঁচলে বসে, তেতুলের ছায়ে
উন্মনা স্রোত গোনে, মনে মনে অপ্রতিমা আঁকে, যে বিমূর্তা তরঙ্গিনী ধীর পায়ে
চলে গেল কৈশোরের পর- আজও কি তাকে কেউ ফিরে ফিরে ডাকে?

এখনো আমি এক গোধূলির উদয় দেখি নিঃশব্দে বুকের দেরাজে,
কখনো দেখি চৈত্র সংক্রান্তি ভোর, উঠানে সূর্য্যদেব, আটকড়াইয়ের বাটি,
কাস্তে, অসুর, সংকল্প, ধানের মাড়া, আমের আঁটি; বয়ঃসন্ধির লাজে
এখনো দেখি ব্রণক্লিষ্ট মুখ আনত কুন্ঠায় সহপাঠিনীর চোখে তীরবিদ্ধ হয়!

আজও তোর কাঁকন ধ্বনি তন্দ্রার দেশে, বলে মাগো, তুই পাশে শুয়ে।
ঘুম ভাঙে প্রতিদিন যন্ত্রের মত, শেখানো নিয়মে আজও চোখ-মুখ ধুয়ে
আমি আরেকদিন যুদ্ধে উঠি রথে। জননী, যন্ত্র হওয়া যে কত যন্ত্রণাময়-
আমি ক্ষয়ে ক্ষয়ে বুঝি। আমি বুঝি মানুষ হবার ব্যথা মানুষেরা সয়;
চড়ুই, শালিক, বকের বেদনা আমি বুঝিনি তো কোনদিন, পড়িনিও বইয়ে!

মাগো, দরজা কি খোলা? 
জানি না আমার পথ গেছে কোন পথে।
কবিতাটি ১২১ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০২/০৯/২০১৭, ১৮:২৯ মি:

বিক্ষিপ্ত কবিতা

অনেক ভেবেচিন্তেও আমি কোন মানবাধিকারের ঠিকাদার হতে পারিনি।
কুদ্দুসেরা ভেবেছে হরিপদরা মানুষ নয়, মগেরা ভাবে অ-মগেরা অমানুষ,
অথচ অনেক পদহীন, শ্বাপদ, চতুষ্পদেরাও আমাদের ভাবেনি স্বগোত্রের;
এমতাবস্থায় বল, আমি কোন কোন সত্যের কাছে স্ববিরোধী হব?

দলে দলে বিভাজ্য ক্লেশাবহ দুনিয়ার মাণচিত্রের কাছে স্থাণুবৎ, বাকহীন
হেঁজিপেঁজি বিশ্বমানব, আর কত ন্যাকাপনায় অক্ষম দ্রোহ কবিত্বের ভানে
ভাঁড়ামোর পায়ে হবে বদ্ধকৃতাঞ্জলি, আর কতবার কাপুরুষত্বের সংজ্ঞা হব?

[অনেক সাহস জমিয়েও কেন যেন আমি পিছিয়ে আসি, কি ভাটার টানে
পাড় ডিঙানি ঢেউ, আমি ফিরে ফিরে মরি, কি অমরত্ব দু'দিন বাঁচার দানে
তা এখনো আমারই অজানা! আর কতদিন আমি এমন অজ্ঞাত র'ব?

আমি জানি?]
কবিতাটি ১২৭ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৯/০৮/২০১৭, ১৮:০০ মি:

হাপর টানা কাব্য

আমি দু'মুঠো সফেদ ভাতের কাছে
বিকিয়ে দিয়েছি এক রাত্রির রাগেশ্রী সুর,
এ প্রজন্ম 'দুখু মিয়াঁ' হবার জন্য নয়,
এ জন্ম, এ প্রজন্ম যন্ত্রোপযোগী শিশুর
কারখানা গড়ার জন্য ক্ষুধার ভাগাড়ে!

শান দিয়ে দিয়ে কবিতা লিখেছি! 
এসব কবিতা নদী-অরণ্য-প্রান্তর-পাহাড়ে
লুটোপুটি খায় না, ঠোঁটে-মুখে-বুকে আঁকে না
অধর-চঞ্চু চুম্বন!

এসব কবিতা ব্যথা ও দ্বন্দ্বের,
আগুন ও জঠরের, কাঁটা ও কুঠারের,
এসব কবিতা দন্তে পিষ্ট ক্রন্দন-

আমি হৃদয়ে হাপর টেনে লিখেছি!

অধরে-টধরে চুম্বন-
আমার পিঞ্জর ফেঁড়েফুঁড়ে গেছে!

আমি কিছু মৃত স্বপ্নের কাছে দিয়েছি ভবিষ্যতের ভার।
আমার তানপুরা, আমার দীর্ঘশ্বাস, অগচ্ছিত, অকথিত  
কথার সম্ভার, আমি ও আমার সমস্তই, জেনো-

ক্ষুধার পায়ে সোনার শেকল,
অযন্ত বন্ধনে আছে!
কবিতাটি ১৭৪ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৪/০৮/২০১৭, ১৮:১৩ মি:

স্মৃতিমেদুর

নিখিলনিরয়জ্বালা নিশীথনিবিড়
নিদয় বিধির বিধি বধির অধীর!
              প্রিয়ে,
প্রবোধ প্রগলভতা প্রখর প্রকট
কমলপরশ সুখ, কঠিন কপট!

তুমি আমি এ ভুবনে ত্রিভুবন ছাড়া,
ধানমন্ডি লেকের পাড়ে প্রারম্ভের কড়া

আজও দরজায় নড়ে!
         প্রিয়ে,
মাঝেমাঝে আমারও যে
    খুব মনে পরে!
    বড় মনে পরে!

__________________
১৬ই আগস্ট। রাত ১:২৩। খড়গপুর জংশন।

দৃশ্য বিধান

যারা মানুষকে বাসে না ভাল, তারাও ভাল মানুষ!
তারাও জনগণনায়ক, লোকপাল, রাজরাজেশ্বর!
'জননী জন্মভূমিশ্চ' জাদুমন্ত্র ধুয়ে.........

যীশুর মতন হও ক্রুশে যাও! পিলাতেরা ফিরুক অভয়ে
সমস্ত গঞ্জ নগরে, অঢেল তস্ত্র সাধেরা যাক দস্যু দখলে।
তারা হোক নগরপিতা, গাঁয়ের মোড়ল, ঋদ্ধ মাতব্বর
যারা মানুষকে বাসেনি ভাল কখনো কোনদিন,
দিনদিন দলেদলে..........

তারাও মন্ত্রী সান্ত্রী হয়, তারা ধরে শোণিত খঞ্জর,
আমাদের শুষ্ক কন্ঠতলে। সমাজ শিরে সংক্রান্তি সঙিন.......
তবুও তাদেরই জুতোর তলায় আমরা সুখ খুঁজে যাব!

এই তো অদৃশ্য দেবতার দৃশ্য বিধান।
কবিতাটি ১৩৩ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৩/০৮/২০১৭, ১৭:৫৯ মি:

একই ভুল বারবার?

সময়টা দু'হাজার দু'শত সতের সাল,
যদি তখনো বঙ্গোপসাগর গিলে না খায় আমাদের মাটি
তবে এই জাতিত্বের পিতা ইখতিয়ারউদ্দিন বখতিয়ার হলে
রবীন্দ্রনাথ, আপনি কি অবাক হবেন?

নালন্দার রক্তে গড়াগড়ি শতেক, সহস্র ভিক্ষুর মড়া
কত পীঠস্থানের পিঠ, কোমর ভেঙে গেল নৃশংস হাওয়ায়,
কত সুমন্দা নদীর তট হয়ে গেল বিষাক্ত নাগের ঘাঁটি,
দংশিতের বেদনা যদি ফনা তোলে প্রেতাত্মা হয়ে কোনকালে
নদীয়ার নিমাই মিশ্র কি কীর্তনে মত্ত হবেন?

যদি তখনো বঙ্গোপসাগর গিলে না খায় আমাদের মাটি,
তখনো কি টিকে থাকবে পদাবলী ও লালন সমানতালে?
আজান ও শঙ্খনিনাদ নিঃশঙ্কায় ভাসতে পারে সান্ধ্য বাতাসে-
তখনো? তখনো কি বাঙলার সূর্য্য অতুল্য সকালে
আলোর পাখা মেলতে পারে ঘুমের আকাশে?

যদি সেসব কিছুই না হয়, তবে কালুদার প্রীতিলতা, কল্পনা,
টেগরা, পুলিন, অনন্ত, বিনোদ তোমরা কি যুদ্ধে যাবে
আবারও কিছু অকৃতজ্ঞকে খুলে দিতে জীবন দুয়ার?

যেয়ো না গো,
একই ভুল বারবার কে আবার করে!
কবিতাটি ১৪৫ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৫/০৭/২০১৭, ১৮:৪৫ মি:

শখ ও শিক্ষা

আমি কবিতার নামে কত উড়োকথা পড়ে যাই,
কত তালভাঙা কোলাহল, লোকে নাম দেয় ছন্দ!
কথার বুনটে ভুলে যাই শখ ও শিক্ষার ফারাক-
কতটা বিস্তর; শখের দখলে শিক্ষার নেই গন্ধ!

ঢাকীটাও শেখে ঢাকের কাঠিরও চলন বলন ভিন্ন,
বাউলটা বোঝে একতারাটার আঙুলের সাথে ভাব কি,
শুধু কবিতা লিখতে নেইকো শেখার কিছু, মিনিমাম যতিচিহ্ন?

ওসব সেকেলে ফরম্যাট,
এখন বাংলা মধুসূদনের যুগ ছাড়িয়ে,
হোপ ইউ গট দ্যাট....

গুডনাইট!

______________

২১/০৭/১৭

দহনমূল্য

কোন করুণৌড়ব রাগিণীর মত বেজেছ আমার মনে
                       মন্দ্র গোধূলি ক্ষণে।
  সেদিন বাতাসে বিজুলি গন্ধ, তোমার আঁচলে অচল বন্ধন
               কাঁপে অতুল আবেগে বিরহাহত
                         বিমূর্ত ক্রন্দনে।
       অনাহুত মেঘ আকাশের বুকে অনিবার ঝরে গেল
                      আমি প্রবাসের পথে
        ভরা শূণ্যতা সঙ্গে আমার ভেতরে বাহিরে ভারী
                      তুলেছি পাথেয় রথে,
                     চোখ মুছে কোন মতে!

          গোটা কোলকাতা খা খা করে মরে দিনরাত
                একা একা আমি বিতস্ত্র অসহায়,
                         আগুনের হল্কায়
           ঝলসে তুলেছি মেদমাংসের মহাণ চেতনা,
                  মানুষের মত বেঁচে যেন আছি,
                       অমানুষ হব শংকায়!

  কেন পরশ পাবার এত ব্যাকুলতা, এত দীনতা বুকের কোনে
                        জমিয়েছি দিনেদিনে 
     কি যে হয়ে গেল, কেন হয়ে গেল, জানিনে কিছুর উত্তর;
                   কেন যে এতটা প্রেমের মূল্যে
                     এতটা দহন নিয়েছি কিনে!

বিশাখদত্ত
২৬/৭/১৭- রাত ৮:৪৫।

সোহিনী

তুমি সকালের একেলা বিভাস, বৈরাগী সুরে আনমন,
সূর্য্য উঠেছে বিলাসখানিতে, সিতারখানিতে দাঁড়িয়ে খণ
তাকিয়ে ছিলাম কালেংড়া চুলে, ঈষৎ কোঁকড়া কলাবতী,
দিন গড়িয়েছে মধ্য লয়েতে, সাঁঝের বিহাগে বিষ অতি-
ক্ষরে মধুবন্তীর অঞ্চল জুড়ে কানাড়া কিনারে দরবারী,
ভরা দরবারে বেখেয়াল আমি, তুমি যে অতীব দরকারি!

ছুটতানে আমি ছুটে গেছি একা, মেঘ ডেকে গেছে মল্লারে,
জয়জয়ন্তী আসেনি এখনো, দেশ গেছে আসি আসি করে।
শূণ্য বিদেশে বাঁধি মালকোঁষ, মাঝরাতে কার টলমল লোনা তটিনী
পঞ্চমে তার বেঁধে বসে আছি নিশ্চুপ, তুমি আসবে কি আর সোহিনী?
কবিতাটি ১৩৩ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১৯/০৭/২০১৭, ১৮:০৭ মি:

বিমূর্ত আভাস

অপরের অনিষ্ট না করেও তো নিজের ব্যাপক অনিষ্ট করা যায়।
সেটাই না হয় করি।

মেঘমন্দ্রিতা, আমার মতন, জানি তুমিও ভাল নেই,
আষাঢ়ে শ্রাবণে লুকোচুরি

বেদনাস্নাত হয়ে আমাদের দিন কাটে প্রায়!

তবুও নিরুদ্বিগ্ন অভিনয়ে ঠোঁটে রাখি কি সুধানিষ্যন্দ হাসি,
ভেতরে থাক পুরাতন শ্লথ শ্লাঘায়

প্রারব্ধের অহংকার। জীবনকে ভালবাসি-

তাই এই মিথ্যেকেও না হয় আমরা আমরণ পূজা করে যাব!

অপরকে অসম্ভব ভালবেসেও তো করা যায় প্রিয়তমা
আত্মস্থ আমিত্বকে প্রবলতর ঘৃণা!

আমাকে দেখ, দেখ অরুণিমা,
আমি তার বিমূর্ত আভাস!
কবিতাটি ১৫৭ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১৬/০৭/২০১৭, ২১:১৬ মি:

জীবনলব্ধ

প্রতিটি মৃত্যুর জন্য আমি ব্যথাহত নই
বরং কিছু বেঁচে থাকায় আমি ভীষণ বীতশ্রদ্ধ!

এখনো যে শিশুর মুখে পাই মায়ের দুধের ঘ্রাণ
আমি চাই আগামীকালও সে থাকুক মাতৃক্রোড়ে!
মাটিতে নামলেই সব শিশু হয় না মানুষ-

মহাপ্রাণ,

এ যন্ত্রণা আমারও যে জীবনলব্ধ!

দ্বিপদী জন্তুর গর্ভে এসেছে যে দ্বিপদী হবার ভ্রুণ 
হতে পারে সে হোমো সেপিয়েন্স, কিছু পার্থিব গুণ
সে মগজে-মজ্জায় ধরে, অস্তিত্বের সংজ্ঞায় সে
মানুষেরই মত, হয়ত ভবিষ্যতে কোন মানুষের খুন-

তারই হাতে হবে!

মহাপ্রাণ,

এ যন্ত্রণা আমারও যে জীবনলব্ধ!
কবিতাটি ১৩৪ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৩/০৭/২০১৭, ১৮:১৮ মি:

দখিনের মেঘ

দখিনের মেঘ আরও দখিনে কি যেতে পারো?
নীলাম্বুধির পাড়, যদি শোন তার মৃদু মল্লার,
বলে দিও তাকে এখনও অনেক অশ্রুবিন্দু বাকী
এখনো যে বাকী হৃদয় ভিজতে কারো।

আমি এই পাড়

থির হয়ে থাকি, পাথরের মত অবিকল অবিচল
বলে দিও তাকে ঝড়ের মাতমে আমাকে ওড়াতে পারো
সেই সাধ্যতা তোমার ঝুলিতে খোয়া সম্বল,
আমার ভার যে বেদনায় পোয়াবারো!

তুমি আরও দখিনে কি যেতে পারো?
কবিতাটি ১৩৫ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০২/০৭/২০১৭, ১৮:০৭ মি:

প্রথম অধ্যায়

আমি একদিন বিশ্বাস করতে শিখেছি
অন্তরে, জঠরে দৈন্যতার পাহাড় গড়েও
আমি একদিন অবশ্যই বড় কোন রাজা হব,
আমি আজও তাই বিশ্বাস করি।
এই মূহুর্মূহু ধসে পড়ার অক্লান্ত সময়েও দেখ,
দেখ এসপারওসপার চিড়ে যাওয়া বহু হতাশার অন্ধকারেও,
আমি বারবার ভিক্ষুকের যষ্টিকে তুলেছি তলোয়ারের মত,
আমি বিশ্বাস করেছি, প্রতিটি ভিখারীরও থাকে রাজত্বের অভিলাষ,
প্রতিটি কপদর্কহীনেরও থাকে সম্রাট হবার বোধ,
তবুও কেউ কেউ রাজা হয় শুধু!

প্রতিনিয়ত মরে যেতে যেতেও আমি বিশ্বাস করেছি-
এটাই বেঁচে থাকা! প্রতিনিয়ত খঞ্জরের খোঁচায় কঁকিয়ে উঠে বলেছি
এটাই বাঁচার সুর, আমি অতিবিশ্বাস করেছি মানুষ এভাবেই বাঁচে,
মৃত্যুর প্রকোপ জানি, জানি অমোঘ মৃত্যুর-
কাছে এসব তো বাক্যবিপর্যয়!
তবু দেখো আমি আছি, তুমিও আছো, এতে কি সংশয়!
এই থাকাটুকুই ভরসা করেছি, আমি বিশ্বাস করেছি এভাবে,
সত্যিই এভাবে একদিন একদিন থেকে গেলেই 
আমরা এসে যাব ঐশ্বর্য্যের কাছে,
আমরা এসে যাব নীলাভ্র শূণ্যতায়,
আমরা জেনে যাব আমাদের যেটুকু সময়
গেছে হৃদয় রক্তাপ্লুত করে, তা ছিল অবিনাশী আনন্দের
শুরুর পাতা, প্রথম অধ্যায়!
কবিতাটি ১৩৫ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৮/০৬/২০১৭, ১৭:৪৬ মি:

ব্যবধান কি অভিশাপ

সাধ হয় ডুবে থেকো প্রেম-অপ্রেম কেচ্ছায়,
আমি তো নির্বাপিত এ আঁধারে স্বেচ্ছায়!
খুঁজো না নিখোঁজ কারো তিরোহিত অন্তর,
বিরহ অনন্ত নয়, মন নয় যন্তর!
ভুলে যাওয়া প্রাকৃত, না ভোলাই মহাপাপ,
নৈকট্য মধুর বটে, ব্যবধান কি অভিশাপ?

আমার লাগত এত একা


এক পৃথিবীর চন্দ্রমাতে তোমার আমার দেখা,
সেদিন আমি বুঝতে পেলাম তোমার হাতটা ধরে
এত লোকের ভীড়েও কেন, আমার লাগত এত একা!

অবদমন

কৃষ্ণচূড়ার ছায়ার নীচে নীল আঁচলের গন্ধ,
কোঁকড়া চুলের ক্লিপের কাছে আটকে ছিলাম ক্ষণেক 
অক্টোবরের উতল হাওয়া অনেক,
আশেপাশের অল্প চোখের উটকো ভাল মন্দ,
তাই অধর গেল থেমে,
একটু কাছেই নেমে।

প্রায়শ্চিত্ত নেই

যে গরল আমার দেয়া তার জ্বালা আমি জানি,
তাই বলছি না 'সুখে থেকো', শুধু বলছি 'বিদায়'
তুমি যতটুকু অনড় অন্ধকারে চিনেছ আমাকে
আমি কি অনেক আলোতে তার সিকিভাগ চিনি?

অতএব যেখানেই আছো,
যন্ত্রণার মুক্তদ্বারে আমাকে রেখো বন্দী অপেক্ষায়,
আমি জানি এর চেয়ে ভাল আমার জন্য কোন প্রায়শ্চিত্ত নেই!
কবিতাটি ১১৫ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১০/০৬/২০১৭, ১৮:৩৫ মি:

ভাঙন

এ ভাঙন জোড়া না লাগার,
আলবাৎ জোড়া না লাগার!

অপরিমিত চেষ্টায় আশা করা উদ্বায়ী বন্ধন
উন্মুক্ত বুকের মাঝে মায়া বুনে থাক!
প্রেমান্ধের বাসনার যৌক্তিকতা লাগে?
আঁধারকে আলো ভেবে তারা ভেসে যাক!

কত রাত আর না জাগার
সামনে পরে আছে। কত জ্যোৎস্না আর না দেখার
আসবে আর নির্বিবাদে চলেও তো যাবে! 
কত আরও গুচ্ছ গুচ্ছ কবিতার ঝাঁক
আতুর ঘরেই যাবে মরে।

মানুষ কি পায়?

মানুষের মৃত্যুতে আর ব্যথিত হই না।
মাঝেমাঝে ভাবি কেউ কেউ বেঁচে আছে কেন!

মানুষের মৃত্যুতে আমার আর লাগে না শোকস্তব্ধ ভার।
আমি ভাবি জীবন যাদের নেই তারা জন্মেছিল যেন 
মেদ-মাংস-হাড় এক্সিবিশনের পিস হয়ে
আমৃত্যু অনিচ্ছার সং সেজে যেতে।

যারা বাঁচে না কোনদিন, তারা জন্মায় কেন?

ডানাভাঙা কাকেরও থাকে অন্তিম সহচর,
মাথার ওপরে কোলাহল, চোখের তারায় বিস্তর-
ওড়ার তৃষ্ণা দপদপিয়ে নিভতে থাকে যখন,
আকাশের আস্তর ফেড়ে তবু কিছু তারস্বর
তাকে বলে, 'তুমি এখানেই থাকো।'

আর মানুষ কি পায়?
কবিতাটি ১৬০ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৬/০৬/২০১৭, ১৭:৫২ মি:

ঘুমের মন্ত্র

মানুষ মরে নিখাদ যন্ত্রণায়,
আমি গোলাপ ফোটার কাব্য লিখি।
যেখানে কাঁটার খোঁচাই বাস্তবতা,
সেখানে পাপড়ি মেলার উপন্যাস
আজও অর্বুদ অর্বাচীনের সুখপাঠ্য।

মানুষের রক্তপাতে ধৌত সময়,
এ সময় নিবিড়তায় প্রেমিক হবার,
বনলতার চুলের অন্ধকার, মত্ত হয়ে
ত্রিসংসার ভরিয়ে ফেলি জীবনানন্দের 
ভড়ং ধরে, দুর্লঙ্ঘ্য কাব্যোন্মদা কার-
বারংবার মৃত্যুর খবরাখবর রাখে?

মানুষ মরে নিপাট লাঞ্ছনায়,
আমি হর্ষোল্লসিত, শুক্রস্খলের ডাকে 
অতিমানবীয় প্রণয় গাথা লিখি।
যেখানে ভিটেমাটি উচ্ছেদই পরাবাস্তব
সেখানে তুলসী মঞ্চ গড়ার গান
আজও অজস্র নিদ্রিতের ঘুমের মন্ত্র!
কবিতাটি ১৬৮ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৫/০৬/২০১৭, ১৮:১১ মি:

আশাবরী আশা

মৌসুমী খরা বুকের প্রান্তে,
আমি তো জানিই, তুমিও জানতে
খা খা প্রান্তরে বরষা আনতে
কত মল্লার গেছি সেধে,
মেঘের হাওয়ায় উদাস জনম
ভরিয়েছি গান বেঁধে!

অধরা স্বপ্নে বিভোর আবেগে
নৌকো গড়েছি রাত জেগে জেগে
যদি মরানদী কখনো আবার
ঢল নেমে যায় ভরে,
তুমি তো দেখেছ মেঘনন্দিনী
অমরাবতীর ধারে- আমার নিত্য বিনাশ,
আমি বুঝেও বুঝিনি যারে!

এখন একেলা নট-ভৈরব
আমি তটে তটে ফিরি একা,
তুমি আশাবরী কণক বিভায়
এখনো দিলে না দেখা!
কবিতাটি ১২৯ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৪/০৬/২০১৭, ১৮:৩৪ মি:

বনজ অন্তর

এভাবেই আরো শ্যামা জনপদ ছেড়ে যাবে কিছু চিহ্ন,
তুমিও মানুষ, মানুষেরই মত; চোখের তারায় ভিন্ন!

কারো কারো চোখে জিঘাংসা জ্বলে, 
কারো চোখে বয় ভীরুতার ভরা নদী!
কোনদিন তুমি চোখে চোখ রেখে
বুঝতে পারতে যদি-

এই তফাতেই তোমারও বিনাশ, তুমিও বিপদাপন্ন!
তুমিও মানুষ, মানুষেরই মত; অন্তরে আজও বন্য!

-*-

রাঙামাটির লঙগদুতে আজ আদিবাসী বিতাড়নের উৎসব!
কবিতাটি ১৪৭ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০২/০৬/২০১৭, ১৮:০১ মি:

এমন কি হবার কথা ছিল?

কিছু রাত নৈঃশব্দের,
অথচ অতন্দ্র, তদুপরি কবিতাবিহীন;
এমন কি হবার কথা ছিল?

মাথা ঘিরে শত-সহস্র দাঁতাল শুয়োর
প্রদক্ষিণ করে উল্লাসে কল্পনার বেদী,
অথচ সেখানে থাকার কথা ছিল
রবি ঠাকুরের ছত্র, অরুণোদয় অবধি-
প্রহর প্রহর গ্রাসী খেয়ালের সুর,
কিছু তার নেই, দূর বহু দূর,
তারা ভিনগ্রহে শুকিয়ে মরেছে।

অথচ এমন কি হবার কথা ছিল?
কবিতাটি ১৫২ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৪/০৫/২০১৭, ২১:৩১ মি:

অকৃতজ্ঞ প্রেমের সার্থকতা

কিছু ইচ্ছে আমৃত্যু অনিচ্ছা হয়ে থাক,
তীব্র কিছু অনুভূতি ফোটাক প্রচ্ছন্ন ভাবালুতা,
কিছু দুর্নিবার প্রণয়াবেগকে লুকাই কবিতা বকে,
কিছু অঙ্কুরের বেড়ে ওঠা এমনি থমকে যাক,
তবে তোমার প্রতি এই অকৃতজ্ঞ প্রেম
সার্থকতা পাবে।

ঈশ্বর পুরুষকে করেছে ভিখারীর মত,
তার চোখ ব্যভিচারী, তার অন্তরে জাগরুক শাশ্বত ক্ষুধা, 
আমি আর কতটুকু ব্যতিক্রম হব? 
কারো কারো হৃদয়প্লাবী বিরহের স্রোতে,
অর্ধ-জগৎ দূরত্বে ফেলে আসা কারো অমথিত যৌবনে
আমার লিপ্সা জাগে, এ বৃত্তি কি পৌরুষ? শুধুই পাশব?

আমি আর কতটুকু ব্যতিক্রম হব?

কিছু অলিখিত প্রগলভতা ভেতরে মরুক,
কিছু অসূর্যস্পশ্যা প্রেমিকা চলে যাক অমাবস্যায়,
কিছু চুম্বনের অমর তৃষা আঁধারে বাড়ুক,
কিছু অপ্রতিম নির্লজ্জতা বাঁচুক আশায়!

আমি পাখন্ডী হই!

প্রকৃতি আমাকে কি ক্ষোভে করেছে পুরুষ,
কি আগুনের হল্কা বুনে দিয়েছে অস্তিত্বের বোধ,
তোমার নারীত্বে সে উপলব্ধি নেই!
আমিও চাই না তুমি বুঝে ওঠো কিছু,
তবে তোমার প্রতি এই অকৃতজ্ঞ প্রেম
সার্থকতা পাবে।
কবিতাটি ২০৮ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২৩/০৫/২০১৭, ১৮:০৪ মি:

অস্তিত্ব অস্তগামী

মেঘবতী,
পাখিকে বেঁধে রাখো সোনার খাঁচায়,
জেনো তার ঝড়ে ভাঙা নীড়টুকু তার চেয়ে দামী!

মানুষও তেমন।

সৌন্দর্য্যেরও যদি থাকে অযুত শৃঙ্খল
তবে কখনো মনে হয় কুৎসিতই ভাল বাঁচার জন্য!

তবু কিছু মানুষ- নিতান্ত অপরিণামী।

মেঘবতী, দেখো এ চোখের জল-

হয়ত কখনো করে ভুল। কিছু ভুল দুরতিক্রম্য-
এক জীবনের টানে, কিছু ভুল ভুলে থাকা দায়,
কিছু ভুল গোটাজন্ম সঞ্চিত ফল,
কিছু ভুল হাসার ছলে অনেক কাঁদায়।

যে অস্তিত্ব অস্তগামী

উদয়ের দিনে সে জানেনি চলে যেতে হবে,
সে জেনেছে স্বার্থকতা ক্ষণিক থাকায়,
না থাকার কি কষ্ট থাকতে আর কবে
কে বুঝেছে বল?
কবিতাটি ১৮৩ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:২১/০৫/২০১৭, ১৭:১৮ মি:

নীলা রায়

জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রথম হপ্তা, ভদ্দুপুরের রোদে
আমি চিটচিটে শার্ট, ঘেমো গায়,
দাঁড়িয়ে ছিলাম গড়িয়ার মোড় দু'গ্লাস লসসি গিলে,
তুমি হেসেছিলে দেখে নীলা রায়।

একই বাস ধরে চলতে পারিনি, অটোর পথও তো ভিন্ন,
এক রিকশায়- হয়নি তো যাওয়া কোনদিন,
তবুও হাসিতে তোমার কত মিলনের চিহ্ন
ফুটে উঠেছিল, আমার গর্মি বাড়িয়ে।

আমি তো তখনো গড়িয়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে।

'দু'শো আঠার'টা কখন ছুটেছে ঠিকানায়,
যাক যাক আরো দু'শোটা বছর এভাবেই
এ দেখায় যদি হয়ও কিছু অন্যায়
তবু পরোয়া করি না, তুমি যা ভাবছ ভাবো,
অমন হাসিটা এমনি করে কি প্রতিটা দুপুর পাবো?

নীলা রায়,
আজও তুমি তো তেমনি করেই হাসো,
কিন্তু আমার ঘুম পায়!
কবিতাটি ১৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের সময়:২০/০৫/২০১৭, ১৭:২৬ মি:

বিশ্বাসের দায়

বস্তা বস্তা বিতর্কহীন বিশ্বাসের আড়তদারি,
এ বাজারে মঙ্গা নেই, মাথা বেচো, স্বজ্ঞে যাও-
অপেক্ষায় পুরুষোত্তম, আদিদেব, পরম-ঈশ্বর,
তুষ্ট করো তারে, এই ধরো মুষল, মুগুর;
থেতলে দাও গোটাকয় অবিশ্বাসীর মুণ্ডু 
যাদের বিশ্বাস নেই তারা তো অসুর!

একে অপরকে ছিঁড়ে ফেল, জরাসন্ধের মত,
দু'টুকরো, আড়াআড়ি ছিঁড়ে ফেল,
যে বাড়াবাড়ি করে, যে যায় তোমার বিরুদ্ধ পথে
তার গর্দানে দাও বিশ্বাসের কোপ-
তবেই তো ঈশ্বরের সান্নিধ্য সহজতর হয়,
অতএব ছিঁড়ে ফেলো, কিছু অসুরের লোপ-
আবশ্যক কি নয়?

কতিপয় কদাচার, সহস্র গ্যালন মাতাল কেচ্ছা
গিলে দিগ্বিদিক উপাসনা, যে করে না, সে পাপী!
ভগবানের মার্কেটিং এ যার নেই বিন্দুমাত্র ক্ষুধা,
সে অভুক্ত মরুক, ঈশ্বরের অদৃশ্য ঘরে ঝাঁপি- 
ফেল, মাথাটা শূণ্য কর, পেটটা ভরুক!

এত মসজিদ, এত মন্দির, এত গীর্জা, গুরুদুয়ার,
এত ঈশ্বরের বসবাস, অথচ মানুষ কোথাও নেই,
মানুষ কোথাও নেই স্রেফ মানবিক হয়ে।
পশু বাঁচে অনৈর্ব্যক্তিক স্বীয় প্রকৃতির কাছে,
আর মানুষকে মরতে হয় বিশ্বাসের দায়ে।
কবিতাটি ১৩৭ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১৭/০৫/২০১৭, ১৮:১৭ মি:

আমার প্রতিপক্ষ

সেই যে গেরুয়াধারী মুণ্ডিতমস্তক,
পঞ্চবটীর পেছনে অজ্ঞাতনামা কোন দেহপসারিনীর
কাঁচুলিতে দিয়েছিল হাত, করেছিল কিছুটা প্রবেশ,
শিৎকারে নড়েছিল উরুসন্ধি, বিরজা হোমের শিখা,
ব্রহ্মচর্যপাত- যার কাছে গুপ্ত সাধন,
তাকেও তো আমি করেছি একদিন বিনা প্রশ্নে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম,
সে আজ আমার প্রতিপক্ষ কেন?

কতিপয় দুরাশয় চিত্ত ভূজঙ্গমতি মনুষ্য নামধারী দুর্বৃত্তের হাতে
তুলে দিয়ে বৈরাগ্য বিধান, আমিও ছিলাম অনেক নিশ্চিন্ত!
উত্থানে অসমর্থ সংযম, অথবা লালায়িত কামনার দমিত দংশন
যাদের করেছে মহাজ্ঞানী, আমি তো তাদেরও বলেছি 'তাপস-
তপস্যার তেজে করো আমায় উদ্ধার! পাপের যে সংবহন-
ভেতরে আমার, দয়েশ্বর, দূরীভূত কর!'
তারা আজ আমার প্রতিপক্ষ কেন?

আফসোস!

আমার প্রতিপক্ষ কেন হবে কিছু ধূর্ত শৃগাল?
কিছু গলিত মাংসভুক শকুনের পাল, কিছু গুবরে পোকার দল?
কিছু লজ্জাশূন্য, পরজীবী, ছোটলোক, পরশ্রীকাতর-
হোক তারা ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ দালাল-
আমার প্রতিপক্ষ কেন হবে?

____________________________

কিছু ভেকধারী তপস্বীর প্রতি।
কবিতাটি ১৪০ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১৮/০৫/২০১৭, ১৮:২২ মি:

ভটচায মেয়ে (রম্য)

অনেক দিনের প্রেম কামনায় সত্যে করেছি আড়াল,
তুমি গো বালিকা ব্রাহ্মণসূতা আমি যে অছুৎ চাঁড়াল!

পুরুতেরা কহে 'এই অধর্মে শতেক নরকে যাবে'।
আমি কহিলাম, 'বামুন দেবতা, যাহা হয় তাহা হবে'!

তোমারে করিয়া গোত্রান্তরী আমি চাহি না স্বরগবাস,
শুধু অন্তর আর বাহির জুড়িয়া তুমিই করিয়ো চাষ-

গূঢ় প্রণয়ের, বুনো ভালবাসা রচিয়া মধুর হাতে,
ভটচায মেয়ে বাসর বাঁধিয়ো দত্তবাটীর ছাতে!

বামুনে-কায়েতে হেন অনাচারে ক্ষিপ্ত শ্বশুরকূলে
আমি বুঝাইব ধর্মাধর্ম, জাত-পাত কারে বলে!

তুমি একবার শুধু হাত খানি ধরো, বাকী কাজ করি আমি।
শ্বশুরে কহিয়ো, 'চলিলাম পিতা, ক্ষমা করিবেনা তাহা জানি।'

বছর ঘুরিলে নাতি-নাতনীর মুখ না দেখিয়া পারে
এমন শ্বশুর আমিও দেখিব আছে কি না সংসারে!

😜
কবিতাটি ১৫২ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১৬/০৫/২০১৭, ১৮:০৩ মি:

সাজতে নেই

না না এতটা সুশীল সাজতে নেই,
অসময়ে খসলে মুখোশ দেখা যায় সুঁচালো দাঁত,
নেকড়ে হৃদয়, তখনই সমূহ পতন!

অন্তত এটুকু ভেবেও তুমি স্পষ্ট থেকো,
খুনের খঞ্জর ধরেও হও তুমিই মহাণ,
তবুও অনুরোধ- কপট হয়ো না।

রাবনকে আর কতটা ডরাই?
রামের অভিনেতাকে দেখে মূর্ছা যাই শুধু!
কবিতাটি ১৪১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের সময়:১৫/০৫/২০১৭, ১৮:৫৭ মি:

আমায় জানিয়ো

অপয়া মেঘ সে বৃষ্টি না ঝরিয়ে গেল বুকের বাঁ'পাশে
সরোদে মল্লার কাঁদে, সান্ধ্য বাতাস, ভরা বোশেখের দিন,
তোমার চুলের ঘ্রাণ এলোমেলো ভাসে
রিক্ত প্রবাস, আর আমি তুমিহীন!

কত যে অতল বিলাপ গেছে কবিতায় থেমে,
ধ্রুবলোক থেকে আমার বাড়ির ছাদে একাকিনী নেমে
কত যে সুরলহরী গেলো তোমার দিশায়।
বঁধুয়া, তাদের কি দেখেছ তুমি তোমার আকাশে
কোন একাকীত্বের রাতে আঁধারের ছায়?

আমায় জানিয়ো।
কবিতাটি ১৬৬ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১৪/০৫/২০১৭, ১৮:৪৪ মি:

কাননবালার পক্ষে

কখনো তুমি কোন রসরাজের পক্ষে ছিলে?
সেও চলে গেল পূর্বপুরুষের পদাঙ্ক ধরে।
কাননবালা পদপিষ্ট দিনের আলোয়,
আকুতি তার- 'আমাকে মেরো না আর,
ভারতে চলে যাব ভিটেমাটি ফেলে'....
তারপর?

তুমি ঘুমাও, তুমি ঘুমিয়ে থাকো,
মাথার তালুতে মাখো নিদ্রাপ্রদায়ী তেল,
ভালো থাকো প্রতি নগর নাসিরনগর হলেও,
ভাল থাকো মালোপাড়া জ্বলে ছাই হলে, 
স্বপ্ন দেখো বিস্তর, অসংখ্য, অঢেল!
বাড়িঘর-

কারো কারো পুড়ছে পুড়ুক!
তুমি আগুনে ঝলসে বিবেক- কাবাব করো,
উদর ভরুক, নিশীথে গড়িয়ে পড়ুক আরও
দুর্বলের বীর্য্যনিধি! পয়দা হোক দীনতার গর্ভে
লাথিখেকো শিশু, তারাও বাড়ুক!
অতঃপর-

সকল প্রজন্ম- এপাড়ে রিফিউজি,
বাঙালি ঘটির কাছে বিকট বাঙাল,
এরাও কি কখনো কাঁদে তোমার ব্যথায়?
এরাও তো আজকাল অভাগা কাঙাল!

ঘুমাচ্ছ, ঘুমাও।
আমি কোন কাননবালার কোলে 
রাত জেগে থাকি! কোন কাননবালার ব্যথা- 
চোখে মুখে মাখি।
কবিতাটি ১২৮ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১৩/০৫/২০১৭, ১৮:০৯ মি:

বিশ্বাস হয়?

তোমাকে বোঝাতে পারি না আমি
আমারও বেদনা জমে আছে উইয়ের ঢিবির মত,
স্পর্শবিহীনতার ছাপ ভেতরে চেপে যাই,
মদনভস্মের যন্ত্রণা, কি মরণ উত্তাপ,
কি অবরুদ্ধ দাহক্রিয়ার ফল একমুঠো ছাই
আমি সংসার নিয়তি বলে মেনে মেনে চলি
তোমাকে বোঝাতে পারি না আমি।

এই অচঞ্চল বোশেখী আকাশের মত
ভাবো নাকি আমি উদাসীন প্রখর অন্তর?
কঠোর ও কঠিন আমি, স্থবির, পাংশু,
আমি কি দ্ব্যর্থহীন জীয়ন্ত অবোধ প্রস্তর
অমোঘ শাপে অনঘা অহল্যার মত কারো অপেক্ষায়?
তোমাকে ঠিক করে বোঝাতে পারি না আমি।

আমারও ইচ্ছে করে বৃষ্টিস্নাত হতে,
গলে যেতে নদীতট মৃত্তিকার কাছে, দু'হাত ভিক্ষায়
বাড়িয়ে দিয়ে, একটুকু, চোখের কোনে তোমাকেই চাওয়া-
তাই দিয়ে না হয় জন্ম জন্ম আমি ক্লেদাক্ত হতাম,
তোমাকে এসব আমি বোঝাতে পারি না কিছুতেই!

বিশ্বাস কর, এ বুকেও বিরাট ভারী অঢেল দীর্ঘশ্বাস,
অগুনতি কাতরতা, আকুলিবিকুলি সুরের রাত
প্রলম্বিত বিরহের বদ্ধ কোঠায় জমে জমে, পরবাস
আমার বড় সুখে কাটে না গো, বড় সুখে নয়।

বিশ্বাস হয়?
কবিতাটি ১৫৩ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:১২/০৫/২০১৭, ১৮:৩৫ মি:

রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

তুমি এলে আজ

একপ্রস্ত অন্ধকার গিলে এই নৈশভোজ-
সেরে, আমি বলি চাঁদ, আমার ঢেকুরটা কৈ? 
ভরা পেটে দু'বালতি চালান দিয়ে ত্রয়োদশী ভাঙ
এ কবিতা যে লিখে ফেলে সেকি আমি নই?

বাঁশবাগানের পাড়ে কেওড়াপুকুর, শ্যাওলার ঘাট,
আমি ডুবিয়ে দিয়েছি পদ, বিপদ বিধায়-
এ ভীষণ রাত্রিবেলাও গায়ে- ছাই, রৌরব তাপ,
নগকন্যা, শীতল যে কিসে হব রয়েছি দ্বিধায়!

জ্যোছনা নদীর মত তোমার সিঁথিতে
সহস্রাব্দ বয়ে গেছে কত কবি-ফবি খেয়ে,
দু'ধারে ভাঙন দিয়ে কোঁকড়ানো চুলে
অলিখিত ছন্দ কত নিয়ে গেছে ধুয়ে-
তার বৃত্তান্ত অতশত জেনে- বল আমার কি কাজ?
আমার যে ভেসে যেতে নেই কোন ভয়
আমার যে নৌকোটাতে তুমি এলে আজ!
কবিতাটি ১৮৮ বার পঠিত হয়েছে। 
প্রকাশের সময়:০৬/০৫/২০১৭, ১৯:৫৪ মি:

গ্রাস

  বুঝি আর আমাকে দিয়ে হবে না কিছুই। অসময়ে, অনাহুত, অতি অনভিপ্রেত জানি, সমস্ত বিবাদী উষ্মার অন্তরালে হারিয়ে যাব আমার এ যাবৎ যতনে গড়া সুরের ...